মেহেরপুর জেলার সদর থানাধীন গোভীপুর (দত্তপাড়া) সাকিনস্থ বাদী মোঃ মনিরুল ইসলাম এর পুত্র ভিকটিম মোঃ রকিবুজ্জামান রিপন (৩০) এর সাথে মামলার ১নং বিবাদী মোছাঃ শ্যামলী খাতুনের বিবাহ হয়। বিবাহের প্রায় ছয়মাস পর হতে ভিকটিম তার শশুর বাড়িতে ঘর জামাই হিসাবে বসবাস শুরু করে এবং তাদের সংসারে একটি পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহন করে।
কিছুদিন পর রিপন এর সংসারে দাম্পত্য কলহ শুরু হলে বাদী তার ছেলে রিপনের কোন খোজ খবর না পাওয়ায় তার ছেলেকে হত্যা পূর্বক লাশ গুম করে ফেলার ধারনার বশবর্তী হয়ে রিপনের স্ত্রী, শশুর, শাশুড়ি এবং চাচা শশুরের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ দীর্ঘ দিন তদন্ত করে রিপনকে জীবিত অথবা মৃত কোন ভাবেই উদ্ধার করতে না পেরে বিজ্ঞ আদালতে চুড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করেন।
পরবর্তীতে বিজ্ঞ আদালত থানা পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহন না করে পুলিশ সুপার, পিবিআই, কুষ্টিয়াকে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) প্রধান জনাব বনজ কুমার মজুমদার বিপিএম (বার), পিপিএম, অ্যাডিশনাল আইজিপি, বাংলাদেশ পুলিশ এর প্রত্যক্ষ তত্ত্ববধান ও দিক নির্দেশনায় পিবিআই, কুষ্টিয়া জেলার পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মোঃ মনিরুজ্জামানসহ একটি আভিযানিক দল গত ২০/০২/২০২২ খ্রিঃ
তারিখ বিকাল ১৭.৩৫ ঘটিকায় গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানাধীন রাজেন্দ্রপুর এলাকায় ডার্ড কম্পোজিট টেক্সটাইল লিমিটেড এর সামনে রাস্তার উপর থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভিকটিম রিপনকে উদ্ধার পূর্বক তার জবানবন্দী গ্রহণের জন্য বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করেন। পরবর্তী আইন গত ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ভিকটিম রকিবুজ্জামান রিপন (৩০) ২০১৭ সালের জুলাই মাসের ০৮ তারিখে অভিমান করে পিতা-মাতা, ভাই -বোন, স্ত্রী, পুত্র আত্মীয়স্বজন ফেলে বাড়ী থেকে নিরুদ্দেশ হয়। ভিকটিম
মোঃ রকিবুজ্জামান রিপন, মোঃ শরিফুল ইসলাম (জন্ম তারিখ- ২৩/০৬/১৯৯৪ খ্রিঃ), পিং- শহিদুল ইসলাম, মাতা – বেদানা বেগম, সাং- গোভিপুর, থানা ও জেলা- মেহেরপুর পরিচয় ধারণ করে আত্মগোপনে ছিল।
তাকে উদ্ধারপূর্বক জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে তার সঠিক নাম পরিচয় প্রকাশ করে। ভিকটিম রিপন কৌশলে মোঃ শরিফুল ইসলাম ছদ্ম নাম ধারন করে গত ১০/০৩/২০২০ খ্রিঃ তারিখ জনৈকা মোছাঃ শিমলা আক্তার (২০), পিং- মোঃ সিরাজুল ইসলাম, মাতা- মোছাঃ রোশনা বেগম (সাথী), সাং- মনমথ কুঠিপাড়া, থানা- সুন্দরগঞ্জ, জেলা- গাইবান্ধা এর সাথে জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী থানার পৌরসভা কাজী অফিসে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। তাদের ০৬ মাস বয়সের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।
এছাড়া উক্ত ভিকটিম মোঃ শরিফুল ইসলাম ছদ্ম নাম ব্যবহার করে টেকনিশিয়ান (ইলেকট্রিক্যাল) পদে ডার্ড কম্পোজিট টেক্সটাইল লিমিটেড এ চাকুরী করতো মর্মে জানা যায়।
দীর্ঘ পাঁচ বছর পর ভিকটিম রিপনকে জীবিত ও সূস্থ্য উদ্ধারের এই ঘটনায় তার ও আসামীদের পরিবারে স্বস্তির নিশ্বাস বইতে শুরু করেছে। আসামীরা মিথ্যা খুন মামলা ও লাশ গুমের মামলা থেকে হাফ ছেড়ে বেঁচেছে এবং বাদী তার কোলে পুত্রকে ফিরে পেয়ে খুশি হয়েছেন।