ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক , আপলোডের সময় : শুক্রবার, ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩ , আজকের সময় : শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

দৌলতপুরে পদ্মার চরে দুর্গম পথের ভরসা মহিষের গাড়ি

দৌলতপুর(কুষ্টিয়া) প্রতিনিধিঃ দৌলতপুরে পদ্মার বালুচরের বুকে এখন একমাত্র জানবাহন মহিষের গাড়ি। কালের বিবর্তনে এই পরিবহনটির রূপ বদলালেও এখনও তার প্রয়োজন ফুরিয়ে যায়নি। পদ্মার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে উঁচু-নিচু-আঁকা-বাঁকা বালুময় পথে যাত্রী বা মালামাল গন্তব্যে পৌঁছে দেয় মহিষের গাড়ি।

পদ্মার অভ্যন্তরের চরাঞ্চলে সড়ক গুলো সব সময়ই উঁচু-নিচু, বালুময় দুর্গম। নির্দিষ্ট কোনো সড়ক নেই এসব চরে। বিভিন্ন সময়ে সুবিধাজনক সড়ক বেছে নেন চরের মানুষ। এসব সড়কে মাইলের পর মাইল হেঁটে যাতায়াত করেন তারা। পণ্য পরিবহনে মহিষের গাড়িই একমাত্র ভরসা । তবে বিজ্ঞানের আবিস্কারে শুকনো মৌসুমে জমি চাষ করা ট্রাক্টর এর সাথে ট্রলি সংযোগ করে মালামাল পরিবহন করতে দেখা যায়। কিন্তু পদ্মার পাড় থেকে নৌকাযোগে আসা মালামাল কিংবা বিস্তীর্ণ ফসলি জমির মাঝখান থেকে কৃষিপণ্য পরিবহনে এখনও একমাত্র ভরসা মহিষের গাড়ি।

সম্প্রতি উপজেলার পদ্মা নদীর অভ্যন্তরে বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে সরেজমিনে গেলে মহিষের গাড়ির এমন অনেক দৃশ্যই দেখা যায়। আবেদ মাঝির নৌকাঘাটে গিয়ে দেখা যায়, শহর থেকে নৌকাযোগে আনা মালামাল তুলে দেওয়া হয়েছে মহিষের গাড়িতে। নদীর তীর থেকে খাড়া ঢাল বেয়ে মহিষের গাড়ি উপরে উঠছে। এরপর ছুটে চলছে মাইলের পর মাইল। খানিকটা দূরে আরও একটি মহিষের গাড়িকে যাত্রী পরিবহন করতে দেখা যায়। এসব গাড়ি বিশাল উঁচু থেকে নিচু ঢাল, বালুময়, কিংবা ছোটবড় গর্তযুক্ত সব দুর্গম পথ অনায়াসেই পাড়ি দিতে পারে। যাতায়াত আর পণ্য পরিবহনে দীর্ঘদিন ধরে এভাবেই চরবাসীর অন্যতম যান হিসেবে চলছে মহিষের গাড়ি। ৬৫ বছর বয়সী মহিষের গাড়ির চালক রহম আলী বলেন, আমরা চরের কৃষক। অনেক আগে থেকেই মহিষের গাড়ি চালাই। আবাদের কাজের ফাঁকে মহিষের গাড়ি চালাই। পোল্টির মোড় এলাকার জব্বার বলেন, আমার জমির ফসল ঘরে তোলা ও আর হাঁট-বাজারে নেয়ার জন্যই মহিষের গাড়ি চালাই।

মানিকের চরের কৃষক আব্দুল কাদের মোল্লা, ইউসুফ মোল্লা, মান্নান, কালাচাঁন মিয়াসহ অনেকেই জানান, বাড়ি থেকে কয়েক মাইল দূরে তাদের কৃষি জমি। এসব জমির ফসল ঘরে তুলতে মহিষের গাড়ি ছাড়া সম্ভব নয়। আবার মহিষের গাড়ি না পেলে মাথায় বা কাঁধে বোঝা নিয়ে আসতে হয়। এছাড়া শহর থেকে মালামাল আনতেও মহিষের গাড়িই ভরসা।

চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মান্নান বলেন, পদ্মার মধ্যবর্তী একটি ইউনিয়ন চিলমারী। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা গ্রাম হবে শহর। সেটা বাস্তবায়নে এখন চরের অনেক সড়কেই মাটি দিয়ে বাধা হয়েছে। তবে নদী তীরবর্তী বালুময় সড়কগুলোতে চলাচল বা পণ্য পরিবহনের জন্য একমাত্র যানবাহন মহিষের গাড়ি।