দশ ডিসেম্বর হানাদারমুক্ত হয় রাণীনগর
মোহাম্মদ আককাস আলী :
স্বাধীনতা সংগ্রামের চূড়ান্ত বিজয়ের দিন ১৬ ডিসেম্বর। এই দিন বাঙালি জাতির গৌরবের দিন। ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর নওগাঁর রাণীনগরবাসীর জন্য এই দিন স্মরণীয় দিন। এদিনেই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে পাকিস্তানি সেনা বাহিনির ৩৬ ঘণ্টাব্যাপি সম্মুখযুদ্ধের পর প্রথম হানাদারমুক্ত হয়। তবে নতুন প্রজন্মের কাছে এই বীরত্বপূর্ণ সম্মুখযুদ্ধ জয়ের বার্তা পৌঁছে দিতে আজো নির্মাণ করা হয়নি কোনো স্মৃতিস্তম্ভ কিংবা বিজয় স্তম্ভ। মহান মুক্তিযুদ্ধে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের পর রাণীনগর আজকের এই দিনে শত্রুমুক্ত হয়। বিজয় উল্লাস আর জয় বাংলা জয়ধ্বনিতে প্রকম্পিত করে তুলেছিল রাণীনগরের আকাশ-বাতাস। ১৯৭১-এর ৯ ডিসেম্বর রাণীনগর শত্রুমুক্ত করতে বীর মুক্তিযোদ্ধারা থানা সদরের পাকসেনা ক্যাম্প চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেন। পরদিন ১০ ডিসেম্বর ভোরে উভয়পক্ষে ৩৬ ঘণ্টার সম্মুখযুদ্ধ হয়। গোলাগুলির এক পর্যায়ে ১৭ জন রাজাকার অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করে। এ সময় পাক বাহিনি রেললাইন ধরে সান্তাহার অভিমুখে পালিয়ে যায়। ওই যুদ্ধে লুৎফর রহমান নামের এক বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ হন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর রহমানের বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে রানিনগর শত্রুমুক্ত হয়।
উপজেলা আওয়ামীলিগ নেতা রাহিদ সরদার বলেন, সম্মুখযুদ্ধের কথা আমি বাবার মুখে শুনেছি। দুঃখের বিষয়- এতোবড় একটি বিশাল অর্জনকে নিয়ে নতুন প্রজন্মের জন্য কোনো বার্তা নেই। বিজয়ের স্থানে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের জন্য সরকারের দৃষ্টি আর্কষণ করছি। সাবেক কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ইসমাইল হোসেন বলেন, দিনটি জাতির জন্য স্মরণীয় ও গৌরবের দিন। কিন্তু খুবই দুঃখজনক যে, বিজয়ের ৫২ বছর পরেও বিজয়স্তম্ভ নির্মাণ করা হয়নি।
সাংসদ আনোয়ার হোসেন হেলাল বলেন, জনগণের সেবায় দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হলে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করতে সচেষ্টা থাকবো। তবে খুব শিগগিরই উপজেলায় বিজয়স্তম্ভ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা চাইবো। যাতে করে নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারে।
Print [1]