ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক , আপলোডের সময় : শনিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২০ , আজকের সময় : শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

নীলফামারীতে হাত বদলে সবজির দাম বাড়ছে দ্বিগুণ

রেজা মাহমুদ, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি: নীলফামারীতে হাত বদলে সবজির দাম দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ পর্যন্ত বাড়ছে। এমনকি বাজারভেদে দামের ভিন্নতাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে বাড়তি কিংবা ন‌্যায‌্য দাম পাচ্ছেন না কৃষক। বিক্রেতারা বলছেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সবজি ক্ষেত। ফলে বাজারে চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় দাম বাড়ছে। কৃষক বলছেন, পাইকারি বাজারে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মধ্যস্বত্বভোগীর কাছে জিম্মি হওয়ার ফলে বাজারে সবজির ন্যায্যমূল্য পাওয়া হচ্ছে না।

তবে ভোক্তাদের কিন্তু ঠিকই চড়া দামে সবজি কিনতে হচ্ছে। বাজারে পেঁপে ও কচু ছাড়া ৬০ টাকা কেজির নিচে কোন সবজি নেই। দীর্ঘ এক থেকে দেড় মাস যাবত কাঁচা মরিচের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ৩০০ টাকায়। আর সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে বাজারে আসা নতুন সিম। নীলফামারীর সৈয়দপুর,জলঢাকা ও ডোমারে সবচেয়ে বেশি সবজি চাষ হয়। চাষীরা তাদের উৎপাদিত সবজি বিভিন্ন পাইকারী বাজারে বিক্রি করছে।

আর পাইকারী ক্রেতারা সবজি ক্রয় করে স্থানীয় খুচরা বাজারগুলোতে বিক্রি করছে। এছাড়া পাইকারী ক্রেতারা প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ ট্রাক সবজি এ এলাকা থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নিয়ে যাচ্ছেন। জলঢাকার ট্রাফিকমোড় আড়তে সবজি বিক্রি করতে আসা মীরগঞ্জ ইউনিয়নের পাঠানপাড়া গ্রামের সবজি চাষি আনিছুর রহমান বলেন, ‘পাইকারি ক্রেতারা স্থানীয় দালালদের সঙ্গে হাট বসার আগেই আলোচনা করে একটা দাম ঠিক করে নেন।

সেই দামেই পাইকারি ব‌্যবসায়ীরা বাজার থেকে সবজি কেনেন। সিন্ডিকেটের কারণে শেষ পর্যন্ত কম দামে আমরা সবজি বিক্রি করতে বাধ‌্য হই। আমরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কষ্ট করে সবজি উৎপাদন করি ঠিকই কিন্তু বাজারে সঠিক দাম পাই না। সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাড়ী ইউনিয়নের শ্বাসকান্দ গ্রামের কৃষক আজিজার রহমান বলেন ‘সার ও কীটনাশকের দাম অনকে বেশি। সবজি চাষে এখন খরচ বেশি। কিন্তু বাজারে গিয়ে ঠিক মতো আমরা দাম পাই না। ভোক্তাদের কিন্তু ঠিকই চড়া দামে সবজি কিনতে হচ্ছে।

সরজমিনে জলঢাকার ট্রাফিক মোড়, সৈয়দপুরের বাইপাসংলগ্ন মিস্ত্রিপাড়ায় পৌর পাইকারি সবজির বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, ১০০ মাঝারি আকারের লাউ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ২৫ থেকে ৩০ টাকা দরে। অথচ বাজারে খুচরা বিক্রি হচ্ছে প্রতি প্রতি পিস ৬০ থেকে ৭০ টাকা দরে। পেঁপে পাইকারি প্রতি কেজি ১০ থেকে ১২ খুচরা ৩০ থেকে ৩৫, করলা প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৪৫, খুচরা ৭০ থেকে ৮০ ,চাল কুমড়া প্রতি পিস ২০ থেকে ২৫ খুচরা ৪০ থেকে ৪৫,বরবটি প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৪৫ খুচরা ৭০ থেকে ৮০ ,কচুর লতি পাইকারি প্রতি কেজি ২৫ থেকে ৩০ খুচরা ৬০ থেকে ৭০, কাঁকরল পাইকারি প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৩৫ খুচরা ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে কিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া, খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, ঝিঙা ৭০ থেকে ৮০, চিচিঙ্গা ৬০ থেকে ৭০ টাকায়, ঢেঁড়স ৮০ থেকে ১০০ টাকায়, টমেটো ১২০ থেকে ১৪০ এবং সিম ১০০থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা বাজারে সবজি কিনতে এসেছেন আমিরুজ্জামান নামে এক সরকারি চাকরিজীবী। সবজির দাম বাড়তি দেখে বিরক্ত প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘প্রতি সপ্তাহে সবজির দাম বাড়ছে। বিক্রেতারা নিজেদের ইচ্ছানুযায়ী শাক-সবজির মূল্য বাড়িয়েছেন।

এতে ক্রেতাদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে। স্থির বেতন দিয়ে বাজারে খরচ মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। একই বাজারের খুচরা সবজি বিক্রেতা হাসিবুল ইসলাম বলেন, আমি ৫ বছর ধরে এই বাজারে সবজি ব্যবসা করে আসছি। কিন্তু অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর সবজির সংকট একটু বেশি।