বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি : ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে আদালতের নির্দেশনা অবমাননা করে রাতের আঁধারে পাকা স্থাপনা নির্মানের অভিযোগ উঠেছে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোশারেফ হোসাইনের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে সোমবার (২১ নভেম্বর) বেলা আড়াইটায় স্থানীয় একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী পরিবার। সংবাদ সম্মেলনে জমির মালিকের ছেলে এএফ এম বদরুজ্জামান জানান, বোয়ালমারী পৌর বাজারের কামারগ্রাম মৌজার হাল ৬৮৫৮ দাগের ১০ শতাংশ জমি ১৯৯৩ সাল থেকে ক্রয় সূত্রে মালিক মো. নুরুজ্জামান খসরু মিয়া। যা প্রায় ৩০ বছর ধরে ভোগদখল করে আসছেন। ভুলক্রমে হাল রেকর্ডে জমিটি খাস খতিয়ান ভূক্ত হয়। এ বিষয়ে আদালতে মামলা চলমান এবং মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সকল ধরনের স্থাপনা নির্মাণের স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা শর্তেও তা অমান্য করে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে মার্কেট নির্মাণ করার অভিযোগ করেছেন বোয়ালমারী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত মো. নুরুজ্জামান খসরু মিয়ার ছেলে এএফ এম বদরুজ্জামান । এএফ এম বদরুজ্জামান জানান, বর্তমান মাঠ জরিপে ভুলক্রমে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিটি খাস খতিয়ানে অন্তর্ভূক্ত হয়। এ বিষয়ে নুরুজ্জামান খসরু মিয়া ফরিদপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জেলা প্রশাসক, ফরিদপুর, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বোয়ালমারী, উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি বোয়ালমারী, কে বিবাদী করে মামলা করলে ২০২০ সালে আদালত নুরুজ্জামানের পক্ষে রায় দেন। রায় পরবর্তী সরকারের পক্ষে আপীল করে বোয়ালমারী সহকারী কমিশনার (ভূমি), মামলাটি এখনও চলমান। আমরা নিষেধাজ্ঞার কপি জমা দিতে গেলে কালক্ষেপন করে অফিস টাইম শেষ জানিয়ে সম্প্রতি জমিটি দখলে নিয়ে অন্যত্রে বন্দোবস্ত দেওয়ার জন্য সরেজমিনে উপস্থিত থেকে ছুটির দিনে রাতের আঁধারে স্থাপনা নির্মাণ করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোশারেফ হোসাইন। আদালত থেকে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আনেন বাদী। বিষয়টি বাদী পক্ষের ফরিদপুর আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মানিক মজুমদার নিশ্চিত করেছেন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোশারেফ হোসাইন জানান, খাস খতিয়ানে থাকায় সরকারি জমিতে সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষে মার্কেট নির্মাণ করা হচ্ছে। এ জমিটি নিয়ে কেউ কেউ তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি হিসেবে দাবী করছে। কিন্তু এই সম্পত্তির বিআরএস জরিপ এবং তার পরবর্তী আরএস জরিপে খাস খতিয়ানে রয়েছে। তিনি জানান, এই জমিটির দাবিদার নুরুজ্জামান মিয়া কালীপদ সাহার কাছ থেকে জমিটি ক্রয় করেছে কাগজে উল্লেখ রয়েছে। তবে ওনারা ভুল লোকের কাছ থেকে জমিটি ক্রয় করেছেন। নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞার কোন কাগজপত্র হাতে পাইনি। রাতের কাজ করার বিষয়টি ইউএনও‘র দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, সরকারি জমিতে আমরা যেকোন সময় কাজ করতে পারি। সেটা দিনে হোক আর রাতে হোক। প্রসঙ্গত, সদ্য যোগদানকৃত ইউএনও মোশারেফ হোসেইনের পূর্বের ইউএনও মো. রেজাউল করিম আদালতের দুই জারীকারকের সাথে অসাধচারণ করায় হাইকোর্ট তলব করে তাকে। পরে নিঃস্বার্থ ক্ষমা চেয়ে রেহাই পেলেও সাবেক ইউএনও মো. রেজাউল করিমকে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে সংযুক্তি করা হয়। এরপর ইউএনও হিসেবে মোশারেফ হোসেইন বোয়ালমারীতে যোগদান করেন।
Print [1]