কাজী মোস্তফা রুমি, স্টাফ রিপোর্টার: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট ছেলে শহীদ শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিন।
মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর)। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট ভাই শেখ রাসেল ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর ধানমন্ডির ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবনে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মানবতার শত্রু ঘৃণ্য ঘাতকদের নির্মম বুলেট থেকে রক্ষা পাননি শিশু শেখ রাসেল। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে নরপিশাচরা নির্মমভাবে তাকেও হত্যা করেছিল। তিনি ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।
সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ রাসেলের জন্মদিন শেখ রাসেল দিবস’ হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হচ্ছে। শেখ রাসেল জাতীয় দিবসের এবারের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে শেখ রাসেল নির্মলতার প্রতীক, দুরন্ত প্রাণবন্ত নির্ভীক।
শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু পরিবারের অন্যান্য সদস্যস্যের মতো রাসেলও ছিলেন সহজ-সরল ও অত্যন্ত বিনয়ী। তিনি ছিলেন আদর্শ পিতার যোগ্য সন্তান। শেখ রাসেল বেঁচে থাকলে হয়তো আজ জাতির নেতৃত্ব দিতেন। দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করতেন।
প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, ‘শেখ রাসেল আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু আছে তার পবিত্র স্মৃতি। বাংলাদেশে সব শিশুর মধ্যে আজও আমি রাসেলকে খুঁজে ফিরি। এই শিশুদের রাসেলের চেতনায় গড়ে তুলতে হবে। এমন এক উজ্জ্বল শিশুর সত্তা বুকে ধারণ করে বাংলাদেশের শিশুরা বড় হোক। খুনিদের বিরুদ্ধে তারা তীব্র ঘৃণা বর্ষণ করুক।
জাতীয়ভাবে সারা দেশে একযোগে এবং বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোতে শেখ রাসেল দিবস-২০২২ পালিত হবে। দিবসটি উপলক্ষে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে সকাল ৬টায় বনানী কবরস্থানে শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিবসটির কার্যক্রম শুরু হবে। সকাল সাড়ে ৬টায় স্ব স্ব মন্ত্রণালয় বা বিভাগ বা দফতর বা সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান ও প্রাঙ্গণে শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হবে। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের পক্ষ থেকে ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজে শেখ রাসেল ম্যুরাল প্রাঙ্গণেও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।
দিবসটিতে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। শহীদ শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ মঙ্গলবার সকাল ৯টায় বনানী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত শেখ রাসেলসহ ১৫ আগস্টে নিহত সব শহীদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে। আওয়ামী লীগের পাশাপাশি ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, সহযোগী সংগঠন এবং বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
দিবসটিতে আইসিটি বিভাগের উদ্যোগে সকাল সাড়ে ৭টায় পরিকল্পনা কমিশনের সামনে হতে বিআইসিসি প্রাঙ্গণ পর্যন্ত সবার অংশগ্রহণে র্যালি অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের (বিআইসিসি) হল অব ফেম-এ শেখ রাসেল দিবসের উদ্বোধন ও শেখ রাসেল পদক প্রদান করবেন। বেলা আড়াইটায় ‘শেখ রাসেলের নির্মম হত্যাকাণ্ড ন্যায়বিচার, শান্তি ও প্রগতির পথে কালো অধ্যায়’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনার, একই স্থানে সন্ধ্যা ৬টায় ‘কনসার্ট ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিস’ অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে দেশের সব বিভাগ, জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের উদ্যোগে চিত্রাঙ্কন, দাবা, জাতীয় ফুটবল টুর্নামেন্ট ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের শুভ জন্মদিন ‘শেখ রাসেল দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচিতে যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয় নেতা-কর্মী, সমর্থক ও সর্বস্তরের জনগণের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
একইসঙ্গে তিনি সারা দেশে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর সব স্তরের নেতা-কর্মীর প্রতি বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।
Print [1]