ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক , আপলোডের সময় : বৃহস্পতিবার, ১৯ মে, ২০২২ , আজকের সময় : শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

বাঘায় “পার্পল স্টার” জাতের মিষ্টি আলু চাষে সফলতার সম্ভাবনা

হাবিল উদ্দিন,বাঘা,রাজশাহীঃসারা বিশ্বে বৈশ্বিক করোনাতে বিপর্যস্ত , দিন দিন আক্রান্তের সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বেড়েই চলেছে। প্রতিষেধক এখনো আবিষ্কৃত হয় নি, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে ভ্যাক্সিনেশন কার্যক্রম ট্রায়াল হিসেবে প্রয়োগ হচ্ছে, সেইটাও শতভাগ সুরক্ষা দিতে পারছে না৷ কারণ করোনা ভাইরাস মিউটেশনের মাধ্যমে তার স্ট্রেইন (strain) পরিবর্তন করে চলেছে প্রতিনিয়ত। তাই, করোনা প্রতিরোধে শারীরিক দূরত্ব অনুসরণসহ ব্যক্তিগত সুরক্ষা নিশ্চিত করা অত্যাবশ্যকীয়। তার চেয়েও বেশি প্রয়োজন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো। আর এই ইমিউনিটি সিস্টেম বুস্ট আপ করার জন্য পুষ্টিকর খাবার খাওয়া অপরিহার্য।
এমনই এক উচ্চ পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার “পার্পল স্টার” জাতের মিষ্টি আলু।
রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে পার্পল স্টার জাপানী খোগেই জাতের মিষ্টি আলুর চাষ হয়েছে। উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনিয়নের মোঃ শফিকুল ইসলাম ছানা, মনিগ্রাম ইউনিয়নের মোঃ সাজদার রহমান, গড়গড়ি ইউনিয়নের মোঃ আজদার হোসেন এর জমিতে কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ০৭ টি প্রদর্শনী বাস্তবায়িত হয়েছে।
গতকাল থেকে মিষ্টি আলু উত্তোলন শুরু হয়েছে। একেকটি গাছ থেকে ৩-৪ কেজি মিষ্টি আলু পাওয়া যাচ্ছে, বিঘায় প্রায় ১৪০-১৫০ মণ। আকর্ষণীয় বেগুনি কালারের এই মিষ্টি আলু সবার নজর কেড়েছে।
বাজারমূল্যও বেশি পাওয়া যাচ্ছে, অন্য জাতের মিষ্টি আলুর যেখানে ২০-৩০ টাকা কেজি, সেখানে এই জাতের আলু ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাঘা উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে মিষ্টি আলু ব্যাপক জনপ্রিয় একটি ফসল। এটি ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাসসহ প্রয়োজনীয় খনিজ লবণের একটি ভালো উৎস। পার্পল স্টার একটি উচ্চ ফলনশীল মিষ্টি আলুর জাত। গায়ের রং বেগুনি থেকেই মূলত এর নামকরণ।
পনের শতকের দিকে চায়না ও ফিলিপাইনে এই জাতের মিষ্টি আলুর প্রথম দেখা যায়, তারপর সেখান থেকে ১৬০০ সালের দিকে জাপানের ওকিনিওয়া তে এইটি ব্যাপকভাবে পরিচিতি লাভ করে। ভবিষ্যতে জাতটি সম্প্রসারণে উপজেলা কৃষি অফিসারের কার্যালয়,বাঘা থেকে সার্বিক কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করা হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কামরুল ইসলাম বলেন, পার্পল জাতের মিষ্টি আলু অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং বিটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধ যা ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়তা করে। এই জাতের আলুতে অ্যান্থোসায়ানিন উপাদান আছে। অ্যান্টিঅক্সিডেশন, antimutation এবং লিভার সুরক্ষা করতে এই জাতের আলু সহায়ক ভূমিকা রাখে। এছাড়াও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাসসহ প্রয়োজনীয় খনিজ লবণ আছে এই জাতের মিষ্টি আলুতে।
প্রতি হেক্টরে এর ফলন প্রায় ৪৮-৫০ টন, যা প্রচলিত জাতগুলোর তুলনায় ৫-৮ টন বেশি। এছাড়াও সাধারণ সাদা আলুর থেকে এর মিষ্টতা অনেক বেশি।
তিনি আরো বলেন, ব্যাপক পুষ্টি গুণের কারণে বিদেশেও রয়েছে এই জাতের ব্যাপক চাহিদা। তাই এই জাতের মিষ্টি আলুর আবাদ সম্প্রসারণের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ” কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে উচ্চ পুষ্টি গুণসম্পন্ন রপ্তানীযোগ্য পার্পল স্টার জাতের মিষ্টি আলুর আবাদ বৃদ্ধির জন্য নানামুখী পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। এছাড়াও পারিবারিক পুষ্টি চাহিদা পূরণে বসতবাড়ির ফাঁকা জায়গায় পার্পল স্টার জাতের ০৫-১০ টি কাটিং লাগানো যেতে পারে।