রাজশাহী ব্যুরোঃ রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার ৪ নং মৌগাছী ইউনিয়নের বসন্তপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ঘুষ বানিজ্যের মাধ্যমে ৪র্থ শ্রেনীর তিনটি পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পুর্ণ করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ, এমন অভিযোগ তুলে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গত ২৪ নভেম্বর জেলা রাজশাহীর বিজ্ঞ মোহনপুর সহকারি জজ আদালতে এই মামলা দায়ের করেন প্রতিষ্ঠানটির ৩ নং দাতা সদস্য মোঃ মোনায়েন (৫৫)। যার মামলা নং ৩০৪/২০২২। ঐ মামলায় তিনি নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিতের আবেদনও করেন। এরপর গত ২৯ নভেম্বর ২০২২ তারিখে আদালত বাদীর আবেদন পর্যালোচনা করে নিয়োগ স্থগিতের আদেশ দেন। এরপরে আদেশের কপি দ্রুত ঐ স্কুল কর্তৃপক্ষের নিকট পৌছানো হয়। কিন্তু ঐ স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, মৌগাছী ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নং ওয়ার্ড সদস্য আব্দুল ওহাব দেওয়ান ও স্কুলের প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জল হোসেন তড়িঘড়ি করে আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে ডিসেম্বরের ৩ তারিখে উল্লেখিত তিনটি পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পুর্ন করেন। এতে অফিস সহায়ক পদে চুনিয়াপাড়ার মোস্তফার ছেলে জুয়েল, আয়া পদে একই এলাকার আলমগিরের স্ত্রী শাহানাজ পারভীন, পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে আকুবাড়ি গ্রামের কাদেরের ছেলে আবদুল আওয়াল’কে নিয়োগ দেওয়া হয়।
এরপর অভিযোগ উঠেছে ৪নং মৌগাছী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আল-আমীন বিশ্বাসের ক্যাডার বাহিনী বলে তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
তবে মামলার বরাত ও সূত্রমতে জানাযায়, গত ৫ জুলাই ২০২২ তারিখে স্কুলের তিনটি শূন্য পদে অজনবহুল পত্রিকাতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এর বিপরিতে, ঐ তিনটি পদে নিয়োগের জন্য মাত্র ১৫ জনকে আবেদন দেখানো হয়। তারপরও আবেদনের প্রেক্ষিতে ঐ স্কুল কমিটির সভাপতি ও স্কুলের প্রধান শিক্ষকের মনোনিত প্রার্থীকে (প্রতি পদে ১৪ লক্ষ টাকা ঘুষ গ্রহনের মাধ্যমে) নিয়োগ দিতে নানান কারসাজি করে বসেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে স্কুল কমিটির অন্যান্য সদস্যরা তাদের মনোনিত প্রার্থীকে অযোগ্য উল্লেখ করে পরিক্ষাসহ সকল নিয়ম মেনে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলেন। কিন্তু বাঁকি সদস্যদের কথা আমলে না নিয়ে দলীয় ক্ষমতাকে অপব্যবহার করে মনোনিত প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়ার ঘোষনা দেন কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক। এরপর বাধ্য হয়ে দাতা সদস্য মোঃ মোনায়েম আদালতের স্বরনাপন্ন হয়ে ঘুষ লেনদেন সহ নানা অনিয়ম উল্লেখ করে আরজ পেস করেন।
নিয়োগের বিষয়ে জানতে স্কুল কমিটির সভাপতি আবদুল ওহাব দেওয়ানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমরা কোর্টের নির্দেশনার আগেই নিয়োগ সম্পুর্ন করেছি। আমরা কোর্টের নোটিশ পেয়েছি। কোর্টে জবাব দিব। পরে স্কুলের প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জল হোসেনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমরা সকল নিয়ম মেনে নিয়োগ দিয়েছি। টাকা লেনদেনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সেটিকে অস্বিকার করেন। তবে কবে নিয়োগ সম্পুর্ন হয়েছে জানতে চাইলে তিনি জানান, গত ডিসেম্বরের ৩ তারিখে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এবিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ নাসির উদ্দিনের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বলেন, যদি মামলা হয়ে থাকে, তাহলে আদালত যে রায় দিবে সেটি মানতে হবে। আইনের উর্ধ্বে কেউ নয়। আমি ব্যস্ত আছি। আমার জানা ছিলনা, আপনি বললেন, আমি জেনে দেখবো।
