ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক , আপলোডের সময় : বুধবার, ৩ আগস্ট, ২০২২ , আজকের সময় : বৃহস্পতিবার, ৯ মে, ২০২৪

সালথায় মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার রোধেকল্পে দিনব্যাপী কর্মশালা অনুষ্ঠিত

বিধান মন্ডল (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ
ফরিদপুরের সালথায় মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার রোধে সামাজিক আন্দোলন গড়তে সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন বিষয়ে দিনব্যাপী কর্মশালা করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।
বুধবার (৩ আগষ্ট) সকাল ১০টায়
ফরিদপুর মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায়, সালথা উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ তাছলিমা আকতারের সভাপতিত্বে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রুপা বেগম। ফরিদপুর জেলা কার্যালয়ের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শামীম হোসেন।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা কৃষি অফিসার (কৃষিবিদ) জীবাংশু দাস, নবকাম পল্লী কলেজের অধ্যক্ষ ওবায়দুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুকুজ্জামান ফকির মিয়া, গট্টি ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান লাবলু প্রমুখ। এছাড়াও বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, শিক্ষক শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন-
ফরিদপুর জেলা কার্যালয়ের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শামীম হোসেন।
সভাপতির বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ তাছলিমা আকতার বক্তব্যে বলেন, মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার রোধে সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা প্রসঙ্গে উপস্থিতির উদ্দেশ্য  দেশের অর্থনৈতিক বিকাশে তরুণ প্রজন্মকে মাদকমুক্ত রাখার চেষ্টা করতে হবে। এ জনপদে মাদক প্রবণতা, সম্ভাব্য করণীয় বিষয়ে কর্মশালায় সুপারিশ করতে হবে। প্রচলিত মাদকের কোনটিই বাংলাদেশে তৈরি হয় না। উপকরণগুলো পাচার হয়ে আসছে। মাদকের চাহিদা না থাকলে সরবরাহ কমবে। তাই মাদক থেকে দুরে রাখতে প্রয়োজন সম্মিলিত কাজ। যেখানে পরিবার, সমাজ এবং সরকারের বিভিন্ন দপ্তরকে একযোগে কাজ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, সারাদেশে মাদক পাচার ও বেচাকেনার ক্ষেত্রে নারীদের ব্যবহার করা হচ্ছে। ব্যবসার কৌশল বদলে মাদক কারবারিরা এখন নারী ও শিশুদের ব্যবহার করছে। যা খুবই দুঃখ জনক ও উদ্বেগের বিষয়। তাই সমাজ থেকে মাদক নির্মূল করতে হলে মাদকের গডফাদারদের আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধে জানানো হয়, দেশে প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ লাখ মাদকাসক্ত মানুষ রয়েছে। প্রতি বছর মাদকের পেছনে প্রায় ৬০হাজার কোটি টাকা নষ্ট হচ্ছে। বর্তমানে দেশে শিশু ও নারীদের মধ্যে মাদকাসক্তের অংশ বাড়ছে। বিশেষ করে ইয়াবা ছেলেদের মতো মেয়েরাও  অবলীলায় গ্রহণ করছে। বিগত ১০বছরের মাদকাসক্তির কারণে ২শত বাবা-মা খুন হয়েছে। অন্যান্য অপরাধের মূলেও রয়েছে এই মাদক। প্রবন্ধে আরো বলা হয়, প্রতিদিন গড়ে তাদের ১৫০ টাকার মাদক লাগে। এই হিসাবে একজন মাদকাসক্তের বছর ৫৪ হাজার ৭৫০ টাকার মাদকের জন্য ব্যয় করে। দেশে ২৫ লাখ মাদকাসক্ত ধরা হলে তারা বছরে ১৩ হাজার কোটি টাকার মাদক সেবন করে। এসব মাদকের পুরোটাই অবৈধভাবে দেশে আসছে। আর পাচার হয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা।
কর্মশালায় বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতা, শিক্ষক, সাংবাদিক, পুলিশ, ইমাম-মুয়াজ্জিম, পুরোহিতসহ নানা শ্রেণির পেশার মানুষ অংশ নেন। কর্মশালায় বক্তাগণ মাদকদ্রব্য রোধকল্পে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার ঐক্যমত পোষণ করেন।