ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক , আপলোডের সময় : বুধবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ , আজকের সময় : রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

পুঠিয়ায় চুরির অপবাদ দেওয়ায় নৈশ্য প্রহরীর আত্মহত্যা 

পুঠিয়ায় চুরির অপবাদ দেওয়ায় নৈশ্য প্রহরীর আত্মহত্যা 

রাজশাহী ব্যুরো: রাজশাহী পুঠিয়ার ঝলমলিয়া বাজারে চুরির অপবাদ দেওয়ায় আলম মন্ডল (৬০) নামে এক নৈশ্য প্রহোরি আত্মহত্যা করেছে।

২০ ফেব্রুয়ারী রাত আনুমানিক ২ টার সময় ঝলমলিয়া বাজারে সামিম হার্ডওয়্যারের দোকানের বারান্দায় গলায় রশি পেঁচিয়ে সে আত্মহত্যা করে। নিহত আলম মন্ডল নাটোর সদর উপজেলার পাইকপাড়া (রায়পাড়া) গ্রামের শামসুল কুলির ছেলে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মৃত আলম মন্ডল বিগত ৪ বছর যাবত পুঠিয়া উপজেলা ঝলমলিয়া বাজারে নৈশ্য প্রহরীর চাকরি করতেন। গত ০১ ফেব্রুয়ারি তারিখে রাত্রীর যে কোনো সময় আবুবক্কর সিদ্দিক এর ট্রাকের একটি রিংসহ টায়ার হারিয়ে যায়। এরপর ঝলমলিয়া বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক সেলিম সরকার সকল নৈশ্য প্রহরীদের অফিসে ডেকে মিথ্যা টায়ার ও রিং চুরির অপবাদ দেয়। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে আশেপাশে আলম মণ্ডল কে দেখতে পেয়ে চুরির বিষয়টি তার ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হয় বলে জানায় স্থানীয়রা। তখন থেকে আলম মন্ডল মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ে। চুরির অপবাদ সহ্য করতে না পেরে গলায় রশি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে সকলের ধারনা। তবে নৈশ্য প্রহরীর বড় বোন লিপি ও তার ছোট মেয়ে ঝর্ণা জানিয়েছেন, তাদের পারিবারিক কোনো কোন্দোল ছিল না। মিথ্যা চোরের অপবাদ দিচ্ছিল সেলিম ও তার ভাই আবু বাক্কার। প্রতিদিনের ন্যায় গতকালও সে কাজে বের হয় কিন্তু রাতে আমরা শুনতে পাই গলায় ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ঝলমলিয়া বাজাবের নৈশ্য প্রহরীর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডলার বলে, নৈশ্য প্রহরীর দ্বায়িত্ব হচ্ছে বাজারের দোকান পাহারা দেওয়া। বাজারের বাইরে কারো কোন জিনিস পাহারা দেওয়া তার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না।

নৈশ্য প্রহরী আলম চুরির সাথে  জড়িত কিনা? এমন প্রশ্ন করলে তিনি জানায়, চুরি হওয়া ট্রায়ার ও রিং যে ভ্যান দিয়ে বহন করা হয়েছে সেই ভ্যানচালককে মৃত আলমের চেনা। পরে ভ্যান চালকসহ আলমকে জিজ্ঞাসা করলে, চুরির সাথে মৃত আলমের জড়িত থাকার কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি।

ট্রাক মালিক আবু বক্কার সিদ্দিকের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানায়, আমার ট্রাকের ট্রায়ার ও রিং হারিয়ে যাওয়ার বিষয়ে কারো কাছে আমি অভিযোগ করিনি বলে ফোন কেটে দেয়। উল্লেখ্য, খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ২০১৪ সালে অশান্ত ভট্টাচার্য নামের এক ট্রাক ড্রাইভারের উপর একইভাবে ট্রাক চুরির অপবাদ দিয়েছিল এই প্রভাবশালী মহল। পরবর্তীতে ঐ ট্রাক ড্রাইভার  অশান্ত ভট্টাচার্য আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছিল। ঐ বিষয়টি প্রভাবশালী মহল টাকার বিনিময়ে ধামাচাপা দিয়েছিল। এমনটায় জানায় মৃত ট্রাক ড্রাইভারের ছেলে লেমন ভট্টাচার্য। এ বিষয়ে পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রামেক হাসপাতালে পাঠিয়েছি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নিব।