রাজশাহী ব্যুরো: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অংশ হিসেবে এক দফা এক দাবীতে উত্তপ্ত পুরো রাজশাহী। তবে মহানগরীর চেয়ে ভয়াবহ অবস্থা দেখা গেছে রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায়। সেখানে আন্দোলনকারিদের তান্ডবে নির্বাক ভুমিকা পালন করেছে মোহনপুর থানা পুলিশ।

রবিবার (৪ আগষ্ট) সকাল থেকে মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে জড়ো হতে থাকে আন্দোলনকারিরা। তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে ঘি ঢাললে ক্ষিপ্ত হয় তারা। অর্থাৎ আওয়ামী লীগের কর্মী সমর্থকরা আন্দোলনকারিদের বাধা দিলে ফুসে ওঠে আন্দোলনকারিরা। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। পরে আন্দোলনকারিরা পিকেটিং করতে করতে উপজেলা চত্বরে উপস্থিত হয়ে আওয়ামীলীগের দলীয় পার্টি অফিসে ভাংচুর  চালায় এবং অগ্নিসংযোগ করে। এসময় মাঠ ছেড়ে পালিয়ে যায় আওয়ামী সমর্থকরা। এতে আন্দোলনকারীদের ভাংচুরে পার্টি অফিসের কোনকিছুর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। এরপর তারা থানায় হামলা চালায়। এসময় থানার ভিতরে বিভিন্ন স্থানে আগুন ধরিয়ে দেয় আন্দোলনকারিরা। থানায় থাকা পুলিশের (ওসি) গাড়ি, ৯৯৯ জাতীয় জরুরি সেবা গাড়ি, সার্কেল এসপি’র গাড়ি ও ৭০-৮০ টি মটর সাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। আন্দোলনকারিদের তান্ডবে ছাড় পায়নি উপজেলা ভূমি অফিস।  সেখানেও ভাংচুর করে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এতে এসিল্যান্ডের গাড়ি ও ৪টি মটর সাইকেল পোড়ানো হয়েছে। আন্দোলনকারিদের ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ছবি তুলতে গিয়ে   আহত হয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা। সাংবাদিকদের দাবি, এখানে আন্দোলনকারিরা তাদেরকে মারধর করে, তাদের হাত থাকা স্মার্টফোন কেড়ে নিয়েছে।

এব্যাপারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে মোহনপুর থানার একাধিক পুলিশ সদস্যরা জানান, সকাল থেকে আন্দোলনকারিরা অসহযোগ আন্দোলনের জন্য বিক্ষোভ করছিল। এমন সময় হঠাৎ ২-৩ হাজার জনতা থানার ভিতরে প্রবেশ করে। এরপর থানার ভিতরে থাকা সকল গাড়ি ভাংচুর করে এবং পুড়িয়ে দেয়। এসময় থানা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদস্যরা জানান, পুলিশ নিরব ভূমিকা পালন করেছে। এদিকে থানা ও অন্যান্য জায়গায় অগুনের ঘটনা ঘটলেও আসেনি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের অনুপস্থিত দেখে আমজনতার মনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর তান্ডবের ব্যাপারে মোহনপুর থানার অফিসার ইনচার্জ হরিদাস মন্ডলের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমাদের আলফা ৩ (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ক্রাইম এন্ড অপস) স্যার এসেছেন, তিনি এলাকাগুলো পরিদর্শন করছেন,  তিনিই তথ্য দিবেন। পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খাইরুল আলমের এর সাথে কথা বললে তিনি পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্রের সাথে কথা বলতে বলেন। তার নিকট থেকে তথ্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনাদের যা ইচ্ছা তাই লিখেন। এরপর পর মিডিয়ার কাছে খবর আসে কেশরহাট পৌরসভায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা। সেখানে বিক্ষুদ্ধ আন্দোলনকারিরা রাস্তার উপরে ১শত গজ পর পর কাঠেরগুড়ি ফেলে ও আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। পরে দেখা গেছে কেশরহাট পৌরসভার ভবন থেকে বিকট আকৃতি কালো ধোঁয়া বের হচ্ছে কিন্তু যাওয়ার উপায় নাই।  বিক্ষুদ্ধ আন্দোলনকারিরা মিডিয়া কর্মীকেউ ভিড়তে দেয়নি সেখানে। সেখানে ডেইুল নিউজবাংলা’র ব্যুরো প্রধান মাজহারুল ইসলাম চপল বিক্ষোভকারিদের সাথে কথা বলতে গেলেও তাদেরকে অপমান করে বিদায় করে দিয়েছে।