ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক , আপলোডের সময় : বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ, ২০২৪ , আজকের সময় : সোমবার, ১৩ মে, ২০২৪

রাজশাহীতে স্ত্রী’র মামলায় স্বামী কারাগারে

রাজশাহীতে স্ত্রী’র মামলায় স্বামী কারাগারে

রাজশাহী ব্যুরো : রাজশাহীতে স্ত্রী’র দায়েরকৃত যৌতুক মামলায় রায়হান আলম (২৭) নামের এক প্রতারক স্বামীকে জেল হাজতে পেরণ করেছে আদালত। স্ত্রী’র করা মামলায় জামিন চেয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তার জামিন আবেদন নামুঞ্জুর করে জেল হজতে পেরণের নির্দেশ দেন। রায়হান আলম রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার হরিদাগাছী (কেশরহাট পৌরসভা) এলাকার রবিউল ইসলামের ছেলে।

বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সকালে অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এর বিচারক মো. সাইফুল ইসলাম এই আদেশ দেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, রাজশাহীর
মোহনপুর উপজেলার ধুরইল গ্রামের আমিনুল ইসলামের মেয়ে লাবনী খাতুন (২৬) ছোট বেলায় তার মা মারা গেলে খুব অল্প বয়সে তার বিয়ে হয়। বাবা ছিল মানষিক রেগী তাই অষ্টম শ্রেনীতে পা রাখতেই একই গ্রামের সাগর নামের এক ছেলের সাথে মাত্র ১৪ বছর বয়সে লাবনীর বিয়ে হয়। স্বামীর কাজের সুবাদে কেশরহাট পৌর এলাকায় হরিদাগাছি গ্রামে ভাড়া যায় লাবনী দম্পত্তি। সেখানে হরিদাগাছী গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে রায়হান লাবনীকে বিয়ের প্রলোভনসহ আকাশ কুসুম স্বপ্ন দেখিয়ে তার সাথে দিনের পর দিন শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। এরপর রায়হানের প্রেমে অন্ধ হয়ে তারই পরামর্শে সাগর’কে তালাক দেয় । পরে মেয়েটিকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে বাড়ির দরজায় রেখে পালিয়ে যায় রায়হান। ঘটনা অন্যদিকে গড়াবে ভেবে (ধর্ষন মামলা) ধামাচাপা দিতে প্রতারণার আশ্রয় নেয় রায়হানের পরিবার। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি কেশরহাট পৌর কাউন্সিলর আসলাম আলীসহ কয়েকজনের যোগসাজশে গভীর রাতে মেয়েটির অভিভাবক ছাড়া ননজুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে তা ২৫ ফেব্রুয়ারী নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে মাত্র সত্তর হাজার টাকা দেনমোহর উল্লেখ করে নাটকীয় বিয়ের মাধ্যমে লাবনীকে রাখা হয় রায়হানের পরিবারে। এরপর থেকে শুরু হয় মেয়েটির উপর শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন। পাঁচ লাখ টাকা যৌতুকের দাবীতে বাড়িতে তালা বন্ধ করে লাবনীকে স্বামী, ননদ ও শ্বাশুড়ি মিলে চালায় নির্মম নির্যাতন।
পাঁচ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে গত ৫ মার্চ রাত ৮ টার দিকে শয়ন ঘরে রায়হান বাঁশের লাঠি দিয়ে লাবনীকে বেধড়ক পেটায়। পরের দিন ৬ মার্চ সকালে রান্নাঘরে গেলে ননদ মনিরা খাতুন (২৪) তার চুলের মুঠি ধরে মাটিতে ফেলে দেয় এবং তার শাশুড়ী রোকসানা বেগম (৪৭) যৌতুকের টাকার জন্য লোহার গরম সিক দিয়ে ডান হাতের তালুতে ছ্যাকা দিয়ে পোড়া জখম করে। তারা যৌতুকের টাকা না দিলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। নিজের জীবন বাঁচাতে ধুরইল গ্রামে তার বাবার বাড়িতে পালিয়ে আসে লাবনী। সেখানে তার ছোট ভাই সোহেল রানা’র সহযোগীতায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ওসিসি-তে ভর্তি হয় এবং চিকিৎসা গ্রহণ করে। চিকিৎসা শেষে ১০ মার্চ মেয়েটি বাদি হয়ে মোহনপুর থানায় ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ১১(গ)/৩০ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় রায়হান, তার বোন ও মা এর নাম উল্লেখ করা হয়।
আদালতে মামলার বাদিনি লাবনী খাতুনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি রাষ্ট্রের কাছে সুষ্ঠ বিচারের আবেদন জানিয়েছি। আমি তার পরামর্শে পূর্বের স্বামীকে তালাক দিয়েছি, এখন সেও আমার সাথে সে প্রতারণা করছে। আমাকে তার বাসায় নিয়ে অমানষিক নির্যাতন করেছে। আমার উপর নির্যাতন করলেও এখন যদি স্বাভাবিক হয় আমি তার সাথে সংসার করতে চাই।