ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক , আপলোডের সময় : বুধবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৩ , আজকের সময় : শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

দৌলতপুরে আমন ক্ষেতে পোকার আক্রমণ, পাচ্ছে না কৃষি অফিসের সেবা

দৌলতপুরে আমন ক্ষেতে পোকার আক্রমণ, পাচ্ছে না কৃষি অফিসের সেবা

 

খন্দকার জালাল উদ্দিনঃ  কুষ্টিয়ায় দৌলতপুরে রোপা আমন ধানের ক্ষেতে ব্যাপকভাবে বেড়েছে মাজরা ও লীফ ফোন্ডার পোকার আক্রমণ। ফলে কয়েকদিন পরপর বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশক প্রয়োগ করেও পোকা দমনে ব্যর্থ হয়ে দিশেহারা চাষিরা।

পোকা দমন বা নিধনে কৃষি অফিসের কোনো সহায়তা পাচ্ছেন না বলে কৃষকরা অভিযোগ করছেন।

গতকাল বুধবার (১১ অক্টোবর) সকালে দৌলতপুরের বিভিন্ন গ্রামের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকরা তাদের রোপা আমন ক্ষেতে কীটনাশক স্প্রে করছেন। কিন্তু কিছুতেই প্রতিকার পাচ্ছেন না কৃষকরা।

উপজেলার আমদহ গ্রামের কৃষক আমীর হামজা বলেন, চার বিঘা জমিতে উচ্চ ফলনশীল ব্রী—ধান ৮৭ ও ৪৯ জাতের ধান রোপণ করেছি।ধানের গাছও ভাল হয়েছে। কিন্তু পোকার আক্রমণে ধান গাছের মূল কাÐ শুকিয়ে যাচ্ছে এবং পাতা খেয়ে ফেলছে। স্থানীয় দোকান থেকে কীটনাশক কিনে ক্ষেতে স্প্রে করেছি কিন্তু কোনো উপকার হয়নি।

পিয়ারপুর, হোগলবাড়ী, মরিচা রিফাইতপুরের কৃষকদের সাথে কথা বললে তারা জানান,
এ বিষয়ে ইউনিয়ন ভিত্তিক উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের দেখা মিলছে না মাঠে। বিভিন্ন কীটনাশক কোম্পানির লোকজন এসে যতটুকু পরামর্শ দিচ্ছেন শুধুমাত্র সেভাবেই ধানের জমিতে পরিচর্যা করছি। পোকার আক্রমণ থেকে রেহাই না পেলে ধানে ফলন কম হবে এবং লোকসান হবে আমন ধান আবাদে।

উপজেলার সোনাইকুন্ডী, টলটলি পাড়া, বালিরদিয়ার ও সিরাজনগরসহ কয়েকটি গ্রামের মাঠে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় সব জমির আমন ধানের গাছে ব্যাপকভাবে মাজরা ও লীফ ফোন্ডার বা পাতা মরা (লেদা) পোকাসহ পাতা খাদক পোকা আক্রমণ করেছে। মাজরা পোকার আক্রমণের কারণে অধিকাংশ ধানগাছের পাতা মরে হলুদ রং ধারণ করেছে। কোনো কোনো জমির ধানগাছ প্রায় পাতাশূন্য হয়ে মরে যাচ্ছে।

আল্লারদর্গা তাজপুর গ্রামের কৃষক হানিফ আলী বলেন, এ বছর আমি প্রায় দেড় বিঘা জমিতে বিনা-৭ জাতের আমন ধান চাষ করেছেন। আমারসহ গ্রামের অধিকাংশ কৃষকের জমিতে মাজরা পোকা ও পাতা খাদক লেদা পোকায় আক্রমণ করেছে। পোকা দমনের জন্য প্রায় সব কৃষক দানাদার, পাউডার ও তরলজাতীয় কীটনাশক ব্যবহার করছেন কিন্তু কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না পোকার আক্রমণ। মাজরার পাশাপাশি ধানগাছে ঘাসফড়িং পোকারও আক্রমণ দেখা যাচ্ছে।

 

কৃষক ওসমান গনি ও সাবু মন্ডল জানান, এর আগে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাঝে মধ্যে আমাদের মাঝে দেখা গেলেও ইদানীং তাদের আর খোঁজ নেই। আমরা কম্পানির কর্মীদের কথা মত বিষ দিলেও হচ্ছে না উপকার।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কৃষক বলেন, কৃষি অফিসের তারা সকালে এসে স্থানীয় সার ও কীটনাশকের দোকানে আড্ডা দেয়। কিন্ত মাঠ পর্যানে কোন কাজ করতে দেখা যায় না। আমরা তাদের সেবা থেকে বঞ্চিত হই ফলে গ্রামের মাঠে আমন ধানে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মাজরা ও লেদা পোকার আক্রমণ হয়েছে। আমরা কি করবো বুঝতে পাছি না। পোকা দমন করা না গেলে ধানের ফলনে বড় ধরনের প্রভাব আমাদের উপর পড়বে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, অতিরিক্ত তাপদাহের কারণে ধানের ক্ষতি
হয়েছে তবে এখন তাপমাত্রা কিছুটা কম যেসব এলাকায় ধান ক্ষেতে মাজরা পোকার, আক্রমণের কথা বলা হচ্ছে, সেই এলাকায় আমাদের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছে। উপসহকারী কৃষি অফিসারের ব্যাপারে আমাকে কোনো কৃষক জানায়নি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নিবো।

কৃষি অফিস সূত্র জানায়, এ মৌসুমে দৌলতপুর উপজেলার লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী প্রায় ৯ হাজার ৮৭৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ হয়েছে। এতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭০ হাজার ৫৯২ মেট্রিক টন।