অ্যাম্বুলেন্স দুর্ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিহত পরিবারের পাশে আব্দুর রহমান
তৈয়বুর রহমান কিশোর, বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি: ফরিদপুরের ভাঙ্গায় অ্যাম্বুলেন্সের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিহত শোকাহত দুটি পরিবারকে সান্ত্বনা ও সমবেদনা জানাতে সোমবার (২৬ জুন) সকালে নিহতের বাড়িতে যান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সাংসদ বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুর রহমান।
উপজেলার শেখর ইউনিয়নের মাইটকুমড়া গ্রামের আলমগীর খান এবং গুনবহা ইউনিয়নের ফেলাননগর উত্তরপাড়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী মো. আজিজার শেখের বাড়িতে গিয়ে তাদের পরিবারের নিহত সদস্যদের জান্নাত কামনা করে শোকাহত পরিবারকে সান্ত্বনা দেন।
এ সময় তিনি বলেন, এই শোক বর্ণনা করার মতো নয়। এই শোক সইবার মতো না। সত্যি কথা বলতে কি, কোন মহাশত্রুকেও যেন আল্লাহ এই ধরনের পরীক্ষায় না ফেলে। এটাই আজকে দোয়া করি।
আবেগতাড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, কী সান্ত্বনা দেব। একটা পরিবার থেকে তার স্ত্রী, সোনার মতো দুটো ছেলে ও একটি মেয়ে, শালি ও তার ছেলে, শাশুড়ী চলে গেছে। এই পাষাণে বুক বাধা ছাড়া আরতো কিছু বলার নেই। আল্লাহ পাক তার ধৈর্য্য ধারণ করার ক্ষমতা দিক। যারা এই দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন তাদের সবাইকে আল্লাহ জান্নাতবাসী করুক, আমরা এই দোয়া করব।
তিনি আরো বলেন, আমাদের দলের নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা নিজেই এই ঘটনায় অত্যন্ত মর্মাহত। তিনি এই পরিবারের খোঁজ খবর নেয়ার জন্য আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। এই ধরনের দুর্ঘটনা সত্যিই অভাবনীয়। আল্লাহ তাকে ধৈর্য্য ধারণ করার ক্ষমতা দিক, এটাই শুধু বলবো আজকে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সহ প্রচার সম্পাদক এনামুল হক, উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সিদ্দিক খান, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামরুল সিকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মনজুর তুষার, জেলা যুবলীগের সদস্য দাউদুজ্জামান দাউদ, জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি আশিকুর রহমান, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ মর্তুজা তমাল, সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত সিদ্দিক প্রমুখ।
উল্লেখ্য, বোয়ালমারী উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ফেলাননগর উত্তরপাড়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী মো. আজিজার শেখের স্ত্রী তাসলিমা বেগম (৫০) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা নিয়ে মেঝ মেয়ে বিউটি বেগমের বাসায় অবস্থান করছিলেন। তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে আসন্ন ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে ঢাকার কদমতলী এলাকা থেকে গ্রামের বাড়ি ফেলাননগরের উদ্দেশ্যে তার দুই মেয়ে, চার নাতি-নাতনীসহ ৭ জন শনিবার (২৪ জুন) সকাল ৯টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকা থেকে রওনা দেন। পথিমধ্যে বেলা ১১টার দিকে ভাঙ্গার মালিগ্রাম ফ্লাইওভারের অ্যাপ্রোচ সড়কে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অ্যাম্বুলেন্সটি ব্রিজের রেলিংয়ের সঙ্গে ধাক্কা লেগে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে গাড়িতে আগুন ধরে যায়। মুহূর্তের মধ্যে দাউদাউ করে গাড়িতে জ্বলা আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় তাদের দেহ। এ দুর্ঘটনায় অ্যাম্বুলেন্সে থাকা চালকসহ ৮জন দগ্ধ হয়ে মারা যান। নিহতরা হলেন- আজিজার শেখের স্ত্রী তাসলিমা বেগম, তার বড় মেয়ে শেখর ইউনিয়নের মাইটকুমড়া গ্রামের আলমগীর খানের স্ত্রী কমলা পারভীন (৩২), কমলা পারভীনের বড় ছেলে আরিফ (১৩), মেঝ ছেলে হাসিব (৮), কন্যা আফসা (২), তাসলিমার মেঝ মেয়ে পাশ্ববর্তী উপজেলা আলফাডাঙ্গার গোপালপুর ইউনিয়নের কুচিয়াগ্রামের সেনা সদস্য মাহামুদুল হাসান রনির স্ত্রী মোসা. বিউটি পারভীন (২৭), বিউটি পারভীনের ছেলে মেহেদী (১০) এবং এম্বুল্যান্স চালক ফরিদপুরের বাসিন্দা মৃদুল মালো (২৫)।