ভেড়ামারা শহরে রেলওয়ের শতবর্ষী পুকুর ভরাট করে দোকান নির্মাণ-বিস্মিত ভেড়ামারাবাসি!!
হেলাল মজুমদারঃ ভেড়ামারা পুকুর ভরাট করে দোকান নির্মাণ, শাসকের দাপাদাপিতে দখলদারি? ভেড়ামারা শহরে রেলওয়ের শতবর্ষী পুকুর ভরাট করে দোকান নির্মাণ, উন্নয়নের অজুহাতে প্রকাশ্যে দখলদারি! বিস্মিত ভেড়ামারাবাসি!! ভেড়ামারা শহরের মুলকেন্দ্র বাসষ্ট্যান্ডের পিছনে বৃটিশ আমলে খননকৃত বাংলাদেশ রেলওয়ের শতবর্ষী পুকুরটি বাজারের পানি ও জলের চাহিদা, সেইসাথে একটি বড় বাজারের অগ্নি নির্বাপনের মহৌষধ হিসেবে কাজ করে থাকা পুকুরটি ভরাট করে পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্ট করে একটি পক্ষ দোকানপাট নির্মাণে ব্যস্ত রয়েছে। পুকুর ভরাট করার কারণে শহরে ভূ গর্ভস্হ পানির স্তর নেমে যাচ্ছে এবং এলাকায় পুকুর ভরাট হয়ে স্বল্প বৃষ্টিতেই তৈরী হচ্ছে জলাবদ্ধতা নামক জনভোগান্তি। এখানে চরম উদ্বেগের বিষয় এই যে, বাজারে কোথাও আগুণ লাগলে আগুণ প্রশমিত করতে দমকল বাহিনীকে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় ও হবে।দেখা যাবে পর্যাপ্ত পানির অভাবে দমকল বাহিনী থাকাবস্হায় ও অগ্নি নির্বাপন করা সম্ভব হবে না। কোথাও আগুন লাগলে পানির এতদসব কারণে পুকুরটি যাতে করে ভরাট না হয সেজন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর, পরিবেশবাদী সংগঠন,সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের কার্যকর পদক্ষেপ জরুরী। ভেড়ামারা ফাযার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বাজারের কোন দোকানে অগ্নি নির্বাপনের যন্ত্র নাই। অগ্নি নির্বাপনের জন্য বাজারের আশে পাশে পানির ব্যবস্হা না থাকলে অগ্নি নির্বাপন খুবই কষ্টসাধ্য। তাছাড়া বাজারের আশেপাশে হয় পানির সরবরাহের কোন রিজার্ভ ট্যাংকিও নাই। বাজারের পাশে কোন পুকুর থাকলে সুবিধা হয় যে, আগুন নেভানোর জন্য অতি সহজেই পানি পাওয়া যায় আর সেক্ষত্রে আগুণ নেভানো অনেকটা দ্রুত সম্ভব হয়। পুকুর ভরাট করার বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ আবেদন করেও প্রতিকার মিলছে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এ বিষয়ে ভেড়ামারায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আক্তারুজ্জামান মিঠু বলেন, আমাদের সাথে পৌরসভা মেয়র সাহেবের কথা ছিল রাস্তা প্রশস্ত করনের জন্য ৫ ফুট হোক, ১০ ফুট হোক, ১৫ ফুট হোক দোকান ভেঙে পিছনে দোকান সরিয়ে দিয়ে ব্যবসায়ী ভাইদের দোকান নির্মাণ করে দেবে। সেই সুযোগে এখন দেখছি অতিরিক্ত জায়গা লাগবে বলে পুকুর ভরাট করে মার্কেট নির্মাণের পায়তারা করছেন। আমি বলেছি, পুকুর ভরাট করা যাবে না। আর এক টুকরো মাটিও পুকুরের ভেতরে ফেলা যাবে না। কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও ভেড়ামারা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু হেনা মোস্তফা কামাল মুকুল বলেন, এই বাজারে যদি আগুন লাগে তাহলে পানি নেওয়ার জায়গা হচ্ছে এই শতবর্ষী পকুর। বাজারের কোথাও আগুন লাগলে ফায়ার সার্ভিস পানির এ উৎস থেকে পানি নিয়ে আগুন নেভাতে সক্ষম হবে।অথচ আপনারা সেই পুকুরটা ভরাট করে ফেলছেন।যা সরকারের জলাশয় ভরাট আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন ও পরিপন্হি। ভেড়ামারা পৌর অভ্যন্তরে দৃশ্যমান পুকুরগুলো দিনে দিনে এক শ্রেণীর অসাধু ভূমি খেকোদের রোষানলে পড়ে ভরাট হয়ে নির্মিত হয়েছে মার্কেট। পৌরসভার অভ্যন্তরের ক্রমেই রেলওয়ের সরকারি পুকুর ও জলাশয় ভরাট করে বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা নির্মাণের মহোৎসব মেতেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ প্রভাবশালীরা। দোকানদারদের পুনর্বাসনের নামে পুকুর ভরাট করে দোকান নির্মাণের দ্রুত এগিয়ে চলেছে।এ বিষয়ে অনেকেই চিৎকার করে বলিয়া চাহিলেও অদৃশ্য কারণে করিতে পারছেনা চিৎকার। এ বিষয়ে ভেড়ামারার সচেতন মহল দাবি করছেন, জলাশয় ভরাট গর্হিত অপরাধ ও সরকারের আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো। তারা বলেন,শুধু আইন করে জলাশয় রক্ষা করা যাবে না, সকলে মিলে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।তারা দ্যার্থহীন কন্ঠে বলেন, যারা সরকারি আইন অমান্য করে জলাশয় ভরাট করছে, তাদেরকে চিন্হিত করে প্রচলিত আইনের আওতায় এনে ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানান।
Print [1]