ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক , আপলোডের সময় : শুক্রবার, ১ মার্চ, ২০২৪ , আজকের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪

কুষ্টিয়ায় পুলিশের মারপিটে আহত হয়ে সোহেল রানা হাসপাতালে

কুষ্টিয়ায় পুলিশের মারপিটে আহত হয়ে সোহেল রানা হাসপাতালে

দোকান বন্ধ কর…, মানুষ চিনিসনে…দোকান বন্ধ কর, ওসি ডাকছে, ওসির সাথে কথা বলে তারপর আসিস। কুষ্টিয়া শহরের মিলপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আসাদ সাদা পোশাকে কোমরে পিস্তল ঝুলিয়ে এভাবেই বকাবকি আর গালাগালি করেন এক ওষুধের দোকানদারকে। শেষ পর্যন্ত দোকানদার দোকান বন্ধ করতে বাধ্য হন। এ ঘটনার সিসিটিভি ফুটেছে এএসআই আসাদের সঙ্গে কুষ্টিয়া মডেল থানার এসআই শাহীন কেউ সাদা পোশাকে দেখা যায়।

গত মঙ্গলবারের এ ঘটনায় লাহিনী বটতলা এলাকার ওষুধ ব্যবসায়ী মেসার্স আল-আমিন ফার্মেসীর স্বত্বাধিকারী আল-আমিন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগ থেকে জানা যায়, তার বাড়ীর জমি জমা নিয়ে মামলা রয়েছে। সম্প্রতি সেই মামলায় তিনি রায় পেয়েছেন। ওই মামলার বিবাদী কুমারখালী উপজেলার সাঁওতা গ্রামের নূর হোসেনের ছেলে আব্দুর রশিদের পরামর্শে ২৭ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়া মডেল থানার এস আই শাহীন ও মিলপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আসাদ তার লাহিনী বটতলায় অবস্থিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মেসার্স আল-আমিন ফার্মেসীতে এসে অকথ্য ভাষায় গালাগালিজ করেন। তারা জোর করে দোকানের শার্টার বন্ধ করে দেন। অভিযোগ সূত্রে আরো জানা যায়, আল আমিন তার অপরাধ সম্পর্কে জানতে চাইলে ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তা মারতে উদ্যত হয় এবং দোকান না খোলার জন্য নির্দেশ দেন।

অন্যদিকে কুষ্টিয়া শহরের রাজারহাট বিহারী পাড়ার সোহেল রানা নামে এক ব্যক্তিকে একটি অভিযোগের ভিত্তিতে থানায় ধরে নিয়ে বেদম মারপিটের অভিযোগ উঠেছে। পুলিশের মারপিটে আহত সোহেল রানা কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

রাজারহাট বিহারী পাড়ার কবির হোসেনের ছেলে সোহেল রানা জানান, বোনদের সাথে তার পৈত্রিক জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে। এ ঘটনায় সোহেল রানার এক বোন তার বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া মডেল থানায় অভিযোগ করেন। গত মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় কুষ্টিয়া মডেল থানার এসআই লিটন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে বাড়ী থেকে সোহেল রানাকে মডেল থানায় নিয়ে যায়। সেখানে তাকে নির্মম শারিরীক নির্যাতন করে এসআই লিটন। পরে গতকাল বুধবার সকালে তাকে একটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করে মডেল থানা পুলিশ। সোহেল রানার দাবি আদালতে প্রেরণের আগ পর্যন্ত রাতে তাকে দফায় দাফায় নির্যাতন করে এসআই লিটন।

এদিকে সোহেল রানা ওই মামলায় বুধবারই জামিন পেয়েছেন। বর্তমানে কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ১০নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, তার মুখের বামপাশে এবং পশ্চাৎদেশে অসংখ্য মারের দাগ।

সোহেল রানার স্ত্রী তহমিনা জানান, পুলিশ বাসা থেকে নিয়ে নিয়ে যাওয়ার সাথে সাথেই আমার স্বামীকে মারধর করেছে। আমি এর বিচার চাই।

এ ব্যাপারে এ এস আই আসাদ দাবি করেন, ওষুধ ব্যবসায়ী আল আমিনের জায়গা জমি নিয়ে একজনের বিরোধ রয়েছে। নিয়ে আদালতের নির্দেশে ওই জমিতে ১৪৪ ধারা জারি করতে গিয়েছিলেন। হবে গালাগালি ও দোকান বন্ধ করতে বাধ্য করার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি। অভিযোগের ব্যাপারে জানতে এসআই লিটনকে একাধিকবার ফোন করা হলো তিনি রিসিভ করেননি।

কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কান্তি নাথ বলেন, ” দুটো ঘটনাতেই পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। সেখানে আইন বহির্ভূত কোন কাজ পুলিশ সদস্যরা করেছে কিনা সেটি আমার জানা নেই। আপনার কাছ থেকে বিষয়টি জানতে পারলাম। বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হবে। নিয়ম বহির্ভূত কিছু ঘটে থাকলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।