রাজশাহী ব্যুরোঃ সারাদেশে তৃতীয় ধাপের নির্বাচন আগামী ২৮ নভেম্বর। এই নির্বাচনকে সুষ্ঠ ও সফল করতে নির্বাচন কমিশনের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেয়া থাকলেও সেই নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে নিয়মবহির্ভূত ভাবে অশালীন ও উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন রাজশাহী ৩ আসন অর্থাৎ মোহনপুর উপজেলার ৪ নং মৌগাছী ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আল-আমীন বিশ্বাস।
তার উস্কানিমূলক বক্তব্যটি এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল। এই নিয়ে চরম সমালোচনার মুখে আগামী নির্বাচন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১৯ নভেম্বর উপজেলার মৌগাছী ইউনিয়নের বেড়াবাড়ি গ্রামে বিকাল ৪ ঘটিকায় নৌকার জনসভায় আল-আমিন বিশ্বাস তার বক্তব্যে বলেন, বিএনপি মাঠে নাই সতন্ত্র প্রার্থীর কোন দাম আছে? আওয়ামি লীগ সরকার জানে এমপি আয়েন জানে ভোট কিভাবে করতে হয়।
এই আল-বিশ্বাসও জানে ভোট কিভাবে করতে হয়। যদি নৌকায় ভোট দিতে কষ্ট হয়, তাহলে ভোটের মাঠে আসার দরকার নাই। তার এমন বক্তব্য ঐ নির্বাচনী এলাকার মানুষের মাঝে বিরূপ মন্তব্যের সৃষ্টি হয়েছে। এতে সকলের ধারনা ভোট সুষ্ঠ হচ্ছেনা। পরে মিডিয়া কর্মীর একটি টিম অনুসন্ধানে জানতে পারে এই আল-আমীন বিশ্বাসের আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার কাহিনি।
মাত্র দেড় লক্ষ টাকার সম্পদ নিয়ে ২০১৬ সালে নির্বাচনে আসে আল-বিশ্বাস। দলীয় নৌকার বদৌলতে ক্ষমতার চেরাগ গুনে চেয়ারম্যান বনে যান তিনি। এরপর তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করতে একটু পিছু পাঁ হননি। প্রকল্পের টাকা আত্নসাৎ, ক্ষমতার দাপটে অবৈধ পুকুর খনন, মৌগাছী বাজারে সরকারের জমিতে দোকানঘর তৈরি করে বিক্রয়সহ নানা অপকর্মে লিপ্ত হয়ে পড়ে।
তিনি সবচেয়ে বড় সমালোচনার মুখে রয়েছেন নেশার কারনে। কারন তার একদিন নেশা না করলে দিন শুদ্ধ হয়না। এই দুর্নীতিবাজ ও মাদকাশক্ত ব্যক্তিকে নৌকার দ্বায়িত্ব দেয়া নিয়েও চরম ক্ষোভ রয়েছে তৃনমুলে। তবুও নৌকা বলে কথা। দিন রাত ঘুম কামায় করে নৌকার জয়ের জন্য পরিশ্রম করছেন তৃনমুল নেতা কর্মীরা।
এই নিয়ে তৃনমুল নেতাকর্মীদের সাথে কথা বললে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতা কর্মী বলেন, এই আল-আমীন বিশ্বাস চেয়ারম্যান হওয়ার পর যে দুর্নীতি করেছে তা বলে শেষ হবেনা। এর মধ্যে মৌগাছী বাজারে ২১ টি দোকান বানিয়ে প্রতি দোকান তিন লক্ষ টাকায় বিক্রি করেছে। মানুষের জমি জবরদখল করে পুকুর কেটেছে।
কয়েকটি মাইক্রোবাস কিনেছে। সরকারের প্রকল্পের টাকা আত্নসাৎ করেছে যেটা মিডিয়ায় প্রকাশ হয়েছে। এত অল্প সময়ে তার কোটিপতি হওয়াতে বলে দেয়, সে দুর্নীতি করেছে। তার পরও আমরা দলকে ভালবেসে নৌকার পক্ষে কাজ করছি। অথচ তিনি (আল-আমীন) নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে অশালীন ও উষ্কানিমুলক বক্তব্য দিচ্ছে।
আমরা তাকে সাবধান করেছি যেন তিনি আর কোন বাজে বক্তব্য না দেয়। তবে আল-আমীন বিশ্বাসের এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে চরম শঙ্কিত ও আস্থাহীনতায় পড়েছে চশমা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী করা সতন্ত্র প্রার্থী আবুল হোসেন খান। আবুল হোসেন খান বলেন, আমার নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা দিচ্ছে আল-আমীনের সমর্থকরা।
আমার পোষ্টার ছিড়ে ফেলা হচ্ছে। সে আমার সমর্থকদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এমন আমার পুলিং এজেন্টদের মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে, আমার ভোটের মাঠে পুলিং এজেন্ট থাকতে চাচ্ছে না। এবিষয়ে মোহনপুর থানার অফিসার ইনচার্জ তৌহিদুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি প্রতিবেদককে জানান, আমার এলাকায় কেউ জবরদস্তি করে ভোট দিতে পারবেনা।
কেউ এধরনের কাজ করার চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর নির্বাচনী প্রচার প্রচারণার বিষয়টি নির্বাচন কমিশন দেখবে। মৌগাছী ইউনিয়নে সতন্ত্র প্রার্থী একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে, আমরা তদন্ত করে দেখছি।