ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক , আপলোডের সময় : মঙ্গলবার, ২ নভেম্বর, ২০২১ , আজকের সময় : শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪

দৌলতপুরে ১বিঘা “ফাতেমা” ধান চাষে সাংবাদিক ফরিদের ভাগ্যবদল

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে নতুন জাতের ফাতেমা ধানের আবাদ করে মাত্র এক বিঘা জমিতে ৫০ মন ধান ঘরে তুলে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার কৃষক ফরিদ আহমেদ। গত বছর কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার এক কৃষক উচ্চ ফলনশীল এ নতুন জাতের ধানের উদ্ভাবন করেন, উদ্ভাবিত নতুন ধানের জাত তিনি তার নিজের মেয়ের নামে নাম রেখেছেন “ফাতেমা” ধান।

যা এবছর দৌলতপুরে চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন। অনেক দূর থেকেও অনেকে আসছেন এই ধানের বীজ সংগ্রহ করতে। সেইসঙ্গে কৃষিবিভাগও এই ধান সংগ্রহ করে গবেষণার জন্য পাঠিয়েছে।

ফরিদ আহমেদ কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মথরাপুর ইউনিয়নের গ্রামে সালিমপুর এলাকার বাসিন্দা। পেশায় তিনি একজন সাংবাদিক। সেইসঙ্গে আধুনিক চাষাবাদে রয়েছে তার ব্যাপক আগ্রহ। গতানুগতিক কৃষির পরিবর্তে তিনি নতুন ধানের চাষ করে এ সাফল্য দেখিয়েছেন। তার দেখা দেখি এলাকার অন্য কৃষকরাও এখন নতুন এ জাতের ধান চাষের জন্য আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

কৃষক ফরিদ আহমেদ বলেন, গত বছর মিরপুর উপজেলার এক কৃষকের উদ্ভাবিত ফাতেমা ধান চাষে সাফল্য শিরোনামে পত্রিকায় খবর প্রকাশ হলে আমার আগ্রহ জাগে এই ফাতেমা ধান চাষে । সেখান থেকে উচ্চমূলে ধানের বীজ সংগ্রহ করে এবছর ১বিঘা জমিতে এই ধান চাষ করে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছি।

তিনি আরো বলেন, আমি চাই সরকার এই ধান সংগ্রহ করে আরো উন্নত করে কৃষকদের কাছে পৌঁছে দিক। এছাড়া আমি এলাকায় কৃষকদের এ ধান চাষ করার পরামর্শ দিচ্ছি। এলাকার কৃষকরা আমার ধান চাষে সাফল্য দেখে প্রতিদিন আমার বাড়ীতে ভীড় জমাচ্ছে এই নতুন জাতের ধানের বীজ নেওয়ার জন্য। আশাকরি এই এই মৌসুমে ফাতেমা ধানের বীজ বিক্রি করে প্রায় ২লক্ষ৫০হাজার টাকা বাড়তি আয় হবে। আমরা যে সব ধান চাষ করি তার তুলনায় এ ধান তিনগুণ ফলন বেশি হয়।

একই এলাকার সায়েমুদ্দিন বলেন,এলাকার মানুষের কথা শুনে আমি এই ধান দেখতে এসেছি। এসে খুবই ভালো লেগেছে। আমি ২বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের ধানের আবাদ করেছি। তবে আমার দুই বিঘাতে যে ধান হয়েছে। তার চেয়ে ফরিদ আহমেদ’র “ফাতেমা” ধান এক বিঘাতে বেশি হয়েছে। আগামীতে আমি এই ধানের চাষ করবো কারণ এটার ফলন অনেক বেশি।

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল খালেক জানান, সাধারণত প্রতিটি ধানের শীষে ১৫০-১৬০টি করে ধান থাকে। কিন্তু ফাতেমা ধানের প্রতিটি শীষে ৭০০-৭৫০টি করে দানা হয়েছে। ধানের ফলন বিঘাপ্রতি ৪০-৫০ মণ হতে পারে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর বোরো মৌসুমে ১ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড, ৭ হাজার ৭৮০ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতের ধান চাষ করা হয়েছে। হেক্টর প্রতি গড় ফলন হয়েছে হাইব্রিড ৭ দশমিক ৮ মেট্রিকটন এবং উফশী হেক্টরপ্রতি ৫ দশমিক ৮ মেট্রিকটন।

দৌলতপুর উপজেলা উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল খালেক জানান, কৃষক ফরিদ আহমেদ ফাতেমা ধানের বীজ সংগ্রহ করে ১বিঘা জমিতে চাষ করে সফলতা অর্জন করেছে। আমরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে কৃষকদের আধুনিক ধান চাষে উদ্বুদ্ধ এবং প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছি। আমরা কৃষক ফরিদ আহমেদ এর নিকট থেকে ধানের নমুনা সংগ্রহ করেছি। সেইসঙ্গে আগামীতে এ ধানের বিস্তার লাভ করবে বলে আশাকরছি।