বগুড়ায় ছুরিকাঘাতে এক যুবক খুন
(বগুড়া) প্রতিনিধি : পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বগুড়ার শাজাহানপুরে বন্ধুদের উপুর্যপুরি ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক বন্ধুর মৃত্যুর ঘটনার পর বেজোড়া গ্রামে তিন বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার বেজোড়া গ্রামের স্কুলপাড়া ও হিন্দুপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। এর আগের দিন অর্থাৎ গত সোমবার দুপুরে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন রেজাউল ইসলাম ওরফে রনি (৩৬)। নিহত রেজাউল ইসলাম উপজেলার চকলোকমান দক্ষিণপাড়ার মৃত আব্দুল হামিদ আলীর ছেলে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, নিহত রেজাউল ইসলামের সাথে তার বন্ধু বেজোড়া স্কুলপাড়ার বাসিন্দা বাদশা মিয়ার ছেলে আকরাম (৩০) ও রানা (২৫), বেজোড়া হিন্দুপাড়ার মৃত সজল দাসের ছেলে সজিব (২০), শুকুর আলীর ছেলে সুজন (২০), আব্দুর রশিদের ছেলে সুমন (২৫), কিনু মন্ডলের ছেলে সজিব (২২) সহ কয়েকজনের সাথে বেশকিছু দিন যাবত বিরোধ চলে আসছিল। এক পর্যায়ে গত ১১ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে রেজাউল ইসলাম রনি তার সহযোগী নজরুল ইসলামকে সাথে নিয়ে বেজোড়া হিন্দুপাড়ায় জনৈক ব্যক্তির কাছে জমির বায়না করতে যান। পথিমধ্যে হিন্দুপাড়া বটতলা নামক স্থানে পৌঁছলে উল্লেখিত বন্ধুরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাদের পথরোধ করে রেজাউল ও নজরুলকে এলোপাথারী মারপিট করে। এক পর্যায়ে রেজাউল ইসলামের মাথায় ও পিঠে উপুর্যপুরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় তারা। আশপাশের লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় রেজাউল ইসলামকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। এঘটনায় রেজাউল ইসলামের মা রওশন আরা বাদি হয়ে এজাহারনামীয় ১০জনসহ অজ্ঞাতনাম ১০-১২ ব্যক্তির বিরুদ্ধে শাজাহানপুর থানায় অভিযোগ করেন। অপরদিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রেজাউল ইসলামের অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত সোমবার দুপুরে রেজাউল ইসলাম মারা যায়। তার মৃত্যুর খবর জানাজানি হওয়ার পরদিন মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে অভিযুক্ত বন্ধুদের মধ্য থেকে রানা, সজিব ও সুমনের বসতবাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। একই দিনে একই সময়ে তিন বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অনেকে বলছেন, রেজাউলের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে উত্তেজিত জনতা বসতবাড়িতে আগুন দিয়েছে। আবার কেউ বলছেন, রেজাউল খুনের ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নিতে পরিকল্পিতভাবে বাড়িঘরে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এ বিষয়ে বগুড়া শাজাহানপুর থানার ওসি (তদন্ত) মাসুদ করিম জানান আগুনের ঘটনা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। কেউ বলছে উত্তেজিত জনগণ আগুন দিয়েছেন। আবার নিজেদের বাড়িঘরে নিজেরাই আগুন দিয়েছেন বলেও শোনা যাচ্ছে। ঘটনার তদন্তপূর্বক প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটন করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।