সংসদ নির্বাচন ফরিদপুর-১ আসনে আ’লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মাঠে দেখা গেলেও দেখা যাচ্ছে না বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের
বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি : বোয়ালমারী-আলফাডাঙ্গা-মধুখালি উপজেলা নিয়ে ফরিদপুর-১ সংসদীয় আসন গঠিত। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশিদের কিছু প্রার্থীকে মাঠে দেখা গেলেও দেখা মিলছে না বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের। আ’লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশিদের মধ্যে কিছু সংখক নেতাদের মানুষের কাছে গিয়ে দোয়া চাওয়া ও পথসভা করতে দেখা যাচ্ছে। মানুষের কাছে গিয়ে দোয়া চাওয়ার কারনে নির্বাচনী মাঠ গরম হয়ে উঠছে ইতিমধ্যে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা যার যার মতো করে নির্বাচনী প্রচারাভিযান শুরু করেছেন। বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে এ আসনে দলটির সম্ভাব্য প্রার্থীরা যাতে পিছিয়ে না পড়ে সেদিকে খেয়াল রেখে সম্ভাব্য প্রার্থীরা কর্মী ও নিজেদের গুছিয়ে নিচ্ছেন। ফরিদপুরের চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে এ আসনে এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা বেশি দেখা যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ফরিদপুর-১ আসনে নৌকার পক্ষে এখন পর্যন্ত এক ডজনেরও বেশি মনোনয়ন প্রত্যাশীর নাম শোনা যাচ্ছে। মনোনয়ন প্রত্যাশিদের অনেকেই বিগত দিনে এলাকায় ছিলেন না। আবার দুই একজনকে নিয়মিত এলাকায় দেখা গেলেও কয়েকজনকে মাঝে মাঝে এলাকায় দেখা গেছে। যাদের নাম শোনা যাচ্ছেন তারা হলেন- আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক সাংসদ বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুর রহমান, এই আসনের বর্তমান এমপি ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. মনজুর হোসেন, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য ও সাবেক সাংসদ কাজী সিরাজুল ইসলাম, সাবেক এআইজি ও বাংলাদেশ পাঠাগাড় আন্দোলনের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মালিক খসরু পিপিএম, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এডভোকেট লিয়াকত শিকদার, বোয়ালমারী উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এম মোশাররফ হোসেন, ফরিদপুর-১ আসনের পদত্যাগী এমপি আব্দুর রউব মাস্টারের ছেলে, বাংলাদেশ আ’লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সৈয়দ শামীম রেজা, ফরিদপুর কৃষকলীগের সহসভাপতি ডা. গোলাম কবির, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তিতাস গ্যাসের সাবেক পরিচালক খান মঈনুল ইসলাম মোস্তাক, ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও হোমিওপ্যাথি বোর্ডের চেয়ারম্যান ডা. দিলীপ রায়, কেন্দ্রীয় শ্রমিকলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম, মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম কৃক, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব খিজির আহমেদ, সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিন্টু, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক ও বর্তমান এমপির স্ত্রী সেলিনা আক্তার, ফিনল্যান্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন। এ সকল মনোনয়ন প্রত্যাশিদের মধ্যে বর্তমান মাঠে প্রচার-প্রচারনা চালাতে দেখা যাচ্ছে, কেন্দ্রীয় আ’লীগর প্রেসিডিয়াম মেম্বর বীরমুক্তিযোদ্ধা সাবেক এমপি মো. আব্দুর রহমান, কেন্দ্রীয় আ’লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য আলহাজ্ব কাজী সিরাজুল ইসলাম, বোয়ালমারী উপজেলা আ’লীগের সভাপতি এমএম মোশাররফ হোসেন, সৈয়দ শামিম রেজা, আব্দুল্লাহ আল মামুনকে। মনোনয়ন প্রত্যাশিদের মধ্যে আব্দুর রহমানকে বিভিন্ন অনুষ্ঠান ঈদ, পূজাসহ সব ধরণের অনুষ্ঠানে দেখা গেছে বিগত দিনগুলোতে। তাকে বিভিন্ন সময় অসহায়দের মাঝে নগদ অর্থ ও বস্ত্র বিতরণ করে করতে দেখা গেছে। এই আসনের আ’লীগের নেতা কর্মীদের তাকে নিয়মিত খোজঁ খবর নিতে দেখা গেছে। এদিকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৪ জন। তারা হলেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক সাংসদ শাহ মো. আবু জাফর, কেন্দ্রীয় কৃষক দলের-সহ সভাপতি ও সাবেক সাংসদ খন্দকার নাসিরুল ইসলাম, ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক শাখার ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মো. সাহাবুদ্দিন আহমেদ নিউটন মিয়া এবং বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আজিজুল আকিল ডেভিড সিকদার। এই মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে শাহাবুদ্দিন আহমেদ নিউটন মিয়াকে করোনাকালিন সময় দেখা গেছে অসহায় দরিদ্রদের বাড়িতে বাড়িতে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছায় দিতে। শীত কালিন সময় বিভিন্ন এলাকায় কম্বর বিতরণ করতে এবং নির্বাচনী প্রচারনা চালাতে। আগে ২০০৯ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো অংশ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর চেয়ে এক লাখের বেশি ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মো. আব্দুর রহমান। তিনি ২০১৪ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে এলাকায় প্রচুর উন্নয়নমূলক কাজ করেন তিনি। ফরিদপুর-১ আসনে উন্নয়নের মহানায়ক হিসেবে মো. আব্দুর রহমান পরিচিত। সর্বশেষ অনুষ্ঠিত ২০১৮ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-১ আসন থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. মনজুর হোসেন। দলের মনোনয়ন এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার, ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান বলেন, আমি দল করি, দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা মনোনয়নের ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত নেবেন আমি সেই সিদ্ধান্তই মাথা পেতে নেবো। বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক সাংসদ খন্দকার নাসিরুল ইসলাম বলেন, এই প্রধানমন্ত্রী ও নির্বাচন কমিশনারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে না। তবে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে আমি শতভাগ আশাবাদী যে আমি মনোনয়ন পাব। দলের অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী শাহ মো. আবু জাফর সম্পর্কে তিনি বলেন, তিনি (শাহ জাফর) শারীরিকভাবে বেশ অসুস্থ। করোনাকালীন সময়েও দলের নেতাকর্মী তাকে পাশে পায়নি। এ জন্য আমি নিশ্চিত যে দল নির্বাচনে অংশ নিলে আমিই মনোনয়ন পাব।