কাজি মোস্তফা রুমি, স্টাফ রিপোর্টার : রাজনীতির মহানায়ক, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর রচিত গ্রন্থ ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ একটি অনবদ্য সৃষ্টি।
বাংলাদেশের ইতিহাসে ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইখানি অন্যতম।
কারণ জানতে চাইলে অবশ্যই বলা যায়, একজন মানুষ কিভাবে বেড়ে উঠেছেন, জেল-জুলুম-নির্যাতন কোন কিছুই দমাতে পারেনি, স্নেহবৎসল পিতা এবং স্বামী হয়েও দেশ ও দশের জন্য ত্যাগ-তিতিক্ষার অভাব বোধ করেননি। সবকিছুর ওপরে ছিল দেশের মানুষের প্রতি ভালবাসা এবং তাদের জন্য অকৃত্রিম কিছু করার প্রবল বাসনা।
‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ তে উল্লেখরয়েছে শৈশব-কৈশোর-যৌবন-যেখানে বাধা, সেখানেই ন্যায়ের পথে পরিচালিত হয়েছেন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধুর জীবনে তাঁর সহধর্মিণী শেখ ফজিলাতুন্নেছার অবদান কতখানি এটি পরিস্ফুট হয়ে উঠেছে তাঁর জীবনীগ্রন্থের প্রারম্ভের দ্বিতীয় ও তৃতীয় লাইনে- ‘আমার সহধর্মিণী একদিন জেল গেটে বলল, ‘বসেই তো আছ, লেখ তোমার জীবন কাহিনী’ (পৃঃ ১)।
আসলে প্রত্যেক সৃষ্টিশীল পুরুষের জীবনে একজন অসামান্য সমার্থক ব্যক্তি থাকেন। বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী, যার ডাকনাম ছিল রেনু। সর্বদা সাহায্য-সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন। ব্যক্তিগত লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে উঠে কিভাবে জীবনকে মানুষের কল্যাণে উৎসর্গ করতে হয় তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ মেলে গ্রন্থখানিতে।
টাঙ্গাইলের নাগরপুরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু’র অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থ শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। টাঙ্গাইল জেলার সকল ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে এই বই তুলে দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক, সদর পৌরসভার বারবার নির্বাচিত সাবেক মেয়র এবং জেলা বঙ্গবন্ধু অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থ প্রচারণা পরিষদের উদ্যোক্তা আলহাজ্ব জামিলুর রহমান মিরন এর নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু অসমাপ্ত আত্মজীবনী কলেজ পর্যায়ে বাস্তবায়ন কমিটির তত্ত্বাবধানে আজ (২৪ আগস্ট) নাগরপুর সরকারি কলেজ ও নাগরপুর মহিলা কলেজ ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে বঙ্গবন্ধুর রচিত এই অসমাপ্ত আত্মজীবনী বই বিতরণ করা হয় এবং সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর পৌরসভার বারবার নির্বাচিত সাবেক মেয়র এবং জেলা অসমাপ্ত আত্মজীবনী প্রচারণা পরিষদ উদ্যোক্তা জামিলুর রহমান মিরন বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। তাঁর নেতৃত্বেই বাংলার সাড়ে ৭ কোটি জনতা এক মঞ্চে দাঁড়িয়ে দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলার স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে এনেছে।
কিন্তু একটি দুঃখের বিষয়, বর্তমান প্রজন্মের কাছে এই ইতিহাস সঠিকভাবে পৌঁছানো এখন পর্যন্ত সম্ভব হয়নি।
তাই আমাদের প্রত্যেকেরই দায়িত্ব ও কর্তব্য জাতির জনকের ও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা।
আমি বিশেষভাবে শিক্ষকদেরকে অনুরোধ করবো, যারা ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে তাদের নিকট জাতির জনকের জীবনাদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস আপনারা তুলে ধরবেন। তাহলেই আমরা সমৃদ্ধশালী একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারব। স্বপ্ন পূরণ করতে পারব জাতির জনকের সোনার বাংলা।
আরো একটি বিষয় আমাদের মাথায় রাখতে হবে, বর্তমানে একটি মহল তরুণ প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করার জন্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। আমাদেরকে সজাগ থেকে এই ষড়যন্ত্রকে কৌশলে প্রতিহত করে সঠিক ইতিহাস তরুণ প্রজন্ম তথা সকল ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে তুলে ধরতে হবে।
উল্লেখ্য, প্রথমে নাগরপুর সরকারি কলেজে ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে এই বই বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন নাগরপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান সহ সকল সম্মানিত শিক্ষক শিক্ষিকা মন্ডলী ও ছাত্রছাত্রী বৃন্দ। পরে নাগরপুর মহিলা কলেজে অধ্যক্ষ মোঃ আনিসুর রহমানের উপস্থিতিতে ছাত্রীদের মাঝে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থটি বিতরণ করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থ প্রচারণা পরিষদ কলেজ পর্যায়ে বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি আনন্দমোহন দে, প্রধান সমন্বয়ক আব্দুর রউফ রিপন, সহ-সভাপতি মোহাম্মদ শাহিন ও যুগ্ম সম্পাদক নীলা, নাগরপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সবুর, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক মো: খালিদ হোসেন খালিদ এবং বঙ্গবন্ধুর জীবনী’র লেখক ইন্জি: সাজ্জাদ হোসেন প্রমুখ।
Print [1]