নূরুল হক, মণিরামপুর প্রতিনিধি: প্রভাবশালী কতিপয় ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মণিরামপুরের আহম্মদীয়া দাখিল মাদ্রাসার মাঠটি দীর্ঘদিন দখল করে বড় বড় কাঠের মজুদ করার অভিযোগ রয়েছে। ফলে একদিকে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত রয়েছে।
অন্যদিকে কাঠের মজুদের কারণে মাদ্রাসায় যাতায়াতে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অথচ এ ব্যাপারে প্রশাসন রয়েছে সম্পূর্ণ নির্বিকার।
জানাযায়, উপজেলার মশি^মগর ইউনিয়নের বেলতলা বাজারের পাশে আহম্মদীয়া দাখিল মাদ্রাসাটি অবস্থিত। মাদ্রাসাটিতে কয়েক শতাধীক শিক্ষার্থী রয়েছে।
মাদ্রাসার মাঝ দিয়ে বেলতলা-কেশবপুর ভায়া বেগমপুর পাকা (পিচ) সড়ক বিদ্যমাণ। সড়কের বাম পাশে এবেতেদায়ী ভবন এবং ডান পাশে দাখিল শাখার ভবন। গতকাল সোমবার বেলা ১১ টার দিকে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মাদ্রাসার প্রবেশদ্বারসহ সম্পূর্ণ মাঠটিতে বড় বড় কাঠের স্তুপ রয়েছে। কাঠের স্তুপ টপকিয়ে মাদ্রাসা ভবনে গিয়ে কথা হয় মাদ্রাসার বিভিন্ন শিক্ষার্থী নাসিম ইকবাল, তাসমিয়া খাতুন, আবদুর রহমান, আছিয়া খাতুন, শিল্পী খাতুনসহ অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীদের সাথে।
তারা অত্যন্ত ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, প্রায় ২ বছর যাবত মাদ্রাসার প্রবেশদ্বারসহ মাঠটিতে বড় বড় কাঠের গুড়ি রাখায় তারা খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। এছাড়াও প্রবেশদ্বারের কাঠেরগুড়ি থাকায় মাদ্রাসায় আসা-যাওয়া করা দুরূহ হয়ে পড়েছে। সহসুপার ইসমাইল হোসেন, সহকারি শিক্ষক আবদুর রশিদ, হালিমা সুলতানা, আইসিটি শিক্ষক নুরুন্নাহার, এবতেদায়ী প্রধান মাহাবুবুর রহমানসহ অন্য শিক্ষকরা জানান, দীর্ঘদিন কাঠের মজুদের কারনে মাদ্রাসার কার্যক্রম চরমভাবে ব্যহত হচ্ছে।
এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে বার বার বলা সত্তে¡ও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অভিযোগ রয়েছে প্রায় দুই বছর যাবত এলাকার প্রভাবশালী ব্যবসায়ী জহুরুল ইসলাম, ইসাহাক আলী, লুৎফর রহমান, আইয়ুব হোসেনসহ ৬/৭ জন মাদ্রাসার মাঠটি দখল করে কাঠের মজুদ করেছে। এর মধ্যে মোবাইল
ফোনে কথা হয় ব্যবসায়ী জহুরুল ইসলামের সাথে।
শিঘ্রই কাঠ সরিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে তিনি জানান, করোনার সময়ে মাদ্রাসা বন্ধ থাকায় সুপার ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে মৌখিকভাবে জানিয়ে তিনি কাঠ রেখেছেন। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে সুপার আবদুস সামাদ ও ম্যানেজিং কমিটির (এডহক) সভাপতি তরিকুল ইসলাম জানান, স্থানীয়ভাবে দলাদলি থাকায় ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি।
তবে মাঠ থেকে কাঠ সরিয়ে নিতে কাঠের মালিকদের ইতিমধ্যে নোটিশ করা হয়েছে। মশি^মনগর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন জানান, কাঠ অপসারনের জন্য বার বার তাগিদ দেওয়া হলেও ব্যবসায়ীরা কোন কর্ণপাত করেননি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র সরকার
জানান, বিষয়টি তাকে কেউ অবহিত করেননি। তবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ জাকির হাসান জানান, এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করা হলে তিনি দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহন করবেন।