ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক , আপলোডের সময় : সোমবার, ২৫ মার্চ, ২০২৪ , আজকের সময় : শুক্রবার, ১০ মে, ২০২৪

রাজশাহীতে ডাইভারশনে যাওয়া ৩৫ শিশু মুক্তি পেলেন

রাজশাহীতে ডাইভারশনে যাওয়া ৩৫ শিশু মুক্তি পেলেন

 

রাজশাহী ব্যুরো: দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন অপরাধের ৩৫ টি মামলায় ৪১ জন শিশু আদালতে হাজিরা দিয়ে আসছিল। সেই হাজিরার অবসান ঘটিয়ে স্থায়ী মুক্তি পেয়েছে ৩৫ জন শিশু।

সোমবার (২৫ মার্চ) সকাল ১১ টায় রাজশাহী আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ আদালত এই আদেশ দেন। এসময় তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ফুল ও রাষ্ট্রিয় পতাকা। উল্লেখ্য, তাদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরন ও পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সঠিক পথে ফেরানোর জন্য গত ৬-৭ মাস পূর্বে আইনের সাথে সাংঘাতে জড়িত শিশুদের ডাইভারসনে দেন শিশু আদারত-২ এর বিজ্ঞ বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মুহা: হাসানুজ্জামান। পরে ডাইভারসনের মেয়াদ পূর্ণ হলে তাদের স্থায়ী মুক্তি দেওয়া হয়। এসময় মুক্তি পাওয়া সকল শিশুদের গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ ও ভাল কাজের উৎসাহ প্রদান করেন এই বিচারক। এসময় তিনি বলেন, তোমরাই আগামীতে রাষ্ট্রের নেতৃত্ব দিবে, তোমরাই পরিবারের অবিভাবক হবে। তোমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে। কোন অপরাধে জড়ানো যাবে না। আমি তোমাদের সর্বাঙ্গীণ সফলতা ও মঙ্গল কামনা করছি।

এছাড়াও তিনি তাদের বিভিন্ন উপদেশমুলক পরামর্শ দেন। শিশুদের কল্যাণে ১৯৭২ সালে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানে শিশুদের অনুকূলে আইন প্রণয়নের বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়। যেহেতু বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় এক তৃতীয়াংশ শিশু, তাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে প্রথম শিশু আইন প্রণয়ন করেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদে স্বাক্ষর করে এবং তারই ধারাবাহিকতায় সম্পূর্ণ আধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানের শিশু আইন ২০১৩ প্রণীত হয়। কারন তারাই হবে আগামী দিনের সমাজ এবং রাষ্ট্রের অভিভাবক। এই আইনের ৩৭, ৪৮, এবং ৪৯ ধারা অনুযায়ী লঘু অপরাধের দায়ে আইনের সংঘাতে জড়িত শিশুদের সর্বোত্তম কল্যাণে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি বা ডাইভারশনের কথা বলা হয়েছে। এবং এ ব্যাপারে মহামান্য হাইকোর্টের সুস্পষ্ট নির্দেশনাও রয়েছে। বিগত এক বছরে রাজশাহীর শিশু আদালত ২ এর বিজ্ঞ বিচারক প্রায় ৮০ টি মামলায় ৮০ জন শিশুর কল্যাণে পারিবারিক সম্মেলনের মাধ্যমে ডাইভারশন গ্রহণের জন্য প্রবেশন কর্মকর্তা কে আদেশ প্রদান করেন। বিষয়টি নিয়ে প্রবেশন কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামানের সাথে কথা বললে তিনি জানান, বিজ্ঞ আদালতের আদেশে আমরা বিদ্যমান মামলার বাদী ও শিশুর অভিভাবকের উপস্থিতিতে শিশুর চারিত্রিক, মানসিক, আবেগীয় উন্নতির জন্য উপযুক্ত শর্তসমূহ আরোপ করি। ডাইভারশনের মেয়াদ সম্পন্ন এবং আরোপিত শর্তসমূহ যথাযথ ভাবে প্রতিপালন করায় বিজ্ঞ আদালত ৩৫ জন শিশুকে চূড়ান্ত মুক্তি দিয়েছেন।

ঐতিহাসিক ২৫ মার্চ অর্থাৎ ২৬ মার্চের মহান স্বাধীনতা দিবসের আগের দিন আমরা শিশুদের হাতে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা এবং গোলাপ-রজনী গন্ধা তুলে দিয়েছি। এই শিশুরা স্বাধীনতা ও মুক্তি সংগ্রামের রক্তাক্ত ইতিহাস জানবে, দেশপ্রেমিক সুনাগরিক হিসেবে হয়ে গড়ে উঠবে, রাষ্ট্রের সম্পদে পরিণত হবে এবং আগামী দিনে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের রক্ষক হবে এই প্রত্যাশা করি। তবে মামলার রায়ে সন্তুষ্টি নিয়ে রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী নাসরীন আকতার মিতা বলেন, আদালতের এই সিদ্ধান্তে মামলার উভয় পক্ষেরই সন্তুষ্টি রয়েছে।