মাইক্রোর আগুনে পুড়ে নিহত ৮ রাতেই লাশ দাফন
বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি ঃ ভাঙ্গার মালিগ্রামে এক্সপেসওয়েতে মাইক্রো উল্টে আগুনে পুড়ে নিহতদের পরিবারে থামছেনা শোকের মাতম। এলাকায় আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। উপজেলার ফেলাননগর আর মাইটকুমরার দুই বাড়ি বিরান ভূমির মতো হয়ে গেছে। শোকে সবাই পাথর হয়ে গেছে। কেউ কথা বলছেনা কারো সাথে। শনিবার (২৪ জুন) রাতে লাশ এসে পৌঁছলে রাতেই দাফন হয়ে যায়। লাশ এসে পৌঁছলে ফেলাননগর আজিজার শেখের বাড়িতে শুরু হয় শোকের মাতম। মাইটকুমরা খাঁ বাড়িতে একই দৃশ্যের হয়। অপরদিকে উপজেলা পরিষদ থেকে নিহত পরিবারকে ত্রিশ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে। নিহত তাসলিমার স্বামী আজিজার শেখের ভাতিজা ইমরান শেখ বলেন, শনিবার রাত ৯টায় আমার কাকির লাশের নামাজে জানাযা শেষে রেনিনগর আলহাজ্ব মজিবর রহমান আমিন মাদ্রাসা কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়। নিহত বিউটি বেগম (২৬) ও তার ছেলে মেহেদীর (১০) লাশ আলফাডাঙ্গার কুচিয়াগ্রামে বিউটির স্বামীর বাড়িতে পাঠানো হয়। নিহত কমলা বেগম (৩০) ও তার ছেলে আরিফ (১২), হাসিব (১০) ও মেয়ে আফসার (০১) লাশ বোয়ালমারী উপজেলার শেখর শেখর ইউনিয়নের মাইটকুমরা গ্রামে কমলার স্বামী আলমগীর খানের বাড়িতে পাঠানো হয়। সেখানে লাশ রাতেই দাফন করা হয়। কমলা বেগম ও তার সন্তানদের লাশ পৌঁছলে মাইটকুমরা ও ভুলবাড়িয়া গ্রামে এক শোকাবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়। স্বামী আলমগীর ঢাকায় ব্যবসা করেন। খবর পেয়েই তিনি বাড়িতে ছুটে আসেন। স্ত্রী, সন্তানসহ পরিবারের সকলকে হারিয়ে নির্বাক হয়ে গেছেন আলমগীর। আলমগীরের চাচতো ভাই সিদ্দিক খান বলেন, তাদের পরিবারের কেউ কথা বলার অবস্থায় নেই। এতো বড়ো শোক কাটিয়ে উঠা কঠিন। কেউ ভাবতে পারেনি, এভাবে একটা পরিবার শেষ হয়ে যাবে। তিনি আরও জানান, রাত ১০টায় নামাজে জানাযা শেষে বাড়ির পাশে পারিবারিক কবরস্থানে তাদের লাশ দাফন করা হয়। উপজেলা চেয়ারম্যান এম এম মোশাররফ হোসেন, বোয়ালমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আব্দুল ওহাব প্রমুখ ফেলাননগর ও মাইটকুমরা জানাযায় অংশগ্রহণ করেন। ঘটনারদিন সকালে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারেফ হোসাইন এবং থানা অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আব্দুল ওহাব নিহতদের বাড়িতে গিয়ে সকলের খোজ খবর নেন। উপজেলা চেয়ারম্যান এম এম মোশাররফ হোসেন বলেন, সকালেই আমরা মাইক্রো দুর্ঘটনার কথা শুনে শোকাহত হই কিন্তু বিকেলে যখন জানতে পারি যে নিহতরা বোয়ালমারীর লোক তখন বোয়ালমারী, আলফাডাঙ্গায় শোকের ছায়া নেমে আসে। উপজেলা পরিষদেরও পক্ষ থেকে নিহত তাসলিমার পরিবারকে দশ হাজার এবং কমলা বেগমের পরিবারকে বিশ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। দোয়া করি দ্রুতই যেন শোক কাটিয়ে উঠতে পারে। নিহতদের রূহের মাগফেরাত কামনা করি।
Print [1]