ঢাকা ০৪:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫, ১৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
রিফায়েতপুর যুব সংঘ ক্লাব পরিদর্শন করলেন শরীফ উদ্দিন জুয়েল  ধামইরহাটে  অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল  সংঘর্ষ, সড়কে ঝরলো আরো একজনের প্রাণ।  যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন বোয়ালমারীতে মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগ, চলছে আপসের চেষ্টা বরেন্দ্র অঞ্চলে মাসকলাইয়ের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দশমিনায় বিদ্যুৎ লাইনে পাখি সাপ, বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ। ড্যাবের কেন্দ্রীয় কমিটিতে আইন বিষয়ক সহ সম্পাদক মনোনীত হলেন ডা. জাহিদ হাসান রিপক বাহাদুরপুরে বিএনপির পথসভা অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান:  অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন হোসেনাবাদ টেকনিক্যালে একাদশ শ্রেণিতে সবাই অকৃতকার্য

পাকা জামের মধুর রসে মুখ আর রঙ্গীন হয় না: বিলুপ্তের পথে কালো জাম

মো.আককাস আলী, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি: কবির ভাষায়, “পাকা
জামের মধুর রসে রঙ্গীন করি মুখ”। মধুমাস চললেও খোকা-খুকিদের মুখে
রঙ্গীন রসের চিহৃ দেখা যায় না। কবির কাব্য বিলুপ্তের পথে। মেলে না কালো
জামের দেখা। এক সময় মানুষ জাম গাছ তলায় যেত না কালো রসের ভয়ে। চলছে মধুমাস, এ মধুমাসে নানান প্রজাতির ফল-ফলাদি দেখা যায় আমাদের দেশে।

এই মধুমাসে আম-জাম-কাঁঠালের মিষ্টি রসে যেন প্রাণ জুড়িয়ে যায়। এর
মাঝে অন্যতম ফল হলো কালো জাম। পরম উপকারী এই কালো জাম ফলটি সকল শ্রেণীর মানুষের কাছে সমাদৃত। এই ফলটি নানান দেশে নানান নামে পরিচিত যেমন, জাম্বুল, জাম্বু, জামুল, কালোজাম ইত্যাদি। কিন্তু বর্তমানে নওগাঁ জেলায় সময়ের পরিক্রমায় হারিয়ে যেতে বসেছে জামগাছ।

অন্যান্য সব ফলের তুলনায় জামের স্থায়ীত্বকাল কম হলেও এটি পুষ্টিগুণে অতুলনীয়। ফলের স্বাদে মাসের নাম ফলাও হয়ে ঘুরতে থাকে মানুষের মুখে মুখে। তাইতো জৈষ্ঠ্য মাসকে মধুমাস হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এ মাসে হরেক রকমের ফল যেমন, আম, কাঁঠাল, লিচু, ডেফয়া, লটকন, কালো জাম,জামরুল, আতাফল, কাউ, শরীফাসহ নানা ফল পাকতে শুরু করে। মধুর স্বাদের ফল পাওয়া যায়।

শুধু ফল নয় জাম গাছ তীব্র রোদে পশুপাখি ও মানুষদের স্নিগ্ধছায়া দান করে। জাম গাছের কাঠ দিয়ে তৈরী হতো বাহারী সব আসবাব পত্র। সম্প্রতিকালে নওগাঁর বিভিন্ন জায়গায় এই জাম গাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে। আগে বিভিন্ন রাস্তায়, মহাসড়কে, বাড়ির আঙ্গিনায়, পুকুর পাড়ে হামেশাই দেখা মিলতো জাম গাছের।

কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় এখন জাম গাছ রোপণ না করায় গাছের
সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। বিগত দিনগুলোতে কিছু মানুষ জাম বিক্রি
করে নিত্য দিনের আয় করতেন। নওগাঁ জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে কালোজাম বিক্রি হচ্ছে চডাদামে। কিন্ত বর্তমানে গাছের পরিমাণ কমে যাওয়ার ফলে বাজারে এক কেজি কালো জাম বিক্রি হচ্ছে ১শ’ থেকে দেড়শ টাকায়।

যুক্তরাজ্যের ‘বøাককারেন্ট ফাউন্ডেশ’ এর মতে জামে প্রচুর পরিমানে
ভিটামিন সি থাকে। এটি একটি অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি উপাদান যা মানবদেহ
নিজ থেকে উৎপাদন করতে পারে না। তাছাড়া শরীর থেকে দ্রত ভিটামিন সি বের হয়ে যায় এবং দেহ এটি সংরক্ষন করতে পারে না।

ফাউন্ডেশনের তালিকা অনুযায়ী, ভিটামিন সি দেহের কোষের স্বাস্থ্য ভালো রাখে, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ঠান্ডা দূর করে, স্মৃতি উন্নত করে এবং চোখের লেন্স’ য়ে প্রোটিনের ক্ষয় দূর করে ছানি পড়া রোধ করে। সময়ের পরিবর্তনে জেলায় চাষীরা নানাবিধ ফল ফলাদি চাষ করছেন।

