আলু বীজের দাম দ্বিগুন হওয়ায় বরেন্দ্র অঞ্চলের চাষিরা দিশেহারা
মোহাম্মদ আককাস আলী:আলু বীজের দাম দ্বিগুন হওয়ায় বরেন্দ্র অঞ্চলের চাষিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। খাবার আলুর দাম বেশি হওযায় গত বছরের চেয়ে দ্বিগুন দামে আলু বীজ কিনে চাষাবাদ করতে হচ্ছে চাষিদের। এতে করে এক বিঘা জমিতে চালু চাষের শুরুতেই বীজ বাবদ বাড়তি ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা বেশি গুনতে হচ্ছে। বর্তমান দাম অনুযায়ী আলু মৌসুমে দাম না পেলে লোকসান গুনতে হবে চাষিদের। তাই চাষিদের কপালে দেখা দিয়েছে চিন্তার ভাঁজ। এছাড়াও এবার বেশি দাম পেয়ে অনেকেই আলু বীজ হিমাগার থেকে বিক্রি করে দিয়েছেন। ফলে বীজেরও সংকট দেখা দিতে পারে বলেও আশঙ্কা চাষিদের।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবছর আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ১৯ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। ইতোমধ্যে আগাম জাতের আলু চাষসহ জেলায় প্রায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ সম্পূর্ণ হয়েছে। তবে এবছর বাজারে আলুর দাম বেশি হওযায় কৃষকরা আলু চাষে আরও বেশি ঝুঁকবেন এবং আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছেন কৃষি বিভাগ।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে- উঁচু জমিগুলোতে আলু চাষ শুরু করেছেন চাষিরা। কোন কোন চাষি আলুর জমি প্রস্তুত করতে হাল দিচ্ছেন। আবার কেউ জমিতে সার ছিটিয়ে আলগা মাটি সমান করতে দিচ্ছেন মই। আবার কেউ কেউ বীজ বপনে নিজেদের মতো ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে জেলায় পুরোদমে শুরু হবে আলু চাষ।
চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে- গত বছর বিভিন্ন জাতের আলুর বীজের দাম ছিল ১৬০০-২০০০ টাকা মণ। এবছর শুরুতেই সেই আলুর বীজ বাজরে বিক্রি হচ্ছে ৩৫০০-৪০০০ হাজার টাকা মণে। এক বিঘা জমিতে আড়াই থেকে তিন মণ লাগে বীজ। এতে করে আলু চাষের শুরুতেই বীজ বাবদ বাড়তি ৫ থেকে ৬ হাজার টাকসহ ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা লাগছে। হালচাষ, সার, শ্রমিকের মজুরি বাবদ লাগছে আরও প্রায় ৫ হাজার টাকা। এতে করে এক বিঘা জমিতে আলু লাগাতেই শুরুতেই খরচ পড়ছে ১৫ থেকে ১৭ হাজার টাকা। এছাড়াও আলুর গাছ উঠার পর সেচ, নিড়ানি ও কীটনাশক বাবদ আরও ৫ থেকে ৬ হাজার খরচ হবে। এতে করে এক বিঘা জমিতে আলু চাষে খরচ পড়বে ২১ থেকে ২৩ হাজার টাকা। পুরোদমে আলু চাষ শুরু হলে বীজ সংকট ও দাম বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা চাষিদের। তাই আলু চাষে আদৌ লাভ হবে কি না তা নিয়ে এখনই চাষিদের কপালে চিন্তার ভাঁজ দেখা দিয়েছে।
নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, জেলায় ইতোমধ্যে উঁচু জমিগুলোতে আলু চাষ শুরু হয়েছে। নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত আলু লাগানো যাবে। যেহেতু এবার বাজারের আলুর দাম বেশি তাই তুলনামূলকভাবে আলু বীজের দাম বেশি। এছাড়াও বাজারের আলুর দাম বেশি হওযায় আশা করছি কৃষকরা আরও বেশি আলু চাষে ঝুঁকবেন এবং লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।