কাজি মোস্তফা রুমি স্টাফ রিপোর্টার: ঢাকার এক খামারের মালিক দুধর্ষ ডাকাত সর্দারসহ গরু ডাকাতদলের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। এসময় ডাকাতি করা ৪১টি গরুসহ গরু বিক্রির টাকা এবং ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত একটি ট্রাক জব্দ করা হয়েছে। গরুর খামারের ব্যবসার আড়ালে তারা গরু ডাকাতি করে বিক্রি করতো। মঙ্গলবার জিএমপি’র উপ পুলিশ কমিশনার জাকির হাসান সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- টাঙ্গাইলের নাগরপুর থানার পাইশানা এলাকার মৃত পানু চানু বাদ্যকরের ছেলে খামারের মালিক ডাকাত সর্দার মরন দাস ওরফে সুমন ওরফে তাপস (৩৫), রংপুরের কাউনিয়া থানার নিজপাড়া এলাকার ফজলুল হকের ছেলে আসাদুজ্জামান বাবু (৩০), মানিকগঞ্জের দৌলতপুর থানার বাগুটিয়া চরকাটারিপাড়া এলাকার সুকচান মোল্লার ছেলে শহিদুল ইসলাম (৪০), বগুড়ার ধনুট থানার বামন নগর এলাকার মৃত রাজিব জামানের ছেলে আব্দুল মালেক (৪০), টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার বাগুটিয়া এলাকার মৃত প্রদীপ রাজবংশীর ছেলে দূর্জয় রাজবংশী জাইল্লা (২৮), ঢাকার আগুলিয়া থানার চাকোলগ্রাম এলাকার আব্দুল করিম সদ্দারের ছেলে আল-আমীন (২৯)। গ্রেফতারকৃতরা গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুর. বাংলাবাজার ও ঢাকার আশুলিয়া এলাকায় বসবাস করত।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি’র) উপ পুলিশ কমিশনার জাকির হাসান জানান, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বিকেলে দিনাজপুরের আমবাড়ী হাট থেকে সাতটি গাভী, দুইটি বকনা বাছুর ও পাঁচটি ষাঁড়সহ মোট ১৪ টি গরু কিনে ট্রাকে করে ফিরছিলেন কুমিল্লার ব্যবসায়ী ছাদেক (৫৮) ও তার ছেলে রাকিব (২২)।
পথে রাত দেড়টার দিকে টাঙ্গাইল-ঢাকা মহাসড়কে গাজীপুরের কাশিমপুর থানার মোজারমিল এলাকায় পৌঁছলে একটি মাইক্রোবাস এসে গরুবাহী ওই ট্রাকের গতিরোধ করে। পরে ৭/৮ জন যুবক মাইক্রোবাস থেকে লাঠি নিয়ে বের হয়ে ট্রাকের নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং ছাদেক ও রাকিবকে চোখ-মুখ, হাত-পা বেঁধে মাইক্রোবাসে তুলে নেয়।
পরে সাভারের গেণ্ডা এলাকায় গিয়ে গরুগুলো ডাকাতদের ট্রাকে তুলে নেয় এবং বাবা ছেলেকে তাদের ভাড়া করা ট্রাকে ফেলে রেখে ডাকাতরা পালিয়ে যায়। এ ব্যাপারে কাশিমপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দীপংকর রায় সহ থানার কয়েক কর্মকর্তার সমন্বয়ে গঠিত যৌথ টিম মামলার তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে।
পুলিশ কর্মকর্তা আরো জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ভোররাতে জিরানী বাজার হতে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি ট্রাক জব্দ করা হয়। এ সময় ট্রাকের সহযোগী রাজ্জাক দৌড়ে পালিয়ে গেলেও ডাকাত সর্দার সুমনকে পুলিশ আটক করতে সক্ষম হয়।
পরে সুমন জিজ্ঞাসাবাদে জানায় আশুলিয়ার দক্ষিন নাল্লাপপাল্লা গ্রামে তার একটি গরুর খামার রয়েছে। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে তদন্তকারী দল ওই খামারে অভিযান চালিয়ে চারটি গাভী, দুটি বকনা বাছুর, ৩৫টি ষাঁড়সহ মোট ৪১টি পশু ওই খামারে পায়। এসব পশু ক্রয়ের প্রয়োজনীর কাগজপত্র সুমন দেখাতে পারে নি।
এক পর্যায়ে মামলার বাদীকে জানানো হলে তিনি তার ক্রয় করা চারটি গাভী, দুইটি বাছুর এবং পাঁচটি ষাঁড়সহ ১১টি গরু সনাক্ত করেন। পরে সুমনের বাসায় অভিযান চালিয়ে ডাকাতির গরু বিক্রির নগদ ১ লাখ ৬১ হাজার ৭৫০টাকা জব্দ এবং তার দেয়া তথ্যে অপর ৫ ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়। গরুর খামারের ব্যবসার আড়ালে তারা গরু ডাকাতি করে বিক্রি করতো।
তিনি আরো জানান, ডাকাতির গরু আটকের খবর পেয়ে জিএমপির গাছা থানার চারটি গরু চুরি যাওয়া মামলার বাদী বগুড়ার আসাদ ওই খামারে গিয়ে তার চুরি হওয়া ৪টি গরু থেকে দুটি গরু সনাক্ত করেন।