বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি : ফরিদপুরের বোয়ালমারী পৌরসদরের চৌরাস্তায় মাঝকান্দি-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়ক সংলগ্ন বঙ্গবন্ধু স্মৃতিস্তম্ভে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল রাতের আঁধারে ইটপাটকেল ছুড়ে নাশকতার চেষ্টা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় রবিবার (২০ নভেম্বর) বিকেল ৪টায় ঘন্টাব্যাপী প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন করেছে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড। প্রতিবাদ সভায় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার অধ্যাপক আব্দুর রশিদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এম মোশাররফ হোসেন, সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আ. রউফ সিদ্দিকী, কেএম জহুরুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা তোরাব হোসেন, উপজেলা সন্তান কমান্ডের আহ্বায়ক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ রাসেল রেজা, মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রেখা পারভীন, সন্তান কমান্ডের সদস্য সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শরীফ সেলিমুজ্জামান লিটু প্রমুখ। সভায় বক্তারা বঙ্গবন্ধু‘র ম্যুরাল ভাংচুরকারী স্বাধীনতা বিরোধী দুষ্কতিকারীদের খুঁজে বের করে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। এ সময় বক্তারা জামায়াত-শিবির ও বিএনপিকে দায়ী করেন।
শনিবার রাত সাড়ে ৮টায় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাংচুরের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে উপজেলা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল করে প্রতিবাদ জানায়। ওই রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান এম মোশাররফ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মীরদাহ পিকুল, পৌর মেয়র সেলিম রেজা লিপন মিয়া, ইউএনও মোশারেফ হোসাইন, ওসি মুহাম্মদ আব্দুল ওহাব প্রমুখ। এ ঘটনার পর থেকেই বঙ্গবন্ধু স্মৃতিস্তম্ভ এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এরপর উপজেলা আ.লীগের সভাপতি এম এম মোশাররফ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মীরদাহ পিকুলের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল শেষে পৌরবাজারের সোনালী ব্যাংকের মোড়ে এক প্রতিবাদ সভা করে। প্রতিবাদ সভায় স্থানীয় প্রশাসনকে আগামী ৭ দিনের মধ্যে ঘটনাটির তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দাবি জানানো হয়। না হলে দলীয়ভাবে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারী জানায় নেতাকর্মীরা।
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু একজন সম্মানী ব্যক্তি ছিলেন। তাঁর ম্যূরালে এ ধরনের ঘটনার আমরা নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এ ধরনের ঘটনা যারা ঘটিয়েছে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিচার দাবি করছি। বিএনপি এ ধরনের কোন ঘটায়নি। এমনকি বিএনপিসহ অঙ্গ সংগঠনের কোন নেতাকর্মী এ ধরনের কোন ঘটনার জড়িত থাকলে তাদের বিচারও তিনি দাবি করেছেন।
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী থানার ওসি মুহাম্মাদ আব্দুল ওহাব জানান, আশেপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আশেপাশের দোকানপাটের লোকজন তাংক্ষনিক কিছু বলতে পারেনি। তবে ঘটনাস্থল থেকে কিছু ইটের টুকরা জব্দ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনী ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোশারেফ হোসাইন বলেন, তাৎকাণিক ভাবে ঘটনার সাথে জড়িত কাউকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার। আওয়ামী লীগের কঠোর কর্মসূচির দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, দলীয় নেতৃবৃন্দ তাদের কাছ করেছেন; প্রশাসন চেষ্টা করছে প্রকৃত ঘটনা উৎঘাটনের।