যার চাপে পড়ে হারিয়ে যাচ্ছে পুরনো দিনের জামগাছগুলো। যার ফলে একদিকে যেমন হারাতে বসেছে জামগাছ অপরদিকে মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে একটি অত্যাবশকীয় পুষ্টিগুণ হতে। বর্তমান সময়ে জাম গাছ লাগিয়ে প্রাচীন এ ফলটি রক্ষা করা এখন সময়ের দাবী বলে মনে করছেন সমালোচকেরা।

Tag :

রিফায়েতপুর যুব সংঘ ক্লাব পরিদর্শন করলেন শরীফ উদ্দিন জুয়েল 

পাকা জামের মধুর রসে মুখ আর রঙ্গীন হয় না: বিলুপ্তের পথে কালো জাম

আপডেট টাইম : ০৬:২৩:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ জুন ২০২১

মো.আককাস আলী, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি: কবির ভাষায়, “পাকা
জামের মধুর রসে রঙ্গীন করি মুখ”। মধুমাস চললেও খোকা-খুকিদের মুখে
রঙ্গীন রসের চিহৃ দেখা যায় না। কবির কাব্য বিলুপ্তের পথে। মেলে না কালো
জামের দেখা। এক সময় মানুষ জাম গাছ তলায় যেত না কালো রসের ভয়ে। চলছে মধুমাস, এ মধুমাসে নানান প্রজাতির ফল-ফলাদি দেখা যায় আমাদের দেশে।

এই মধুমাসে আম-জাম-কাঁঠালের মিষ্টি রসে যেন প্রাণ জুড়িয়ে যায়। এর
মাঝে অন্যতম ফল হলো কালো জাম। পরম উপকারী এই কালো জাম ফলটি সকল শ্রেণীর মানুষের কাছে সমাদৃত। এই ফলটি নানান দেশে নানান নামে পরিচিত যেমন, জাম্বুল, জাম্বু, জামুল, কালোজাম ইত্যাদি। কিন্তু বর্তমানে নওগাঁ জেলায় সময়ের পরিক্রমায় হারিয়ে যেতে বসেছে জামগাছ।

অন্যান্য সব ফলের তুলনায় জামের স্থায়ীত্বকাল কম হলেও এটি পুষ্টিগুণে অতুলনীয়। ফলের স্বাদে মাসের নাম ফলাও হয়ে ঘুরতে থাকে মানুষের মুখে মুখে। তাইতো জৈষ্ঠ্য মাসকে মধুমাস হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এ মাসে হরেক রকমের ফল যেমন, আম, কাঁঠাল, লিচু, ডেফয়া, লটকন, কালো জাম,জামরুল, আতাফল, কাউ, শরীফাসহ নানা ফল পাকতে শুরু করে। মধুর স্বাদের ফল পাওয়া যায়।

শুধু ফল নয় জাম গাছ তীব্র রোদে পশুপাখি ও মানুষদের স্নিগ্ধছায়া দান করে। জাম গাছের কাঠ দিয়ে তৈরী হতো বাহারী সব আসবাব পত্র। সম্প্রতিকালে নওগাঁর বিভিন্ন জায়গায় এই জাম গাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে। আগে বিভিন্ন রাস্তায়, মহাসড়কে, বাড়ির আঙ্গিনায়, পুকুর পাড়ে হামেশাই দেখা মিলতো জাম গাছের।

কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় এখন জাম গাছ রোপণ না করায় গাছের
সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। বিগত দিনগুলোতে কিছু মানুষ জাম বিক্রি
করে নিত্য দিনের আয় করতেন। নওগাঁ জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে কালোজাম বিক্রি হচ্ছে চডাদামে। কিন্ত বর্তমানে গাছের পরিমাণ কমে যাওয়ার ফলে বাজারে এক কেজি কালো জাম বিক্রি হচ্ছে ১শ’ থেকে দেড়শ টাকায়।

যুক্তরাজ্যের ‘বøাককারেন্ট ফাউন্ডেশ’ এর মতে জামে প্রচুর পরিমানে
ভিটামিন সি থাকে। এটি একটি অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি উপাদান যা মানবদেহ
নিজ থেকে উৎপাদন করতে পারে না। তাছাড়া শরীর থেকে দ্রত ভিটামিন সি বের হয়ে যায় এবং দেহ এটি সংরক্ষন করতে পারে না।

ফাউন্ডেশনের তালিকা অনুযায়ী, ভিটামিন সি দেহের কোষের স্বাস্থ্য ভালো রাখে, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ঠান্ডা দূর করে, স্মৃতি উন্নত করে এবং চোখের লেন্স’ য়ে প্রোটিনের ক্ষয় দূর করে ছানি পড়া রোধ করে। সময়ের পরিবর্তনে জেলায় চাষীরা নানাবিধ ফল ফলাদি চাষ করছেন।

যার চাপে পড়ে হারিয়ে যাচ্ছে পুরনো দিনের জামগাছগুলো। যার ফলে একদিকে যেমন হারাতে বসেছে জামগাছ অপরদিকে মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে একটি অত্যাবশকীয় পুষ্টিগুণ হতে। বর্তমান সময়ে জাম গাছ লাগিয়ে প্রাচীন এ ফলটি রক্ষা করা এখন সময়ের দাবী বলে মনে করছেন সমালোচকেরা।