ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক , আপলোডের সময় : মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৭ , আজকের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

আরব সভ্যতা টিকবে না : আদোনিস

আরব সভ্যতা টিকবে না কারণ বিশ্ব সভ্যতায় এর কোনো অবদান নেই এমন মন্তব্য করেছেন আরবের আধুনিক সাহিত্যধারার অন্যতম কবি আদোনিস। বৃহস্পতিবার ঢাকা লিট ফেস্টে অংশ নিয়ে একথা বলেন তিনি।

বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে ‘আদোনিস উইথ কায়সার হক’ নামের এই সেশন সঞ্চালনা করেন সাহিত্যিক ও অনুবাদক কায়সার হক। এ সময় আদোনিস বক্তৃতা করেন ফরাসি ভাষায়। তাঁর বক্তব্য ফরাসি থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ করেন অধ্যাপক আশরাফুল হক চৌধুরী।

আলাপচারিতায় আদোনিস বলেন, কেবল তেল আর ব্যবসা দিয়ে কোনো সভ্যতা টিকে থাকতে পারে না। যেহেতু মানব সভ্যতায় আরবের বিশেষ কোনো অবদান নেই তাই এ সভ্যতা টিকবে না। আরব বসন্ত নিয়ে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করলেও বলেন, এটা আমেরিকারই তৈরি।

নিজে বামপন্থী এ কথা অকপটে স্বীকার করে আদোনিস বলেন, আমি সবসময় মানুষের পক্ষে। আমি বিশ্বাস করি মানুষ কখনও থেমে থাকবে না।

তরুণদের পাঠাভ্যাস নিয়েও বেশ আশাবাদী তিনি। তার মতে মানুষ আগের তুলনায় এখন অনেক বেশি বিষয় পড়ে। তারা পড়ছে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে। আদোনিস জানান, তাঁর দুই মা। এক মা প্রকৃতি অন্য মা কবিতা। পুরো পৃথিবীকে তিনি একটি ফুলের সঙ্গে তুলনা করেন আর কবিতাকে অভিহিত করেন এর সুগন্ধ হিসেবে।

যদিও প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি বলেন, মানুষ এখন সুগন্ধ না ফুলের প্রতিই বেশি আকৃষ্ট। যুক্তরাষ্ট্রকে পৃথিবীর সবচেয়ে আকর্ষণীয় ফুুল বলে আখ্যা দেন তিনি। এটা ক্ষমতা ও অর্থ দু’দিক থেকেই বিবেচনা করা যায় বলে জানান আদোনিস। তিনি বলেন, দরজা এখন খোলা, যেন এক রমণী দু-হাত বাড়িয়ে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে।

উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তর পর্বে দর্শকরা তাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। তাদের আবদার মেটাতে আদোনিস একটি ছোট্ট আরবি কবিতাও আবৃত্তি করে শোনান।

উল্লেখ্য, আদোনিস আসলে কবির ছদ্মনাম। তার মূল নাম আলী আহমেদ সাঈদ। তিনি যখন কবিতা লেখা শুরু করেন তখন সিরিয়ার বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সে সব ছাপানোর জন্য পাঠাতেন। কিন্তু সেগুলো ছাপা হতো না। গ্রিক দেবতা আদোনিস যেমন জন্তুদের আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন তেমনি তিনিও পত্রিকার সম্পাদকদের দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছিলেন! এজন্যই এ ছদ্মনাম ব্যবহার করেন তিনি।

এরপর তার কবিতাগুলো ছাপা হয়। যদিও পত্রিকার লোকজন তাকে সরাসরি দেখার পর আদোনিস বলে মানতে চাননি! তাই তাকে প্রমাণ করতে হয়েছে তিনিই আদোনিস।