1. zillu.akash@gmail.com : admi2017 :
  2. editor@dailynewsbangla.com : Daily NewsBangla : Daily NewsBangla
সাপাহার জবাই বিল পরিযায়ী পাখিদের কলকাকলিতে মুখরিত - dailynewsbangla
সোমবার, ০৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:৩১ অপরাহ্ন

সাপাহার জবাই বিল পরিযায়ী পাখিদের কলকাকলিতে মুখরিত

ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ৪ জানুয়ারী, ২০২৫

সাপাহার জবাই বিল পরিযায়ী পাখিদের কলকাকলিতে মুখরিত

নওগাঁর সাপাহারের জবাই বিল পরিযায়ী পাখিদের কলকাকলিতে মুখরিত।
 প্রতিবছরের ন্যায় এবারেও একটু আগেভাগেই এই বিলে অতিথি পাখিদের পাদচারণা লক্ষ্য করা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন, জবই বিল জৈববৈচিত্র সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান।
ইতোমধ্যেই সুদুর সাইবেরিয়া, ইউরোপসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে পরিযায়ী পাখির মধ্যে বড় খোপা, ডুবুরী, লেজ্ঞাহাস, পিয়াং হাস, চখাচখি, পাতিসরালী, তিলি হাস, ভুতি হাঁস সহ প্রায় ৪০ প্রজাতির পাখির দেখা মিলেছে এই বিলে।
বিগত কয়েক বছর যাবত দেশের বিভিন্ন স্থান হতে পাখি প্রেমিক, বন্য প্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ রাজশাহীর জাহাঙ্গীর কবির পরিদর্শক, বাংলাদেশ জৈববৈচিত্র সংরক্ষক ফেডারেশনের বন সংরক্ষক ও প্রধান উপদেষ্টা মোল্লা রেজাউল করিম, বগুড়া শাহ সুলতান কলেজের হিসাব বিজ্ঞানের বিভাগীয় প্রধান মোখলেছুর রহমান, বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের ঢাকা বন ভবনের সানাউল্ল্যাহ পাটোয়ারি এই জবই বিল সফর ও ভ্রমণ করেছেন।
তারা জবই বিল জৈববৈচিত্র সংরক্ষণ ও সমাজ কল্যাণ সংগঠনের সদস্যদের নিয়ে প্রতি বছর বিলে একটি করে পাখি জরিপ করেছেন। তাদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিগত ২০২৩ সালে এই বিলে অতিথি পাখিসহ সর্বমোট পাখির সংখ্যা ছিল ১১,২৩০টি। এর মধ্যে পাতি সরালি প্রায় ২,০২৩টি, লাল ঝুটি ভূতিহাঁস প্রায় ৩ হাজার, পরিযায়ী গিরিয়া হাঁস প্রায় ৬০০, পরিযায়ী পাতি তিলি হাঁস ৫০০, পরিযায়ী টিকি হাঁস, পিয়াং হাঁস প্রায় ১২টি, পরিযায়ী কলাপাখি ঠেঙ্গি ৬০টি, গেওলা বাটান ২০০, চা পাখি ৪০০, প্রশান্ত সোন জিরিয়া ২০০, পাতি ভূতি হাঁস ১৫০টি।
অতীতে এই বিলে সুদুর সাইবেরিয়া হতে শীতকালে অতিথি পাখিদের আগমনে পুরো বিলে পর্যাপ্ত কচুরিপানা ও পাখিদের আড্ডায় সারাক্ষণ কিচিরমিচির শব্দে এলাকা মুখরিত হয়ে থাকত। সে সময় রাজধানী ঢাকা শহরসহ দেশের বিভিন্নস্থান হতে পাখি শিকারিরা এই বিলে পাখি শিকার করতে আসতেন। মাঝখানে এলাকার লোকজন পুরো বিলটি কচুরিপানা মুক্ত করে সেখানে ধান চাষাবাদ শুরু ও অধিক হারে পাখি শিকার করায় পাখির আগমন কমতে শুরু করে এবং এক সময় “জাল যার জলা তার” নীতি অবলম্বন করায় বিল থেকে অতিথি পরিযায়ী পাখি আসা একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়।
পরবর্তী সময়ে বিলটি মৎস্য চাষের আওতায় এনে মৎস্য প্রকল্পের মাধ্যমে বিলে মাছ চাষ শুরু হলে আবারও বিলে অতিথি পাখিদের দেখা মিলতে শুরু করে। এমন সময় বিলে পাখি শিকার বন্ধ করতে স্থানীয় কতিপয় তরুণ “জবই বিল জৈববৈচিত্র সংরক্ষণ ও সমাজকল্যাণ” নামে একটি সংগঠন তৈরি করে পাখিদের নিরাপত্তা বিধানে সরকারের সহযোগী হিসেবে ভলান্টিয়ার হিসেবে কাজ করে। তারা পাখি শিকার বন্ধে ঝটিকা অভিযান শুরু করে, ফলে একসময় জবই বিল হতে যেকোনো ধরণের পাখি শিকার চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়।
বর্তমানে জবই বিল জৈববৈচিত্র সংরক্ষণ কমিটির সদস্যরা সারা বছর বিলটিতে পাখিদের বসবাসের জন্য বিলটির যেকোনো অংশে একটি পাখির অভয়াশ্রম তৈরির জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) বরাবর আবেদন করেছেন। আর দুই-চার দিনের মধ্যেই আবারও জবই বিলে মাছ ধরার মহোৎসব শুরু হলে পাখিরা অনিরাপদ হয়ে পড়বে। ফলে জবই বিল জৈববৈচিত্র সংরক্ষণ কমিটির পক্ষ হতে বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর পাখির অভয়াশ্রম তৈরির জন্য আবার আবেদন করা হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ইউএওন বিলের কোনো এক অংশে পাখির অভয়াশ্রম তৈরির জন্য লাল পতাকা দ্বারা চিহ্নিত করতে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে সাপাহার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাসুদ হোসেন বলেন, “বিষয়টি অতি গুরুত্বপূর্ণ। পাখিদের জন্য নিরাপদ অভয়াশ্রম নির্মাণের জন্য বিলের কোনো এক অংশে লাল পতাকা দ্বারা চিহ্নিতকরণ করার জন্য উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে, বিষয়টি তিনি দেখবেন।”
এরপর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোসা. রোজিনা খাতুন বলেন, “নিঃসন্দেহে এটি একটি ভাল উদ্যোগ। নির্বাহী অফিসার আমাকে মৌখিকভাবে লাল পতাকা দিয়ে পাখিদের অভয়াশ্রমের এলাকা চিহ্নিত করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টি আমি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।”
এলাকার পাখি প্রেমিক ও জবই বিল জৈববৈচিত্র সংরক্ষণ ও সমাজ কল্যাণ সংস্থার সদস্যসহ পুরো এলাকাবাসী অচিরেই সীমান্তবর্তী সাপাহার উপজেলার ঐতিহ্যবাহী এই জবই বিলের কোনো এক অংশে পাখির অভয়াশ্রম তৈরি করে পাখিদের নিরাপদ বসবাসের ব্যবস্থা নেওয়ার আহবান জানিয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো সংবাদ