ঢাকা ০৫:৪০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
কুষ্টিয়ায় শীতার্ত দুঃস্থদের মাঝে বিজিবির কম্বল বিতরণ যশোরে ‘ডেভিল হান্ট ফেজ ২’অভিযানে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের আরও ৫ নেতাকর্মী আটক  যশোর জেনারেল হাসপাতাল থেকে বার্মিজ চাকুসহ যুবক আটক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়ে যে যুদ্ধ শুরু হয়ে ছিলো, ১৬ ডিসেম্বর তার চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে ছিলাম….ফজলুল হক মিলন যশোরে মহান বিজয় দিবসে বর্ণাঢ্য আয়োজনে কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে অনুষ্ঠিত নওগাঁয় বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সম্মানে সংবর্ধনা যশোরের ছাত্রনেতার হাত ধরে ৩০ টি পরিবার পানিবন্দি থেকে মুক্তি পেল। লালপুরে জামায়াতের বিজয় র‍্যালি- স্বাধীনতার সুফল ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি কাভার্ড ভ্যানের চাপায় প্রাণ গেল মোটরসাইকেল আরোহী ওসি ও এএসআইয়ের যশোরে স্বাস্থ্য স্যানিটেশন ও আবাসন প্রকল্পের নামে ৪ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

গাজীপুরের কালীগঞ্জে হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি

গাজীপুরের কালীগঞ্জে হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি


বিল্লাল হোসেন কালীগঞ্জ, গাজীপুর, প্রতিনিধি: সোমবার  ১লা ডিসেম্বর  ১৯৭১ সালের এইদিনে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের খলাপাড়া গ্রামে অবস্থিত ন্যাশনাল জুট মিলের ভেতর অবস্থানরত কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং মুক্তিযোদ্ধে সহযোগীসহ ১০৩ জন বীর বাঙালিকে লাইনে দাঁড় করিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে নির্মমভাবে গণহত্যা চালায় পাক-বাহিনী। আর সেই থেকে প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিনে ওই শহীদদের স্মরণে গণহত্যা দিবস পালিত হয়।
দিবসটি উপলক্ষে আজ সোমবার সকালে কালীগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের খলাপাড়া অবস্থিত শহীদদের গণকবরে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী এ. টি. এম. কামরুল ইসলাম এর নেতৃত্বে কালীগঞ্জ উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা এবং সরকারী কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন  সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাকিয়া সরওয়ার লিমা, প্রকৌশলী মোঃ রেজাউল হক, কৃষি অফিসার ফারজানা তাসলিম, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ, আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা ওবায়দুর রহমান, পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোছাঃ নাহিদা খাতুন, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শাহানাজ আক্তার, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ ইসমাইল ভূঁইয়া, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার আফরোজা বেগম, সমবায় অফিসার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান ভূঁইয়া, পল্লী উন্নয়ন অফিসার ইশরাত জাহান, তথ্যসেবা কর্মকর্তা সোহা তামান্না, কালীগঞ্জ থানার এস আই  কুদ্দুস, থানা কমান্ডার বীর মক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক কাজী, সহ কমান্ডার আনোয়ার উল হক বাচ্চু, সদস্য সচিব মোহাম্মদ আলী পাঠান, বাহাদুর সাদী ইউনিয়ন আহবায়ক মনির উল হক, নূরুল ইসলাম, মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, সামসুল হক, মো. সিরাজ উদ্দিনসহ কয়েক জন বীর মুক্তিযোদ্ধা,  বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, কালীগঞ্জে কর্মরত প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ, সমাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

পরে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া করা হয়। কালীগঞ্জ উপজেলা কমান্ডার বীর মক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক কাজী জানান, ১৯৭১ সালের ১ ডিসেম্বর কালীগঞ্জ ন্যাশনাল জুট মিলের শ্রমিক-কর্মচারীরা সকালের নাস্তা খেতে বসার মুহূর্তে পশ্চিম পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পার্শ্ববর্তী ঘোড়াশাল ক্যাম্প থেকে নদী পার হয়ে মিলের ভিতর প্রবেশ করে মুক্তিযোদ্ধাদের খুঁজতে থাকে। ওই দিন সকাল থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত ন্যাশনাল জুট মিলের নিরীহ বাঙালি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এক লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে নির্মম গণহত্যা চালায় হানাদার বাহিনী। স্থানীয়রা জানান, হানাদার বাহিনী গণহত্যা চালিয়ে দক্ষিণ দিকের দেয়াল ভেঙে মিল ত্যাগ করে। ৩/৪ দিন নিরীহ বাঙালিদের মৃতদেহ মিলের সুপারী বাগানে পড়ে থাকে। পাকিস্তান বাহিনীর ভয়ে এলাকার কেউ মিলের ভেতরের মরদেহগুলো উদ্ধার করতে এগিয়ে আসতে সাহস পায়নি। ফলে মরদেহগুলো শেয়াল-শকুনের খাদ্যে পরিণত হয়। দেশ স্বাধীন হলে এলাকাবাসী মিলের ভেতর গিয়ে ১০৩ জনের মৃতদেহ বিকৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে। পরে বিকৃত ওই মৃতদেহগুলো (১০৩ জন) ন্যাশনাল জুট মিলের দক্ষিণ পাশে গণকবরে সমাহিত করা হয়। মিল কর্তৃপক্ষ গণহত্যার শিকার শহীদদের স্মৃতি রক্ষার্থে “শহীদদের স্মরণে ১৯৭১’ নামে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করেন। শহীদদের গণকবরের পাশে পরবর্তীতে একটি পাকা মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী এ. টি. এম. কামরুল ইসলাম বলেন প্রতি বছর এর ন্যায় আজ ১ম ডিসেম্বর সকালে ১০৩ জন শহীদের গণকবরে উপজেলা প্রশাসন, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন এবং স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদেরকে নিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করি। আমার মনে হল ১০৩ জনের জন্য এই গণকবরের জায়গাটুকু সংকীর্ণ, উপজেলা প্রশাসন এর মাধ্যমে এটা কে আরো সৌন্দর্য বর্ধন করার চেষ্টা করব।
Tag :
জনপ্রিয় সংবাদ

