ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক , আপলোডের সময় : সোমবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২১ , আজকের সময় : মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

দশমিনায় সন্তান বিক্রেতাকে অট্যোরিস্কা উপহার দিলেন জেলা প্রশাসক 

মোঃবেল্লাল হোসেন দশমিনা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর দশমিনায় অভাবের তাড়নায় সদ্য জন্ম নেয়া সন্তানকে বিক্রি করতে যাওয়া অসহায় সেই বাবা মো. আলম মৃধা (৬০) জেলা প্রশাসক কর্তৃক পেলেন অট্যোরিস্কা। ৫ নভেম্বর রোববার দুপুরে দশমিনা উপজেলায় মতবিনিময় সভা শেষে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন অটোরিক্সা প্রদান করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন,উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভুমি) আব্দুল কাইয়ূম, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দিন পালোয়ান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ডাঃ সামসুন্নাহার খাঁন ডলি, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি কাজী আবু কালাম, সাধারন সম্পাদক এ্যাড. ইকবাল মাহমুদ লিটন, কৃষি কর্মকর্তা মো. জাফর আহমেদ, প্রকৌশলী মো.মকবুল হোসেন ও শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিনসহ সরকারি কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ, গত ১১ নভেম্বর ” দৈনিক আজকের পত্রিকা” অভাবের তাড়নায় সন্তান বিক্রির সংবাদ প্রকাশ হলে জেলা প্রশাসকের নজরে আসে। যার পরিপ্রেক্ষিতে ভিক্ষুক কর্মসূচির অর্থায়নে এ অটোরিক্সা প্রদান করা হয়।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের নলখোলা বন্দরের মৃত কাদের মৃধার ছেলে মো. আলম মৃধা ৪৫ বছর আগে বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের চরহোসনাবাদ গ্রামের আনন্দ মেলা সিনেমা হল এলাকার জয়নাল হাওলাদারের মেয়ে চন্দ্রি বিবিকে বিয়ে করেন।

চন্দ্রি বিবি ২০ বছর আগে মারা যান। প্রথম স্ত্রীর সংসারে ৫ ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছেন বলে জানান তিনি। আলম মৃধা অভাবী হওয়ায় তিনি বিয়ের পর থেকেই স্ত্রীর বাড়িতে থাকতেন। প্রথম স্ত্রী চন্দ্রি বিবি মারা যাওয়ার ৭ বছর পর তিনি বহরমপুর ইউনিয়নের আদমপুর গ্রামের করিম হাওলাদারের মেয়ে হাওয়া বিবিকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন।

দ্বিতীয় স্ত্রী হাওয়া বিবি’র চার ছেলে ও একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন। আলম মৃধা এ প্রতিনিধি কে জানান, প্রথম স্ত্রীর ছেলেরা স্ত্রী-সন্তান নিয়ে অন্যত্রে বসবাস করেন। ওই ঘরের বারান্দায় ঠাই হয়েছে তার। ছেলের টানাটানির সংসারে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটান তিনি। অভাবের কারণে দ্বিতীয় ঘরের সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিতে পারছিলেন না। সবশেষ ৭নভেম্বর দ্বিতীয় স্ত্রী’র একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন।

সদ্য জন্ম নেয়া তার সন্তানটি মায়ের বুকের দুধ পান না। সন্তানকে দুধ কিনে খাওয়াবেন সেই সামর্থ তার নেই। এমনকি গাড়ী ভাড়ার টাকা না থাকায় ১০ কিলোমিটার দূরে শুশুর বাড়িতে গিয়ে প্রিয় নবজাতক সন্তানের মুখটি এখন পর্যন্ত দেখতে পারেননি।

আলম মৃধা আরও জানান, তিনি পরিচিত একজনের মাধ্যমে বান্দরবান জেলার এক দম্পত্তির খোঁজ পেয়েছেন। যারা তার সন্তানকে একটি অটোরিস্কার বিনিময়ে কিনে নিবেন। আলম মৃধার দাবি ওই গাড়িটি চালিয়ে রোজগার করে অন্য সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দেবেন। তার দাবি অভাবের কারনেই তিনি বাধ্য হয়ে প্রিয় সন্তানকে বিক্রি করতে যাচ্ছেছিলেন। পরে আর বিক্রি করতে পারেননি।

৫নভেম্বর দশমিনা উপজেলায় মতবিনিময় শেষে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন আলম মৃধার হাতে অট্যোরিস্কার চাবি ও অট্যোরিস্কা উপহার তুলেদেন।