ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক , আপলোডের সময় : বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০ , আজকের সময় : সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

রাণীশংকৈলে শিরোমনি ক্লিনিকে ৬  মাসের ব্যবধানে কেড়ে নিল ৩ শিশুর প্রাণ

মাহাবুব আলম রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি: সরকারী রেজিষ্টশন বিহীন ক্লিনিকে ছেয়ে গেছে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় । তারা মানছেনা সরকারের নিয়মনীতি । অবৈধ ভাবে এবং নামে মাত্র চিকিৎসা দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা এই ক্লিনিক ব্যবসায়ীরা। অব্যবস্থাপনায় কেড়ে নিচ্ছে নিরহ নিষ্পাপ নবাজতসহ  গর্ভবর্তী মায়ের প্রান। নেই কোন জবাবদিহী।

গত ২৫ আগষ্ট মঙ্গলবার রাতে শিরোমনি ক্লিনিকে উপজেলার কালুগাঁও গ্রামের সুরেন রায়’র গর্ভবর্তী স্ত্রী মালা রাণী  নামে এক মহিলা তার স্বাস্থ্য চেকআপ করতে যায়। এসময় ডাক্তার পরিক্ষা করে দেখে বাচ্চা প্রসব হওয়ার আরো নয় দিন বাকী। তার পরেও ক্লিনিকের কর্মরত ম্যানেজার, নার্স, ওয়ার্ডবয় মিলে গর্ভবতী মাকে নরমালী ভাবে বাচ্চা প্রসবের চেষ্টা করে। দিনভর গর্ভবতী মাকে হেস্তনেস্ত করার পর নরমালে বাচ্চা প্রসবে ব্যর্থ হলে  ঐ দিন রাত ৮ টায় অস্ত্রোপচার করে  চিকিৎসক। দিনভর বাচ্চাটি নরমালে ডেলিভারীর ব্যর্থ চেষ্টায় বাচ্চাটি একেবারে দূর্বল হয়ে পড়ে। তবে অস্ত্রোপচারের মাত্র ১৫ মিনিট পর শিশুটি মারা যায়।

নিষ্পাপ শিশুর জননী মালা রাণী (৪০) সাংবাদিকদের বলেন, আমি ক্লিনিকে এসেছিলাম চেকআপ করতে। এসুযোগে ৩ জন পুরুষ ও নার্স মিলে আমাকে জোর করে ওটি রুমে নিয়ে যায়। বাচ্চা নরমালে ইস্যু করার জন্য নিষ্ঠুর ভাবে পেটে চাপাচাপী করে, পেটে থাকা সন্তানটি তাদের এ অনিয়মের কারণে নিস্তেজ হয়ে যায়। তিনি বলেন, তার উপর জুলুম করার পরেও নরমালে ব্যার্থ হয়। ওই দিন দুপুর ২ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত তাকে টানা হেচড়া করে। তার পর সিজার করে বাচ্চা প্রসব করা হয়।

মালারাণীর সাথে থাকা ললিতা রাণী বলেন, আমরা গর্ভবর্তীকে চেকআপ করার জন্য ক্লনিকে থাকা ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম। ডাক্তার পরিক্ষা নিরিক্ষা করে বলেছেন বাচ্চা প্রসব হওয়ার আরো ৯ দিন বাকী। এমন কথা শুনে রুগী এবং রুগীর লোকজন বাড়ী যেতে চেয়েছিল। এসময় ক্লিনিকের ম্যানেজার অভি রায় কৌশল করে রুগীকে অটিরুমে নিয়ে স্যালাইন ও ইনজেকশন পুস করে।

ম্যানেজার তাদের বলেন, সুস্থ্য হলে রুগীকে বাড়ী নিয়ে যাবেন। এমন শুনে রুগীর লোকজন থেমে যায়। স্যালাইন শেষে ৩জন পুরুষসহ নার্স মিলে গর্ভবর্তী মার নরমালে বাচ্চা প্রসবের চেষ্টা করে। ললিতা রাণী বলেন, দুপুর ২ টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত গর্ভবর্তীকে নিয়ে তারা টানা হেচড়া করে। এতে  ব্যার্থ হলে ম্যানেজার ডাক্তার কাসেমকে  দিয়ে সিজারের ব্যবস্থা করে। সিজারের ১০-১৫ মিনিট পর বাচ্চাটি মারা যায়।রোগীর সংশ্লিষ্ট সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবু সুলতান বলেন, বাচ্চাটিকে ক্লিনিকের লোকজন মেরে ফেলেছে। তিনি বলেন, অনিয়ম ভাবে ক্লিনিক পরিচালনা করার অপরাধে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। ক্লিনিক সংশ্লিষ্ট অবিনাস রায় বলেন, ক্লিনিকে এ পর্যন্ত ৩টি শিশু মারাগেছে। এমন তথ্য দিলেন তিনি সাংবাদিকে।

এ,প্রসঙ্গে ঠাকুরগাঁও জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার মাহাফুজুর রহমান সরকার মুঠো ফোনে জানান, তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে  আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সেই সাথে যে সব ক্লিনিক ইতো মধ্যে নিবন্ধনের জন্য অন লাইনে আবেদন করেননি। সে সব ক্লিনিকের তালিকা করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।