বগুড়ায় অপহরণ চক্রের দুই সদস্য গ্রেফতার
(বগুড়া) প্রতিনিধি: লিবিয়া প্রবাসী বগুড়ার পাপ্পু ও সাইদ খন্দকার দুই ভাইকে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে অপহরণ করে দেশে পরিবারের কাছে চাঁদা আদায় ও হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। এছাড়াও তাদের কাছ থেকে মুক্তিপণের ১ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন, জেলার সোনাতলা উপজেলার শিহিপুর এলাকার আয়েন উদ্দিনের ছেলে পান্নু মিয়া (৩৫) ও একই উপজেলার নওদাবাগা এলাকার মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে শিপলু সরকার (৪০)। গত
মঙ্গলবার (২ জুলাই) বেলা ১২ টায় বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার) স্নিগ্ধ আখতার।
পুলিশের জানান পান্নুর ভাই লিবিয়া প্রবাসী পায়েল অপহণ করে মুক্তিপণ আদায় চক্রের সক্রিয় সদস্য।
এর আগে গত ৮ জুন ওই ঘটনায় জড়িত দুই আসামীকে বগুড়ার দুপচাঁচিয়া হতে গ্রেপ্তার এবং জিম্মি হওয়া দুই ভাইয়ের মধ্যে একজনকে উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরো জানান, গত ৮ জুন বগুড়ার দুপচাঁচিয়া থানায় মানব পাচার দমন ও প্রতিরোধ আইনে একটি মামলা দায়ের করেন ওই উপজেলার বাসিন্দা রাব্বী খন্দকার। তিনি অভিযোগ করেন- তার দুই ভাই পাপ্পু খন্দকার ও সাঈদ খন্দকারকে ভালো বেতনে লিবিয়ায় চাকরি দেওয়া প্রলোভন দেন উপজেলা সদরের বাসস্ট্যাণ্ড এলাকার মোন্তাহা স্টোরের সত্ত্বাধিকারি উজ্জল হোসেন। পরে তার কথা মতো ১১ লাখ টাকা দিয়ে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর পাপ্পু খন্দকারকে এবং চলতি বছরের গত ১৭ জানুয়ারি সাঈদ খন্দকারকে লিবিয়ায় পাঠিয়ে দেয়। লিবিয়ায় অবস্থানরত উজ্জলের পূর্ব পরিচিত সাব্বির হোসেন ওই দুই জনকে লিবিয়ার হাসপাতালে চাকরি পাইয়ে দেওয়া কথা ছিলো। লিবিয়ায় পৌঁছার পর ওই দুই ভাইকে কোন চাকরি না দিয়ে বসিয়ে রাখে সাব্বির। পরে চাকরির ব্যবস্থা হয়েছে বলে গত ২৫ মার্চ তাদের দুই ভাইকে পৃথক দুই শহরে নিয়ে আটকে রাখে। এরপর তাদের মাধ্যমে পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। তিনি আরও জানানওই ঘটনায় ৮ জুন মামলা দায়েরের পরপরই ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে উজ্জল হোসেন(৩৫) ও সফাত মণ্ডল(৩২) নামের দু’জনকে আটক করে। তাদের আটকের পর সাঈদ খন্দকারকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। গত ২৩ জুন সাঈদকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। কিন্তু ওই চক্রের হাতে আটক আপর ভাইয়ের কোন সন্ধান মিলছিলো না। সম্প্রতি অপহরণকারি চক্র পাপ্পু খন্দকারকে মুক্তি দিতে ৪ লাখ টাকা দাবি করে যোগাযোগ করে। এজন্য তারা ডাচ-বাংলা ব্যাংকের একটি একাউন্ট নম্বর দেয়। বাদি ওই নম্বরে এক লাখ টাকা নেওয়ার পর অবশিষ্ট টাকা দিতে চাপ দেয় ওই চক্র। তখন পুলিশের পরামর্শে নগদ টাকা দিতে সম্মত হয় পাপ্পুর পরিবার। গত সোমবার সন্ধ্যায় সেই টাকা নিতে এলে পুলিশের হাতে আটক হয় সোনাতলা উপজেলার পান্নু ও শিপলু। তাদের মাধ্যমে যোগাযোগ করে পরে অপহৃত পাপ্পুকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়। তিনি আরো জানান দ্রুতই পাপ্পু খন্দকারকে দেশে ফিরিয়ে নিতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া পাপ্পুর ভাইয়ের দায়ের করা মামলায় আটক পান্নু ও শিপলুকে বগুড়া কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে বলে বলেও তিনি জানান।