মোঃবেল্লাল হোসেন দশমিনা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: ষোল বছর আগে পটুয়াখালীর দশমিনায় কলেজ ছাত্রী তানিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগ দুই আসামীর ফাঁসির আদেশ বহাল রাখায় সন্তোাষ প্রকাশ করেছেন নিহতের পরিবার, স্বজন ও স্থানীয়রা। মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) আসামীদের আপীল খারিজ করে ফাঁসি বহাল রাখেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপীল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী মোঃ মিরাজ খলিফা উপজেলার বাঁশবাড়ীয়া ইউনিয়নের গছানী গ্রামের মৃত আবু তাহের মাষ্টারের ছেলে এবং নুর আলম হাওলাদার ওরফে পচু ওরফে সুমন ওরফে নুরুল আলম একই গ্রামের খোরশেদ হাওলাদারের ছেলে। মামলার অপর মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী উপজেলার বাঁশবাড়ীয়া ইউনিয়নের চরহোসনাবাদ গ্রামের নুর হোসেন গাজীর ছেলে মোঃ জাফর গাজী ইতোমধ্যে বরিশাল কারাগারে মৃত্যুবরণ করায় তার আপীল বাদ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গছানী নানাবাড়ী থেকে
তানিয়া দশমিনা আবদুর রসিদ তালুকদার কলেজে (বর্তমানে সরকারী কলেজ) এইচএসসি প্রথম বর্ষে পড়াশুনা করতেন। ২০০৫ সালের ২০ সেপ্টেম্বর সকালে তানিয়া প্রাইভেট পড়ার জন্য নানা বাড়ী থেকে কলেজের উদ্দেশ্যে গেলে পথিমধ্যে আসামীরা তানিয়াকে অপহরণ করে জোরপূর্বক ধর্ষণ শেষে হত্যা করে।
এ ঘটনায় করা মামলায় আসামীদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়। জানা যায়, বরিশালের দ্রæত বিচার ট্রাইব্যুনাল ২০০৬ সালে তিন আসামীকে মৃত্যুদন্ড দেয়। ২০১২ সালের ২৯ ফেব্রæয়ারী হাইকোর্ট ওই রায় বহাল রাখেন। এর বিরুদ্ধে আপীল করে আসামীরা।
নিহত তানিয়া উপজেলার ৩নং বেতাগী সানকিপুর ইউনিয়নের বেতাগী
সানকিপুর গ্রামের মোহাম্মদ আবু নোমান মাষ্টারের মেয়ে। আপীল বিভাগ খুনীদের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করে কান্না জড়িত কন্ঠে তানিয়ার পিতা আবু নোমান মাষ্টার জানান, আমরা এ রায়ে সন্তুষ্ট। সরকার ও বিজ্ঞ আদালতের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। অতি দ্রæত এ রায় কার্যকরের দাবী জানান তিনি।
নিহত তানিয়ার অসুস্থ্য মাতা পিয়ারা খানম জানান, আমি আমার মেয়েকে
হারিয়েছি। আর কাউকে যেন এভাবে সন্তান হারাতে না হয়। অতি দ্রæত এ রায় বাস্তবায়নের দাবী জানান তিনি। দশমিনা সরকারী আবদুর রসিদ তালুকদার কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ খলিলুর রহমান জানান, তানিয়া অত্যন্ত মেধাবী, সুন্দর মনের ও চরিত্রবান মেয়ে ছিল।
তার চালচলন কথাবার্তায় অনেক মাধুর্য ছিল। তার মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত হয়েছিলাম। আমরা শিক্ষক ছাত্রসহ সর্বস্তরের মানুষরা এ হত্যার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবীতে মিছিলও করেছিলাম। আপীল বিভাগ আসামীদের আপীল খারিজ করে ফাঁসির আদেশ বহাল রাখায় আমি সন্তুষ্ট। অতি দ্রæত এ রায় বাস্তবায়নের দাবী জানাচ্ছি।
দশমিনা উপজেলা আইনজীবি সমিতির সাবেক সাধারন সম্পাদক এ্যাড.ইকবাল হোসেন জানান, আপীল বিভাগ সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের আদেশ বহাল রাখায় আমি সন্তুষ্ট। ভবিষ্যতে যাতে এমন অপরাধের পুনরাবৃত্তি না ঘটে তাই অতি দ্রæত এ রায় কার্যকরের দাবী জানাচ্ছি।