ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক , আপলোডের সময় : শুক্রবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩ , আজকের সময় : বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

বরই চাষে পাল্টে গেছে রাজমিস্ত্রী  লিটনের ভাগ্য 

মো.আককাস আলী : বরই চাষ করে পাল্টে গেছে রাজমিস্ত্রী লিটনের ভাগ্য। এই দিন মজুর লিটন হোসেন উন্নত বিভিন্ন জাতের কুল বা বরই চাষে পাল্টে গেছে তার ভাগ্য। তার বরই বাগান দেখে আগ্রহী হচ্ছে এলাকার অনেক কৃষক। ওই এলাকায় তিনিই প্রথম এই বরই চাষ শুরু করেন।
লিটন হোসেন সদর উপজেলার বর্ষাইল ইউনিয়নের মকমলপুর গ্রামের কৃষক। অভাবের কারনে খুব একটা লেখাপড়া করা হয়নি। এরপর সংসারের হাল ধরতে শুরু করেন দিন মুজুরির কাজ। সর্বশেষ কাজ করেন রাজমিস্ত্রির। দুই বছর আগে কৃষি কাজ করার প্রবল ইচ্ছা হয় লিটন হোসেনের। নিজের কোন কৃষি জমি না থাকায় প্রথমে অন্যের জমি লিজ নিয়ে ২ বিঘা জমিতে উন্নত জাতের কাশ্মীরি ও বলসুন্দরী কুল বা বরই চাষ করেন। অক্লান্ত পরিশ্রম ও পরিচর্যায় মাত্র ১১ মাসের মাথায় সবকটি গাছেই থোকায় থোকায় কুল ধরে। প্রথম বছর কুল চাষে সব খরচ বাদ দিয়ে ভালো লাভবান হন তিনি। এই কুল চাষে এক বছরেই কিছুটা পাল্টে যায় লিটনের ভাগ্য। এখন ৭ বিঘা জমিজুড়ে তার কুল বা বরই বাগান। এবছর সব খরচ বাদ ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা বরই থেকে লাভবানের আশা করছেন তিনি। এছাড়াও বরই চাষের পাশাপাশি তিনি আরও প্রায় ৮ বিঘা জমি লিজ নিয়ে পেয়েরা ও বিভিন্ন রকম সবজিও চাষ করছেন।
 সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উন্নত জাতের বল সুন্দরী, কাশ্মীরি, ভারত সুন্দরী, আপেল কুল, নারিকেল এবং টক-মিষ্টি বরই গাছের প্রতিটিতে থোকায় থোকায় কুল বা বরই ঝুলছে। ফলের ভারে নুয়ে পড়ছে প্রতিটি গাছ। সুস্বাদু বাহারি রংয়ের কুল বা বরই তিনি গাছে থেকে পেড়েই বিক্রি করছেন। লিটন হোসেন উন্নত জাতের এসব কুল বা বরই চাষ করে এলাকায় সাড়া ফেলেছেন। তার এই বাগানে লেখাপড়ার পাশাপাশি পার্টটাইম কাজ করে লেখাপড়ার খরচ চালান ৪-৫ জন ছাত্র। এছাড়াও আরও চার-পাঁচ জন মানুষের কর্মসংস্থানও হয়েছে।
কৃষক লিটন হোসেন বলেন, দুই বছর আগে রাজমিস্ত্রির কাজ করতাম। রাজমিস্ত্রির কাজ করায় অবস্থায় কৃষি কাজ করার প্রবল ইচ্ছা হয়। ভাবলাম কৃষি কাজের মধ্যে কি করা যায়। পরে চিন্তা করলাম বরই বাগান করি। তখন অন্যের ২ বিঘা জমি লিজ নিয়ে বরই চাষ শুরু করি। প্রথম বছরে সব খরচ বাদ দিয়ে ভালো লাভবান হই। এরপর আস্তে আস্তে বরই বাগান বৃদ্ধি করি। তিনি আরও বলেন, সবমিলে এছর ৭ বিঘা জমিতে বল সুন্দরী, কাশ্মীরি, ভারত সুন্দরী, আপেল কুল, নারিকেল এবং টক-মিষ্টি বরই চাষ করেছি। এতে আমার প্রায় ৬ থেকে সাড়ে ৬ লাখ টাকার মত খরচ হয়েছে। বর্তমান বাজারে ১৪শ টাকা মন বরই বিক্রি হচ্ছে। ইতিমধ্যে ৩ লাখ টাকার বরই বিক্রি করেছি। বাজারে এরকম দাম থাকলে আশা করছি ১০ লাখ টাকা বরই বিক্রি হবে। ভালো লাভবান হবো। অন্যান্য ফসলের চেয়ে বরই চাষে খরচ ও রোগবালাই কম। লিটন হোসেন বলেন, এই বাগান করে নিজের পাশাপাশি কিছু মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। এজন্য খুবই ভালো লাগে।
 জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সুত্রে জানা গেছে, জেলায় এবছর ৪৫৩ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের কুল বা বরই চাষ হয়েছে।