বাগমারার নিমাই বিলের পাহারাদার কুদ্দুসের উপর অতর্কিত সন্ত্রাসী হামলা
রাজশাহী ব্যুরো: বাগমারার নিমাই বিলকে কেন্দ্র করে ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় আব্দুল কুদ্দুস (৪৫) নামের এক ব্যক্তি আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সে উপজেলার কোন্দা গ্রামের বাহার আলীর ছেলে। কুদ্দুস নিমাই বিলের পাহারাদার হিসেবে দ্বায়িত্বরত আছেন। সোমবার (২৭ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে কোন্দা মোড়ের উপর এই ঘটনা ঘটে। কোন্দা গ্রামের হাফিজুরের নেতৃত্বে কুদ্দুসের উপর হামলা করে তার ছোট ভাই কায়েম ও ছেলে মুরাদ আলীসহ কয়েকজন। এতে কুদ্দুস চরম আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু শয্যায় রয়েছেন। ঘটনার বিবরণে জানাযায়, কুদ্দুস দুপুরের খাবার খেয়ে কোন্দা মোড়ে আসতেই মুরাদ, তার চাচা কায়েম ও দলবল নিয়ে কুদ্দুসকে এলোপাতাড়ি মারধর করে। এমময় কুদ্দুসকে বাঁচাতে গ্রামের লোকজন ছুটে আসলে হামলাকারিরা পালিয়ে যায়। পরে কুদ্দুসকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে দ্বায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে দ্রুত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। এরপর রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হলে দ্বায়িত্বরত চিকিৎসক কিডনিতে গুরুত্বর আঘাত পেয়েছে বলে জানান। ঘটনাটি নিয়ে হামলার শিকার হওয়া কুদ্দুসের সাথে কথা বললে সে জানান, আমি বিল থেকে বাসায় যায় এবং দুপুরের খাবার খাই। প্রায় সাড়ে তিনটার সময় কোন্দা মোড়ের উপর একটি দোকানের সামনে বসতেই হঠাৎ পেছন থেকে ধর শালাকে মার শালাকে বলে আমার পেছন পাঁজরে সজোরে আঘাত করে। আমি পেছন ফিরতেই দেখি হাফিজুরের ছেলে মুরাদ, মৃত সাত্তারের ছেলে কাইয়ুমসহ ১০-১২ জন আমাকে ঘিরে ফেলেছে। আমি জিজ্ঞেসা করলাম আমাকে মারছিস কেন? কোন কথা না বলে, এলোপাতাড়ি মারপিট শুরু করে। আমি বাকচিৎকার দিলে আশেপাশের লোকজন বাঁচাতে ছুটে আসে। এরপর তারা পালিয়ে যায়। কেন মেরেছে জানতে চাইলে উত্তরে বলেন, আমি নিমাই বিল পাহারা দিচ্ছি এটাই আমার অপরাধ। পরে মারামারির ব্যাপারে সাত্তারের ছেলে হাফিজুরের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বলেন, মারামারি হয়েছে সত্য। তবে আমার ছেলে মুরাদ একটা বাড়ি মেরেছে। কেন মেরেছে জানতে চাইলে উত্তরে বলেন, এর আগে আমার উপর হামলা হয়েছিল, সেই রাগে আমার ছেলে কুদ্দুসকে মেরেছে। তবে আমি চিকিৎসার সকল খরচ দিতে চেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ আমিনুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ঘটনা মৌখিকভাবে শুনেছি। কেউ কোন লিখিত অভিযোগ করেনি। তবুও পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে আমি সেখানে দ্রুত পুলিশ পাঠিয়েছি। অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উল্লেখ্য, ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে দীর্ঘদিন থেকে সাবেক চেয়ারম্যান সরদার জান মোহাম্মদ ও তার সাঙ্গপাঙ্গোরা জবরদখল করে রেখেছিল আউচপাড়া ইউনিয়নের কোন্দা নিমাই বিল। এরপর ২২ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে পরাজয়ের পর চেয়ারম্যান জান মোহাম্মদের থেকে বিলটি উদ্ধার করে মাছ চাষের জন্য আবার নতুন কমিটি গঠন করা হয়। এতে লুটপাট করে খাওয়া সেই চেয়ারম্যান গ্রুপ প্রচন্ড ক্ষিপ্ত হয়ে চলতি বছরের ৫ জুন নিরিহ কৃষকের উপর হামলা করেছিল। ঐ হামলায় উভয় পক্ষের ২০-২৫ জন গুরুত্বর আহত হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে মামলা চলমান রয়েছে।