বিজয় ছিনিয়ে জনসাধারণের কাতারে আব্দুর রহমান
তৈয়বুর রহমান কিশোর, বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রেকর্ড সংখ্যক ভোট পেয়ে বিজয় ছিনিয়ে নিয়ে ফরিদপুর-১ (বোয়ালমারী-মধুখালী-আলফাডাঙ্গা) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান। এর আগে আব্দুর রহমান নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। গতকাল রবিবার রাতে ফরিদপুর জেলা প্রশাসক সভাকক্ষে ফলাফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার। রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুর-১ আসনে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বড় কোনো সংঘাত ছাড়াই ৪ লাখ ৭৭ হাজার ৯৮১ জনের মধ্যে মধুখালী, বোয়ালমারী ও আলফাডাঙ্গা উপজেলার ১৯৬টি কেন্দ্রে ২ লাখ ৩৪ হাজার ৩২জন ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এতে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান ১ লাখ ২৩ হাজার ৩৩১ হাজার ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাংবাদিক আরিফুর রহমান দোলন ৮৪ হাজার ৯৮৯ জন ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে আসেন। প্রাপ্ত ভোট অনুযায়ী এ আসনে ৪৯.৬৩ শতাংশ ভোট পড়েছে। এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন আরো ৪ প্রার্থী। তাদের মধ্যে দ্বিতীয়স্থানে আসা স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আরিফুর রহমান দোলন ঈগল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৮৪ হাজার ৯৮৯ ভোট, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর পেয়েছেন ২২ হাজার ৪৬৫ ভোট, জাতীয় পার্টির আক্তারুজ্জামান লাঙল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১ হাজার ৮৮৯ ভোট, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির মো. নুর ইসলাম শিকদার একতারা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১ হাজার ৫৯ ভোট। নেতাকর্মীরা জানান, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার মো. আব্দুর রহমান গতকাল ৭ জানুয়ারি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পরেরদিন আজ সোমবার (৮জানুয়ারী দুপুর থেকে রাত অবধি মধুখালী, বোয়ালমারী ও আলফাডাঙ্গা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ওয়ার্ড থেকে উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এ সময় তৃণমূলের নেতাকর্মীরা তাঁকে কাছে পেয়ে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এর আগে ফরিদপুর-১ (বোয়ালমারী-মধুখালী-আলফাডাঙ্গা) আসনে নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টানা দুইবার সংসদ সদস্য ছিলেন বর্তমান আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান। দুইবার এমপি হয়ে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন চুড়ান্ত হওয়ার আগে আলোচনায় আসেন তিনি। তবে একাদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন তিনি বাদ পড়ে দলীয় প্রতীক নৌকা পেয়ে সংসদে যান সাবেক এলজিআরডি সচিব মনজুর হোসেন। তিনি অরাজনৈতিক জনপ্রতিনিধি হওয়ায় জোরেসোরেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার নাম ওঠে। তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ স্থানে জায়গা করে নেওয়া কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দুইবারের আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান মনোনয়ন পান।আরো জানা যায়, আব্দুর রহমান ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১ লাখ ৫ হাজারের বেশি ভোট পেয়েছিলেন। সেই সময় গতকাল ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৃতীয়স্থানে আসা বিএনএমের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আসেন। ওই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়া আওয়ামী লীগের সাবেক দুইবারের আরেক সংসদ সদস্য (১৯৯৬ ও ২০০১) কাজী সিরাজুল ইসলাম ২৫ হাজার ভোট পেয়ে জামানত হারান। পরবর্তীতে দশম সংসদ নির্বাচনে আব্দুর রহমান দ্বিতীয়বার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।