ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক , আপলোডের সময় : রবিবার, ১২ মার্চ, ২০২৩ , আজকের সময় : মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

গোদাগাড়ীতে ব্যাঙের ছাতার মত  গড়ে উঠেছে লাইলেন্স বিহীন এনজিও

রাজশাহী (গোদাগাড়ি) প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সুদ করাবারি ও লাইসেন্স বিহীন এনজিও। উপজেলার প্রায় প্রতিটি মোড় ও বাজারে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে নাম সর্বস্ব এমন প্রতিষ্ঠান। যাদের দৌরাত্বে সর্বসান্ত হচ্ছে এলাকার গরীব অসহায় মানুষ। তাদের লাগেনা কোন ইনকাম ট্যাক্স, দিতে হয়না সরকারকে কোন ভ্যাট। তাদের টাকার উৎসের হিসাবও দিতে হচ্ছেনা কাউকে। এক কথায় বলা যেতে পারে এসকল এনজিও’র সাথে কোন ধরনের যোগাযোগ নেই দেশের সরকারি বেসরকারি ব্যাংক গুলোর। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে কেউ কেউ উপজেলা সমবায় সমিতির নিবন্ধন, আবার কেউ জয়েন স্টোক কোম্পানি থেকে নামের লাইসেন্স নিয়ে খুলে বসেছেন এধরনের সুদের দোকান, আর মাঠ পর্যায়ে ছাড়া হয়েছে কোটি কোটি টাকা।  সমবায় দপ্তর বলছে, তাদের নিবন্ধন নিয়ে ক্ষুদ্র সঞ্চয় সমিতি করতে পারবে। যেন এই সমিতির মাধ্যমে তারা তাদের নিজেদের ভাগ্য উন্নয়ন করতে পারে। আর ক্ষুদ্র ঋন ও সঞ্চয় কার্যক্রম শুধুমাত্র সদস্যদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। সদস্যদের বাইরে ঋন দেওয়ার বা পরিচালনা করার কোন নিয়ম নেই। কিন্তু সেই নিয়মকে তোয়াক্কা না করে নিজেদের ইচ্ছে মত সুদ ব্যবসা পরিচালনা করছেন এসকল এনজিও। আবার কেউ জয়েন স্টোক কোম্পানি থেকে নামের  নিবন্ধন বা লাইসেন্স নিয়েও প্রতারণা করছেন এনজিও’র নামে। এমন এনজিও’র সংখ্যাও চোখে পড়ার মত।  আর কাগজবিহীন এনজিও তো উপজেলার প্রায় প্রতিটি বাজারে। আবার এসকল এনজিও’র টাকার যোগান দিচ্ছে এলাকার চিহ্নিত কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ীরা। এতে আগুলফুলে কলা গাছ মাদক ব্যবসায়ী ও অসাধু এনজিও পরিচালকরা। এমন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে “গ্রীণ ভিউ ডেভেলপমেন্ট লিঃ” একটি। এই এনজিওটি গোদাগাড়ি উপজেলার রেলগেট বাজারে (উজানপাড়া) অবস্থিত। যার রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার দিয়ে রেখেছেন “সি-১৭৫৮৯৩”। পরিচালক হিসেবে রয়েছেন আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে খোকন। তিনি বিডিআর বিদ্রোহে চাকরি হারিয়ে অবশেষে এই ব্যবসায় নেমেছেন। তবে তার লাইসেন্সের ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই লাইসেন্সটি জয়েন স্টোক কোম্পানি ঢাকা থেকে করা হয়েছে। কিন্তু তার লাইসেন্সে কোন এনজিও বা সমিতি পরিচালনা করার অনুমতি নাই। এ ব্যাপারে এনজিও’র পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুনের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমি সবে মাত্র শুরু করেছি। এখন পর্যন্ত আমাদের সদস্য সংখ্যা প্রায় তিন শত। তবে আমাদের এখানে কোন মাদক ব্যবসায়ীর টাকা নেই। আমরা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋন দিচ্ছি। এনজিও’র কাগজপত্র রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি জয়েন স্টোক থেকে লাইসেন্স করেছি।  আর কিছু কাগজ নাই। এমনকি ট্রেড লাইসেন্সও নেই এই এনজিও’র। এরকম আরেকটি “মিতালী কনজুমার কো-অপারেটিভ সোসাইটি”।  এটির অবস্থান উপজেলার বসন্তপুর মোড়ে। এর পরিচালক মোঃ মুক্তার আলী। তিনি উপজেলা সমবায় সমিতির নিবন্ধন নিয়ে এই ব্যবসায় নেমেছেন। তিনিও প্রায় তিন শত সদস্যদের মাঝে ঋন দিয়েছেন। তারও আর কোন কাগজপত্র নাই। তবে এই মুক্তার আলী মাত্র কয়েকদিন আগে প্রতিবন্ধী ও ভিজিডি’র কার্ড করে দেওয়ার নামে টাকা নিয়ে প্রতারণা করেছেন এবং জেল হাজত খেটেছেন। যার মামলা ৫৪/২৩। এই মুক্তার আলীর বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ  রয়েছে। তিনি চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের মারুফা (৪০) নামের এক মহিলার থেকে নন জুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্পে মিথ্যা সাক্ষর করিয়ে ৮০ হাজার টাকার ঋনের বোঝা চাপিয়েছেন। এছাড়াও তার সমিতিতে মাদক ব্যাবসায়ীদের টাকা রাখারও অভিযোগ রয়েছে। শুধু তাই নয়, এধরনের প্রতিষ্ঠানের চওড়া সুদে ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে গ্রামীন সমাজ। তাই সচেতন মহলের দাবী এখনই সময় এধরনের প্রতিষ্ঠানের লাগাম টেনে ধরতে হবে।
 এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তাই তার বক্তব্য ও মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।