খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলায় ২ মাস বয়সি মনি ও মুক্তা নামের দুই কন্যা শিশুর মরদেহ পুকুর থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ দিকে ১৮ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬ টার দিকে উপজেলার ছাগলাদাহ ইউনিয়নের কুশলা গ্রামের একটি পুকুরে ভাসমানরত অবস্থায় তাদের পাওয়া যায়।
বাড়ীটি ছিল নিহত শিশুদের নানা বাড়ী। তাদের নানার নাম খায়ের শেখ। নিহত শিশুদের বাবার নাম মাসুম বিল্লাহ। তাদের গ্রামের বাড়ী বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার গাংনী গ্রামে। মাসুম চাঁদপুরে একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন, ঘটনার রাতে তিনি গাংনীতে ছিলেন।
উক্ত বিষয়ে স্থানীয়রা জানায়, তেরখাদার কুশলা গ্রামে আবদুল খায়ের শেখ মেয়ে কণা খাতুনকে বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলা গাংনীর মাতারচর গ্রামের মাসুম বিল্লাহ্’র সাথে মুসলিম শরীয়াহ মোতাবেক বিয়ে দেন তিনি। দুই কণ্যা শিশুকে নিয়ে কয়েকদিন আগে বাবার বাড়ী বেড়াতে এসেছিলেন কণা খাতুন।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে দুই শিশুকে দুধ খাওয়ানোর পর ঘুমিয়ে পড়েন কণা খাতুন। ঘন্টাখানেক পর শিশুদের আর খুঁজে পাচ্ছিলেন না তিনি, তার ডাক-চিৎকারে ঘুম ভাঙে বাড়ীর অন্যদের। সে সময়ে স্বামী মাসুম বিল্লাহ্ শ্বশুরবাড়ীতে ছিলেন না। পরে অনেক খোঁজাখুজির পর শিশুদের লাশ পুকুরে ভাসতে দেখে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা।
তেরখাদা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি তদন্ত) মো: মাসুম কাজী বলেন, তেরখাদা উপজেলার ছাগলাদাহ ইউনিয়নের কুশলা গ্রামের খায়রুজ্জামানের কন্যা কনার সাথে মোল্লারহাট এলাকার মাসুম বিল্লাহর সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তাদের তেমন বনিবনা ছিল না। এরপর কনা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে তাকে তেরখাদার কুশলা গ্রামে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় স্বামী।
জন্মের পর জমজ শিশু মনি ও মুক্তা নানার বাড়িতেই থাকে। বাচ্চা দু’টি শুধু কান্নাকাটি করত। বৃহস্পতিবার রাত দু’টার দিকে বাচ্চা দু’টি কে খাইয়ে ঘুম পাড়ান কনা। রাতে তার ঘরের দরজা খোলা ছিল, রাত আড়াইটার দিকে কনা ঘুম ভাঙ্গে। খাটে বাচ্চা দু’টিকে আর পাওয়া যায়নি। পরে অনেক স্থানে খোঁজ নেওয়া হয়।
তারপর পুলিশকে জানান তারা। পুলিশ ওই রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে খোঁজ নেয়। উক্ত বিষয়ে পরবর্তীতে সকাল ছয়টার দিকে বাড়ির পাশের একটি পুকুরে বাচ্চা দু’টির লাশ ভাসমান অবস্থায় দেখতে পেয়ে নানী ফাতেমা বেগম ও মামা নুর আলম উদ্ধার করে। পরিবারের সকলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
খুলনার তেরখাদা থানার অফিসার ইনচার্জ মো: জহুরুল আলম বলেন, বাচ্চা দু’টি একই সঙ্গে মারা যাওয়ার বিষয়টি বেশ রহস্যজনক। উক্ত বিষয়ে পরিবারের লোকজনের ব্যবহার সন্দেহ জনক। বাচ্চা দু’টির বয়স দু’মাস ১১ দিন। তারা তো রাতে হেটে পুকুরে যায়নি। তাদের পুকুরে ফেলা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। কারও আচরণে সন্দেহ হলে তাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।