পরীক্ষা দিতে না পারায় দশম শ্রেনীর ছাত্রের বিষপানে আত্নহত্যা
মোঃবেল্লাল হোসেন
দশমিনা(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি পটুয়াখালী দশমিনা উপজেলার এসএ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কতৃক দশম শ্রেনীর এক শিক্ষার্থীর টাকা বকেয়া থাকায় টেস্টপরীক্ষা দিতে না দেয়ায় এবং সহপাঠিদের সামনে চরথাপ্পর ও নেশাগ্রস্থ বলায় অভিমানে গ্যাসট্যাবলেট খেয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
গত(৯ অক্টোবর) সোমবার সকাল ১১ টায় উপজেলার আরোজবেগী মাধ্যামিক বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক গোপাল চন্দ্র চক্রবর্তীর এক মাত্র ছেলে এস এ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর ছাত্র তন্ময় এ ঘটনা ঘটায়।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, উপজেলার আরোজবেগী এস এ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয় পরীক্ষা ছিলো । তন্ময় সকালে সঠিক সময়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে উপস্থিত হয়। ওই পরীক্ষা কক্ষের কক্ষ পরিদর্শক মোসাঃ মরিয়ম বেগম তন্ময়কে ডেকে বলে তোমার টাকা বকেয়া তুমি পরীক্ষা দিতে পারবেনা তুমি প্রধান শিক্ষকের সাথে দেখা করে অনুমতি নিয়ে আসো বলে বের করে দেয়। তন্ময় প্রধান শিক্ষক মোঃ কাওসার হোসেন স্যারের সাথে দেখা করলে তিনি বলেন টাকা ছাড়া তোমার পরীক্ষা নেয়া হবেনা। তার পর তন্ময় তার মায়ের কাছে গিয়ে বলে এবং টাকা চায়। পূনরায় বিদ্যালয়ে এসে তন্ময় অনেক অনুনয় বিনয় করলেও প্রধান শিক্ষক তন্ময়ের সহপাঠিদের সামনে নেশাখোর বলে এবং চরথাপ্পর দেয়। প্রধান শিক্ষকের কথায় অভিমানে গ্যাসট্যাবলেট খায় তন্ময়। তন্ময় প্রধান শিক্ষকের কক্ষে ভমি করে টেবিলের উপর পরে যায় তখোন তন্ময়কে প্রধান শিক্ষক সহ অন্যন্য শিক্ষকগন দশমিনা হাসপাতালে নিয়ে আসালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ মিঠুন চন্দ্র হাওলাদার প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী জেরারেল হাসপাতালে প্রেরন করেন। পটুয়াখালী চিকিৎসারত অবস্থায় বিকেল ৫ টায় মারা যায়। এই ঘটনায় এলাকায় সাধারন জনসাধারন ও অভিভাকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ মান। মঙ্গল বার সকালে বিদ্যালয়ের মূল ফটকে এলাকার সাধারন জনগন, অভিবাবক, ছাত্র তন্ময়কে আতœহত্যায় উদ্ধুদ্ধ করে হত্যা করার প্রতিবাদে প্রধান শিক্ষককে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধ করে।
সহপাঠি আবদুর রহমান ও কাইয়ুম, রিফাত বলেন, তন্ময় সহ আমাদের ১৭ জনকে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে পাঠান মরিয়ম ম্যাডাম। প্রধান শিক্ষক স্যার রাগারাগি করেছে তন্ময়কে। আমাদের অনুমতি দেয় প্রধান শিক্ষক আমারা পরীক্ষার হলে চলে যাই। পারে শুনি তন্ময় গ্যাসট্যাবলেট খাইছে। তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
তন্ময়ের মা বলেন, আমার ছেলেকে পরীক্ষার হল থেকে মোসাঃ মরিয়ম বেগম বের করে দেয় এবং প্রধান শিক্ষক টাকা না দিলে পরীক্ষা দিতে দেবেনা বলে আমাকে তারপর বাসা থেকে বের হয়ে যায়। সন্ধ্য ৬ টায় শুনি তন্ময় গ্যাসট্যাবলেট খেয়ে মারা গেছে পটুয়াখালী হাসপাতালে। আমার মৃত্যু স্বামী ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছিলো। প্রধান শিক্ষক ও মোসাঃ মরিয়ম স্যায় এমনটি কেমনে পারলো।
সহকারি প্রধান শিক্ষক পরেশচন্দ্র শীল বলেন, তন্ময়কে লাইব্রেরিতে ডেকে নেয়র পর আমি প্রধান শিক্ষককে বলি ওর বাবা এই বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন । আপনি অনুমতি দেন পরীক্ষা দেয়ার জন্য বলে ক্লাশে চলে যাই। পরে শুনি তন্ময় প্রধান শিক্ষকের কক্ষে ভবি করছে গ্যাসট্যাবলেট খাইছে।
প্রধান শিক্ষক কাওসার আলম বলেন, কি হয়েছে জানিনা বিদ্যালয় আসার পর তন্ময় অসুস্থ হয়ে পরে । আমরা ঘটনার বিষয় জানার সাথে সাথে দশমিনা হাসপাতালে নিয়ে আসি কর্তব্যরত চিকিৎসক পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেয়াার পরামর্শ দিলে নিয়ে যাওয়া হয়। পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। টাকা বকেয়া থাকা পরীক্ষা দিতে অনুমতি না দেয়ার এবং লইব্রেরিতে তন্ময়কে চরথাপ্পর ও নেশাখোর বলার কথা অস্বীকা করেন।
পটুয়াখালী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) জসিম উদ্দিন জানান, খবর শুনে তন্ময়ের মরদেহ পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল থেকে থানা আনা হয়েছে। একটি অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে। মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য সোমবার রাতেই মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে মরদেহ দেয়া হবে।