বোয়ালমারীতে স্কুলের জায়গায় মার্কেট নির্মাণ ও বরাদ্দের নামে টাকা আদায়, এলাকাবাসির তোপের মুখে কাজ বন্ধ
বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি: ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার রুপাপাত বামনচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের জায়গায় স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. শাহজাহান মোল্যা ও স্কুলের এ্যাডহক কমিটির সভাপতি আক্তার মিয়ার বিরুদ্ধে মার্কেট নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। মার্কেটের দোকান ঘর বরাদ্দ দেওয়ার কথা বলে ২০-২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসি। এলাকাবাসি ক্ষিপ্ত হয়ে মার্কেটের কাজ বন্ধ করে দেন।
গত সোমবার বিকেলে সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, বামানচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে বিদ্যালয়ের প্রায় ১৫ শতক জমির উপরে একটি মার্কেট নির্মাণ করা হচ্ছে। ওই মার্কেটে মোট ১৬ টি ১২-১২ স্কিয়ার ফিট দোকান ঘর করা হয়েছে। প্রতিটি দোকান বরাদ্দের জন্য ১ লক্ষ টাকা হতে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়েছেন প্রধান শিক্ষক মো. শাহজাহান মোল্যা ও বিদ্যালয়ের এ্যাডহক কমিটির সভাপতি আক্তার মিয়া। তবে কিছু টাকা রুপাপাত বাজারে অবস্থিত পূবালী ব্যাংক শাখার ৫২৩৭৯০১০০২৯৮০ হিসাব নম্বরে জমা দওয়া হয়।
এদিকে এলাকাবাসি ক্ষিপ্ত হয়ে মার্কেট নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দেন।
রুপাপাত বাজারের ব্যবসায়ী জলিল কাজী বলেন, তিনি একটি রুমের জন্য ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়েছেন প্রধান শিক্ষকের কাছে, তাকে বিদ্যালয়ের প্যাডে জমার স্লিপ দেওয়া হয়েছে।
বাজারের আরেক ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেন বলেন, তিনি ৫০ হাজার টাকা প্রধান শিক্ষকের নিকট দিয়েছেন, পরে আরো ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে তার পর তাকে স্লিপ দিবে।
আরেক ব্যবসায়ী মো. শিহাব মোল্যা বলেন, তিনি বিদ্যালয়ের প্যাডে ব্যাংকে ১ লাখ টাকা জমা দিয়েছেন একটি দোকানের জন্য।
কালিনগর গ্রামের বাসিন্দা কামরুল ফকির বলেন, স্কুলে অনেক শিক্ষার্থী তাদের জন্য এই জায়গায় স্কুলের ভবন নির্মাণ করা হবে। কিন্তু বিদ্যালয়ের সভাপতি আক্তার মিয়া ও প্রধান শিক্ষক শাহজাহান মোল্যা এলাকার কারোর সাথে আলোচনা না করে মার্কেট নির্মাণ করে ২৫- ৩০ লাখ টাকা বানিজ্য করছে। তাই এলাকাবাসি ক্ষিপ্ত হয়ে মার্কেটের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। এ ছাড়া প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত রয়েছে। তিনি হাই কোটে রিট করেছিল বরখাস্তের বিরুদ্ধে। হাই কোর্ট প্রধান শিক্ষকের রিট খারিশ করে দিয়েছে। সে বরখাস্ত অবস্থায় স্কুল চালাচ্ছে।
বিদ্যালযের প্রধান শিক্ষক মো. শাহজাহান মোল্যা বলেন, স্কুলের অনেক জমি আছে ভবন করার জন্য। তাই ওই জায়গায় মার্কেট করা হচ্ছে। মার্কেটের দোকান ঘর বরাদ্দের টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে জমা নেওয়া হচ্ছে। এলাকাবাসি কাজ বন্ধ করে দেওয়ার জন্য কাজ আপাততো বন্ধ রয়েছে।
বিদ্যালয়ের এ্যাডহক কমিটির সভাপতি আক্তার মিয়া বলেন, যে জায়গাটিতে মার্কেট করা হচ্ছে ওই জমি বেদখল ছিল। সকলকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। যাতে আবার কেউ দখল করতে না পারে তাই মার্কেট করা হচ্ছে। তবে মার্কেটের বরাদ্দের টাকা ব্যাংকে জমা দেয়া হচ্ছে। এলাকাবাসির সাথে আলোচনা করে মার্কেট করা হচ্ছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, শুধু স্কুলের কয়েকজনের সাথে আলোচনা করে মার্কেট নির্মান করা হচ্ছে, এলাকাবাসির সাথে আলোচনা করা হয়নি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, স্কুলের জমিতে মার্কেট নির্মাণের খবর পেয়ে মার্কেটের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে মার্কেটের দোকান বরাদ্দ দেওয়ার কথা বলে টাকা নেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। খোজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।