ছোট যমুনা ও আত্রাই নদীর বেড়িবাঁধের ছয় স্থানে ভাঙ্গন বিপদসীমার উপর পানি
মোহাম্মদ আককাস আলী : বুধবার সকালে নওগাঁর রাণীনগরে ছোট যমুনা নদীর নান্দাইবাড়ি ও কৃষ্ণপুর নামক স্থানের বেড়িবাঁধ এবং মঙ্গলবার মান্দা উপজেলার আত্রাই নদীর উভয়তীরের ছয় স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত দেড় হাজার পরিবার। এরইমধ্যে তলিয়ে গেছে কয়েক হাজার বিঘা জমির আউশ ও আমন ধানের ক্ষেত। চরম দুর্ভোগে পড়েছে বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ।
রাণীনগর উপজেলার গোনা ইউনিয়নের নান্দাইবাড়ি, কৃষ্ণপুর, প্রেমতলীসহ কয়েকটি গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে করে শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়া শতাধিক হেক্টর জমির আবাদ পানিতে তলিয়ে গেছে। বিশেষ করে মাঠে থাকা কাঁচা মরিচ, পটল, শীতের সবজির বাগান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে মান্দা উপজেলায় বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নুরুল্লাবাদ ইউনিয়নের সাত গ্রাম। এ ইউনিয়নের নুরুল্লাবাদ ও পারনুরুল্লাবাদ এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ৪শো পরিবার এবং ফকিন্নি নদীর তীরবর্তী এলাকায় আরও অন্তত ৬শো পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া প্রসাদপুর ইউনিয়নের বাইবুল্যা ও বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের কয়লাবাড়ী এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৫শো পরিবার।
এছাড়া দীর্ঘদিন যাবত নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ মূল বাঁধ সংস্কার না করার কারণে বেশকিছু অংশ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ অংশে নতুন করে ভেঙ্গে যাওয়ার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে অন্যান্য স্থানের নদীপাড়ের মানুষ।
নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী প্রবীরকুমার পাল জানান, গত রোববার সকাল থেকে আত্রাই ও ছোট যমুনা নদীতে পানি বাড়তে শুরু করে। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত এ নদীর পানি বেড়ে এখন আত্রাই নদীর শিমুলতলী পয়েন্টে বিপদসীমার ১১৪ সেন্টিমিটার, মহাদেবপুর পয়েন্টে বিপদসীমার ৪ সেমি ও জোতবাজার পয়েন্টে বিপদসীমার ৪১ সেমি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লায়লা আঞ্জুমান বানু বলেন, ইতোমধ্যে বন্যাকবলিত এলাকাগুলো পরিদর্শন করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে বস্তায় বালু ভর্তি করে মেরামতের কাজ চলছে। বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সার্বক্ষণিক তদারকি করা হচ্ছে।
রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান বলেন, বেড়িবাঁধের আর কোথাও যেন নতুন করে ভেঙ্গে না যায় তা দ্রুত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতা নিয়ে ভাঙ্গা অংশে বস্তায় বালি ফেলে বন্ধ করার কার্যক্রম চলছে। আমি আশাবাদি নদীর পানি কমতে শুরু করলে এলাকার আর কোথাও ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই।
Print [1]