এদেশের মানুষ আর তারেক জিয়াকে গ্রহণ করবে না”
বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে কোন দেশেরই হস্তক্ষেপ কাম্য নয় -আব্দুর রহমান
বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার ও সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান আগস্ট মাসকে সকল হারানোর দিন, বেদনার দিন উল্লেখ করে বলেন, সামনে নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি অশুভ রাজনৈতিক দল এবং গোষ্ঠী নির্বাচনকে ভন্ডুল করার উদ্দ্যেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলে দেশে নৈরাজ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি করছে। তাদেরকে বলি বাংলাদেশের মানুষ, মাটি ও ভৌগোলিক অবস্থা বিশ্বের জায়গা থেকে বিচ্ছিন্ন কোন দীপ নয়; সারা পৃথিবীতে যেভাবে নির্বাচন হয় সংবিধান সম্মত অনুযায়ী। বাংলাদেশেও সংবিধান অনুযায়ী ২০২৪ সালের নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচন নিরপেক্ষ ও অবাধ সুষ্ঠু হবে। নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ শেখ হাসিনাকে আবারো ম্যান্ডেট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বানাবে। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী বলেই বিশ্ববাসী তার প্রশাংসায় পচ্চমুখ। সারা পৃথিবীর সৎ প্রধানমন্ত্রীদের তিনজনের একজন শেখ হাসিনা। দক্ষিণ এশিয়ার ক্ষমতাধর নারীদের মধ্যেও তিনি একজন।
আজ শনিবার বিকেল ৬টায় ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার কামারখালী বাজারের সোনালী ব্যাংক সংলগ্ন ডুমাইন-আড়পাড়া-কামারখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আয়োজনে বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্যের প্রতিবাদে শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আব্দুর রহমান এসব কথা বলেন।
এ সময় আব্দুর রহমান আরো বলেন, আমেরিকাকে নয়াদিল্লি বলেছেন, বাংলাদেশে শেখ হাসিনা দূর্বল হলে তা ভারত এবং আমেরিকা কারো পক্ষেই সুখকর হবে না। আর একথা বলার পর ফকরুল সাহেব বলেছেন, আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে ভারত হস্তক্ষেপ করছে। তারা নাকি এটা আশা করেন না। শুধু ভারত নয়; নির্বাচনে কোন দেশেরই হস্তক্ষেপ কাম্য নয়। আমরা কোন দেশেরই হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করবো না।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে আব্দুর রহমান বলেন, স্বপ্ন দেখা ভালো। স্বপ্ন যদি দিবাস্বপ্ন হয় তাহলে ফল উল্টা হয়। বাংলাদেশের মানুষ এতো অকৃতজ্ঞ নয় ওতো আত্মভোলা নয়। যেই তারেক জিয়া ছিলো হাওয়া ভবনের মালিক। খুয়াব ভবন তৈরি করে বিদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে নিয়ে গিয়েছিল। এদেশের মানুষ আর তারেক জিয়াকে গ্রহণ করবে না বলে বিশ্বাস করি।
তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচন হতে দিবে না, অথচ ক্ষমতায় আসতে চায়। তাদের লক্ষ্য নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় আসার রাস্তা তথা আরেকটি ওয়ান ইলেভেন তৈরি করা। বাংলাদেশের কিছু জনবিচ্ছিন্ন ব্যক্তিদের দিয়ে অরাজনৈতিক সরকার গঠন করা।
সমাবেশে বক্তব্যকালে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক বলেন, কামারখালী-আড়পাড়া এলাকায় আব্দুর রহমানের ডাকে শুনে হাজার হাজার নেতাকর্মীরা ছুটে এসেছেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আবারো ক্ষমতায় আসবে। আব্দুর রহমান আওয়ামী লীগের অন্যতম একজন নীতি নির্ধারক। আগামীতে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে আপনাদের আর উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্য কোন মন্ত্রীর দ্বারস্থ হতে হবেনা। তিনি নিজেই মন্ত্রী হবেন। এ জন্য তিনি ফরিদপুর-১ আসনের সকলকে আব্দুর রহমানের নেতৃত্বে সমবেত হওয়ার আহ্বান জানান।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আরিফ বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-১ আসনে আব্দুর রহমানের বিকল্প নাই। এটা জনসভায় উপস্থিত লোকজনই বলে দেয়। আমি বিশ্বাস করি জননেত্রী শেখ হাসিনা এবার তাকেই মনোনয়ন দিবেন।
মধুখালী উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্ব এবং আড়পাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরমান বাবুর পরিচালনায় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, পাশ্ববর্তী জেলা মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড. সাইফুজ্জামান শিখর, ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক, সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আরিফ, ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শ্যামল ব্যানার্জি, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল হক বকু, জেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি গোলাম নাসির, মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি কাজী আব্দুস সোবহান, সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আহমেদ, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তামজিদুল রশিদ চৌধুরী রিয়ান, সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহমদ, বাগাট ইউপি চেয়ারম্যান মতিয়ার, কামারখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুর রহমান বাবু, ডুমাইন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাকির আহমেদ টোকন প্রমুখ।
শান্তি সমাবেশে দুপুরের পর থেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে মোটর সাইকেল, নসিমন, করিমনসহ বহর ও মিছিল সহকারে নেতাকর্মীরা যোগ দিতে থাকেন। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগের এ শান্তি সমাবেশ আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহমানের সমর্থনে নির্বাচনী জনসভায় পরিণত হয়। সমাবেশে প্রায় পাঁচ হাজার নেতাকর্মীর সমাগম ঘটে।