কুষ্টিয়ায় শীতার্ত দুঃস্থদের মাঝে বিজিবির কম্বল বিতরণ

গাজীপুরের কালীগঞ্জে হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি

আপডেট টাইম : ০৫:২৭:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৫
গাজীপুরের কালীগঞ্জে হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি


বিল্লাল হোসেন কালীগঞ্জ, গাজীপুর, প্রতিনিধি: সোমবার  ১লা ডিসেম্বর  ১৯৭১ সালের এইদিনে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের খলাপাড়া গ্রামে অবস্থিত ন্যাশনাল জুট মিলের ভেতর অবস্থানরত কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং মুক্তিযোদ্ধে সহযোগীসহ ১০৩ জন বীর বাঙালিকে লাইনে দাঁড় করিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে নির্মমভাবে গণহত্যা চালায় পাক-বাহিনী। আর সেই থেকে প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিনে ওই শহীদদের স্মরণে গণহত্যা দিবস পালিত হয়।
দিবসটি উপলক্ষে আজ সোমবার সকালে কালীগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের খলাপাড়া অবস্থিত শহীদদের গণকবরে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী এ. টি. এম. কামরুল ইসলাম এর নেতৃত্বে কালীগঞ্জ উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা এবং সরকারী কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন  সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাকিয়া সরওয়ার লিমা, প্রকৌশলী মোঃ রেজাউল হক, কৃষি অফিসার ফারজানা তাসলিম, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ, আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা ওবায়দুর রহমান, পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোছাঃ নাহিদা খাতুন, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শাহানাজ আক্তার, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ ইসমাইল ভূঁইয়া, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার আফরোজা বেগম, সমবায় অফিসার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান ভূঁইয়া, পল্লী উন্নয়ন অফিসার ইশরাত জাহান, তথ্যসেবা কর্মকর্তা সোহা তামান্না, কালীগঞ্জ থানার এস আই  কুদ্দুস, থানা কমান্ডার বীর মক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক কাজী, সহ কমান্ডার আনোয়ার উল হক বাচ্চু, সদস্য সচিব মোহাম্মদ আলী পাঠান, বাহাদুর সাদী ইউনিয়ন আহবায়ক মনির উল হক, নূরুল ইসলাম, মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, সামসুল হক, মো. সিরাজ উদ্দিনসহ কয়েক জন বীর মুক্তিযোদ্ধা,  বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, কালীগঞ্জে কর্মরত প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ, সমাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

পরে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া করা হয়। কালীগঞ্জ উপজেলা কমান্ডার বীর মক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক কাজী জানান, ১৯৭১ সালের ১ ডিসেম্বর কালীগঞ্জ ন্যাশনাল জুট মিলের শ্রমিক-কর্মচারীরা সকালের নাস্তা খেতে বসার মুহূর্তে পশ্চিম পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পার্শ্ববর্তী ঘোড়াশাল ক্যাম্প থেকে নদী পার হয়ে মিলের ভিতর প্রবেশ করে মুক্তিযোদ্ধাদের খুঁজতে থাকে। ওই দিন সকাল থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত ন্যাশনাল জুট মিলের নিরীহ বাঙালি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এক লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে নির্মম গণহত্যা চালায় হানাদার বাহিনী। স্থানীয়রা জানান, হানাদার বাহিনী গণহত্যা চালিয়ে দক্ষিণ দিকের দেয়াল ভেঙে মিল ত্যাগ করে। ৩/৪ দিন নিরীহ বাঙালিদের মৃতদেহ মিলের সুপারী বাগানে পড়ে থাকে। পাকিস্তান বাহিনীর ভয়ে এলাকার কেউ মিলের ভেতরের মরদেহগুলো উদ্ধার করতে এগিয়ে আসতে সাহস পায়নি। ফলে মরদেহগুলো শেয়াল-শকুনের খাদ্যে পরিণত হয়। দেশ স্বাধীন হলে এলাকাবাসী মিলের ভেতর গিয়ে ১০৩ জনের মৃতদেহ বিকৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে। পরে বিকৃত ওই মৃতদেহগুলো (১০৩ জন) ন্যাশনাল জুট মিলের দক্ষিণ পাশে গণকবরে সমাহিত করা হয়। মিল কর্তৃপক্ষ গণহত্যার শিকার শহীদদের স্মৃতি রক্ষার্থে “শহীদদের স্মরণে ১৯৭১’ নামে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করেন। শহীদদের গণকবরের পাশে পরবর্তীতে একটি পাকা মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী এ. টি. এম. কামরুল ইসলাম বলেন প্রতি বছর এর ন্যায় আজ ১ম ডিসেম্বর সকালে ১০৩ জন শহীদের গণকবরে উপজেলা প্রশাসন, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন এবং স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদেরকে নিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করি। আমার মনে হল ১০৩ জনের জন্য এই গণকবরের জায়গাটুকু সংকীর্ণ, উপজেলা প্রশাসন এর মাধ্যমে এটা কে আরো সৌন্দর্য বর্ধন করার চেষ্টা করব।