রাজশাহী ব্যুরোঃ রাজশাহীতে মাশোহারার ফাঁদে অসহায় শ্রমিকরা। দীর্ঘদিন থেকেই মাশোহারা নামের অবৈধ্য সুবিধা বোনাস নিয়ে আসছে রাজশাহী কলকারখানা প্রতিষ্ঠান ও পরিদর্শন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা। যা একাধিকবার বহু গণমাধ্যমে প্রকাশও হয়েছে। তবুও যেন কর্তৃপক্ষের চৈতণ্য ফিরছে না। এছাড়াও দৃষ্টি দেওয়া হচ্ছেনা নিষিদ্ধ শিশুশ্রমের দিকেও। রাজশাহীতে অনেক কারখানা মালিকরা করছে শিশুশ্রমের মত অপরাধ, তবুও দৃষ্টি দিচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটির উপ-মহা পরিচালক আরিফুল ইসলাম এমন অভিযোগ এখন সকলের।
বাংলাদেশ স্বাধিনের পর থেকে শ্রমিকদের অধিকার ও সুযোগ সুবিধা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে কলকারখানা প্রতিষ্ঠান ও পরিদর্শন অধিদপ্তর। কিন্তু ২০০৬ সালে গেজেট আকারে প্রকাশ হয়। যা বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ৪২ নং হিসেবে পরিচিতি পায়। এরপর ২০১৩ সালে শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করতে আইনটি সংশোধন করা হয়। এরপর ২০১৮ সালে। তবুও রাজশাহীতে শ্রম আইন নাই বললেই চলে। শ্রম আইন বাস্তবায়ন কারী প্রতিষ্ঠান কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের অবহেলায় শ্রমিকদের অধিকার খর্ব হচ্ছে। তবে শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানটিও মালিকদের কাছে মাসিক মাসোহারায় বিক্রি। আইন বাস্তবায়ন না হওয়ায় শ্রমিকদের নেই পর্যাপ্ত নিরাপত্তা, নেই চাকুরির নিশ্চয়তা, নিয়োগপত্র, ছবিসহ পরিচয় পত্র, সার্ভিস বুক, হাজিরা রেজিস্ট্রার, ছুটি রেজিস্ট্রার, মজুরি রেজিস্ট্রার, ওভার টাইম রেজিস্ট্রার, সাপ্তাহিক ছুটি, উৎসব ছূটি। রাজশাহীতে শ্রমিক ইউনিয়নগুলো এ সকল দাবি তুললে তাদের চাকুরিচ্যুত করার হুমকি দেন প্রতিষ্ঠান মালিকরা। শ্রমিকদের শ্রম আইন বাস্তবায়নে কাজ করতে গিয়ে মালিক পক্ষের বাধার মুখে পড়েছেন অনেকে। এরকম নানা সমস্যা নিয়ে গত ২০-১২-২১ ইং তারিখে রাজশাহী শহর হোটেল ও রেষ্টুরেন্ট শ্রমিক ইউনিয়ন লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন রাজশাহী কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপ-মহা পরিদর্শক বরাবর। ইউনিয়নটির প্যাডে সভাপতি মকলেছুর রহমান ও সাধারন সম্পাদক আব্দুর রহমান স্বাক্ষরিত অভিযোগটি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের উচ্চপদস্ত কর্মকর্তাদের দেওয়া হয়েছে। লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও কার্যকর কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেননি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
অনুসন্ধানে জানাযায়, অন্যান্য শ্রমিক ইউনিয়নগুলোর অবস্থাও। রাজশাহীর প্রতিটি হোটেলেই নেই কোন সাপ্তাহিক ছুটি, তবুও নজরদারি নেই কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের। হোটেলে শ্রমিকদের আইন বহির্ভূত কাজ ও নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া যায়।
অভিযোগ আছে দীর্ঘদিন ধরে রাজশাহী কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে কর্মরত কিছু পরিদর্শক মাসিক মাসোহারা নিয়ে আইন বাস্তবায়নে কাজ করছেন না। এমনই এক কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর (পরিদর্শক) তারেক। তিনি এখানে ৫ বছর যাবৎ আছে। সে তার পরিদর্শন এলাকার প্রতিটি প্রতিষ্ঠান থেকে মাসিক মাসোহারা তোলেন। ইতিমধ্যে রাজশাহী কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে এ সকল বিষয়ের উপর বারংবার তাগাদা দেওয়ার পরও কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় প্রধান কার্যালয় থেকে শোকজ নোটিশ প্রদান করেছেন। এমন আরেক নারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর (পরিদর্শক) নাসরিন আক্তার। তিনি চাকুরীর শুধু থেকে দীর্ঘ ৭ বছর যাবৎ এক জায়গায় আছেন। তিনিও ঠিকমত কাজও করেন না মাঠে। তাঁর পরিদর্শন এলাকায় কোন শ্রম আইন বাস্তবায়ন নাই বললেই চলে। তিনিও মাসিক মাসোহারা নেন প্রতিটি প্রতিষ্ঠান থেকে। এর সাথে যুক্ত হয়েছেন সদ্য যোগদানকৃত পরিদর্শক ইলিয়াস হাইদার।
এদিকে রাজশাহী কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপ মহা পরিদর্শক আরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে উঠেছে নানা অভিযোগ। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে ৩ মাস ও ৬ মাস এমনকি ১ বছর চুক্তিতে মাসোহারা নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে তার বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যে তিনি মন্ত্রীর ভাতিজির বিবাহের অনুষ্ঠান উপলক্ষে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদা নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও তিনি নিয়ম বর্হিভূত ভাবে অফিসের ২য় তলায় ভাড়া থাকছেন।
কথা বললে পরিদর্শক তারেক (সাধারণ) ফোনে বলেন, আমি কোন মাসিক মাসোহারা নেই না। গত তিন মাসে কয়টি মামলা দিয়েছেন বলে জানতে চাইলে তিনি বলেন একটি মামলা হয়েছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে উপ মহা পরিদর্শক আরিফুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক
,
আপলোডের সময় :
বুধবার, ৬ এপ্রিল, ২০২২ ,
আজকের সময় :
রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
রাজশাহীতে মাশোহারার মাশুল দিয়ে খর্ব হচ্ছে শ্রমিকদের অধিকার
Print [1]