ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক , আপলোডের সময় : শনিবার, ৪ জুন, ২০২২ , আজকের সময় : রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

৮০ বছরের এক অসহায় মায়ের জুটেনি সরকারি ঘর

মাসুদ রানা বাউফলঃ প্রধানমন্ত্রীর উপহার মুজিববর্ষের ঘর পেতে চায় বাউফলের বগা ইউনিয়নের সাবুপুরা গ্রামের মানবেতর জীবনযাপন করা গরীব অসহায় একটি পরিবার। সাবুপুরা গ্রামের মৃত আজাহার হাওলাদার এর ছেলে দিনমজুর নাসির হাওলাদারের থাকার মতো কোনো ঘর নেই। থাকেন একটি ঝুপড়ি ঘরে।

স্থানীয়রা জানান, নাসির হাওলাদারের থাকার মতো কোন ঘর নেই। একটি ঝুপড়ি ঘরে কোনমতে থাকেন। একটু বৃষ্টি হলে সন্তান বউ নিয়ে মানুষের ঘরে আশ্রয় নেন। ঘরের চারপাশে নেই কোন টিনের বেড়া। ঘরের কষ্টে বড় অসহায় দিন পাড় করছে পরিবারটি।

নাসিরের ৮০ বছর বয়সী বৃদ্ধা মা মনোয়ারা বেগম বলেন, শেখের মাইয়া হাসিনা হগোল গরীবগো ঘর দেয়, আমারে একখান ঘর দিতে কন। মরার আগে একটা ভালো ঘরে হুইয়া মরতে চাই। হাসিনার লইগ্যা নামাজ পইড়া দোয়া করি। আল্লাহ হাসিনারে ভালো রাখবে।

নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মত সংসার দিনমজুর নাসিরের। ছেলে মেয়ে ৫ জন। নাসিরের মা ও স্ত্রীকে নিয়ে আট জনের সংসার চালাতে কখনো খেয়ে বা কখনো না খেয়ে দিন পাড় করতে হয়। পাড়া-প্রতিবেশিদের সহযোগীতায় কোনমতে মানবেতর দিন পাড় করছে এই অসহায় পরিবারটি।

দিনমজুর নাসির কেঁদে কেঁদে বলেন, আটজন মানুষের খাওয়া জোটাতেই তো কষ্টের শেষ নেই। তার উপরে ঘরের চিন্তা তো করতেই পারি না। ঘরের অভাবে রাতে বৃষ্টি হলে ছেলে মেয়ে নিয়ে ঘরের এক কোনে গিয়ে বসে থাকি। কোন কোন দিন তো রাতে ঘুমাতেই পারি না ঘরে। ঘরের চালা নেই, টিনের বেড়া নেই। কোন রকম ছাপড়া দিয়ে বাইচা আছি।

নাসির বলেন, প্রধানমন্ত্রী এত মানুষরে ঘর দেয়, আমারে একটা ঘর দিলে আমি অন্তত ছেলে মেয়ে নিয়ে বাকি জীবনটা ঘরের কষ্ট দূর করে সুখে-শান্তিতে থাকতে পারতাম। ঘরের কষ্টে আমার ছেলেমেয়েদের ঠিকমত ভালো পরিবেশের অভাবে লেখাপড়াও করাতে পারছি না।

সরেজমিনে দেখা যায়, কোন রকম ছাপড়া কুঁড়ে ঘরের চালার নিচে পলিথিন দিয়েই রোদ ও বৃষ্টির পানি ফিরায় নাসির হাওলাদার। জসীম উদ্দীনের আসমানী কবিতার মত – একটুখানি হাওয়া দিলেই ঘর নড়বড় করে। এই অসহায়, গরীব দিনমজুর পরিবারটিকে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর আশ্রায়ণ প্রকল্পের একটি ঘর দিয়ে সহায়তা করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

এ প্রসঙ্গে বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আল আমিন বলেন, এখন “ক” শ্রেণির ঘরের কাজ চলছে। এটা শুধু ভূমিহীন জনগণ পাবে। সামনে “খ” শ্রেণির ঘরের তালিকার সময়ে উনি আবেদন করলে এবং তার পরিবার সত্যি অসহায় হলে আমরা যাচাই বাচাই শেষে দ্রুত সময়ের ভিতরে ঘর তুলে দেবো।