কাজী মোস্তফা রুমি, টাঙ্গাইলের বাসাইলে সেচপাম্পের ঘর থেকে লাল মিয়া (৪৫) নামের এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) রাতে উপজেলার কাউলজানী ইউনিয়নের সেহরাইল মাটির খাদ এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। পরিবারের দাবি- সেহরাইল মাটির খাদে ট্যাফেট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হওয়ার পর লাশ গুমের উদ্দেশে ওই সেচপাম্পের ঘরে রাখা হয়।
নিহত লাল মিয়া উপজেলার কাউলজানী মহেষখালী গ্রামের গটু মিয়ার ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার কাউলজানী ইউনিয়নের সেহরাইল এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে ট্যাফেট্রাক্টরের মাধ্যমে একটি চক্র বিক্রি করে আসছে। ওই খাদে লাল মিয়া শ্রমিকের কাজে নিয়োজিত ছিল। সকাল থেকে খাদের পাশে সড়কে লাল মিয়া পানি দিচ্ছিল। পরে দুপুর থেকে লাল মিয়া নিখোঁজ হয়। এরপর খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। সন্ধ্যায় সেচপাম্পের শ্রমিক ঘরে গিয়ে তার লাশটি দেখতে পান। এরপর পুলিশ গিয়ে তার লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
নিহতের ছোট ভাই আব্দুল খালেক বলেন, ‘আমার ভাই দীর্ঘদিন ধরে সেহরাইলে মাটির খাদে শ্রমিকের কাজ করছিলেন। দুপুরে সেখানে কলিয়া গ্রামের মজিবর রহমান নামের এক ব্যক্তির ট্রাফেট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে আমার ভাই মারা যান। পরে লাশটি গুমের উদ্দেশে তারা সেচপাম্পের ঘরে রেখে দেয়। রাত হলে হয়তো লাশটি অনত্র ফেলে দিতো।’
তিনি আরও বলেন, ‘দুপুরে আমার ভাতিজা খাদে গিয়ে তাকে দেখতে পায়নি। পরে ভাতিজা সেখান থেকে বাড়িতে চলে আসে। সন্ধ্যায় সেচপাম্পের ঘরে তার লাশ পাওয়া যায়। দুপুরে এঘটনার পরপরই মাটির খাদটি বন্ধ করে তারা সেখান থেকে চলে যায়। এখনও ওই ট্রাফেট্রাক্টরটি সড়কের পাশে পড়ে আছে। তার শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহৃ রয়েছে। আমার ভাই হত্যার বিচার চাই। এঘটনায় মামলা করা হবে।’
নিহতের মেয়ে লাভনী আক্তার বলেন, ‘আমার বাবাকে ওরা হত্যা করে লাশ মেশিন ঘরে রেখে দিয়েছে। আমার বাবার হত্যার বিচার চাই।’
বাসাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘নিহতের লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার সকালে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে- বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে লোকটি মারা যেতে পারে।’
এদিকে, একমাত্র উপার্জক্ষম লাল মিয়ার পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন তার স্ত্রী নজিরন বেগম।