1. zillu.akash@gmail.com : admi2017 :
  2. editor@dailynewsbangla.com : Daily NewsBangla : Daily NewsBangla
গোদাগাড়ীতে বার বার পুলিশ-জনতার মারামারি কেন? - dailynewsbangla
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৮:৫৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
বগুড়া আদমদীঘিতে জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ উপলক্ষে আলোচনা সভা বগুড়া  আদমদীঘিতে ইউএনও’র মত বিনিময় সভা  সিন্ডিকেটে বরেন্দ্রঞ্চলে ঘন্টায় ঘন্টায় কমছে ধানের দাম দিশেহারা বোরো চাষীরা  দশমিনায় আলোচিত মৌসুমী আক্তার দুলু হত্যা মামলার প্রধান আসামী গ্রেফতারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন বোয়ালমারীতে হেলমেট নাই তো তেল নাই পুলিশের কড়াকড়ি নির্দেশ পাম্পগুলোতে কালের ক্ষয়িষ্ণু ঘাটে আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী বুলবুল হাসান কে ৫ হাজার টাকা জরিমানা আমের রাজধানী নওগাঁয় এবার আড়াই হাজার কোটি টাকা আম বিক্রির সম্ভাবনা  বগুড়ায় আলী হাসান হত্যা মামলার প্রধান আসামি সবুজ গ্রেফতার বগুড়া আদমদীঘিতে মাদকবিরোধী অভিযানে ৩ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার 

গোদাগাড়ীতে বার বার পুলিশ-জনতার মারামারি কেন?

ডেইলী নিউজ বাংলা ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৭ মে, ২০২৪

গোদাগাড়ীতে বার বার পুলিশ-জনতার মারামারি কেন?

রাজশাহী ব্যুরো: একের পর এক পুলিশ জনতার সংঘর্ষ সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে। ঘটনার পর, সংঘর্ষিত প্রতিটি এলাকায় শোনা যাচ্ছে মানুষের আহাজারি। রাত হলেই বাড়ছে সাধারণ মানুষের আতঙ্ক! তাহলে কি ঘটছে গোদাগাড়ীতে? কেন মানুষ আতঙ্কিত? জানবো গোদাগাড়ী মানুষের কথা।
ঘটনা-১. গত ১৮ এপ্রিল উপজেলার বাইপাস মোড় (উজানপাড়া) হঠাৎ পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আতিকুর রহমান ও থানার ঝাড়ুদার এনামুলসহ কয়েকজনকে নিয়ে বিনা অপরাধে সাগর নামের আদর্শ ডিগ্রী কলেজের এক শিক্ষার্থীকে ধরে। তাকে হিরোইন দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়। এতে জনগণ ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশ ও সোর্সদের মারধর করা হয়। এরপর তাদের উপর শুরু হয় বেধড়ক লাঠিচার্জ। পুলিশের লাঠির আঘাত থেকে বাদ যায়নি বৃদ্ধ ও শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকে ৯জনকে তুলে নিয়ে গিয়ে ৪-৫ ঘন্টা আটকিয়ে রাখা হয়েছে। অবশেষে ১ জনকে রেখে বাঁকীদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের সায়েস্তা করতে তিনজনের নাম উল্লেখ করে ৮০ গ্রাম হিরোইনের মামলা দেয় পুলিশ। সেদিন সাংবাদিকদের সামনে অনেক আহাজারি করেছে এলাকার সাধারণ মানুষ।

ঘটনা-২. ঐ ঘটনার রেস না কাটতেই ২৬ এপ্রিল (শুক্রবার) উপজেলার চরাঞ্চলের বারীনগর গ্রামে পুলিশের সাথে গ্রামবাসির মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে মাহাবুর রহমান নামের এক কন্সটেবল গুরুতর জখম হয়। এরপর মিডিয়াকর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে ১২ বছরের এক শিশু এসে বলে ” স্যার আমার বাপে পাগল, আমার মা ছাড়া কেউ নাই” তার এমন আকুতিতে শরীর যেন ভারি আসছে। পরে জিজ্ঞেস করে জানা গেল তার নাম পরিচয়। সে কথিত আসামী রাকিবা’র ছেলে। সে চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের চর কানাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র। নাম ঈশাহাক আলী (১৩)। তার এমন আকুতি শুনে পাশে থেকে আরেক শিশু বলে উঠে, “রাফিকা কেও মাইর‍‍্যা মাথা খাম করে দিয়্যাছ ওরা”! এরপর রাফিকার সাথে কথা বলতে গেলে রাফিকা আতঙ্কিত হয়ে ঘরের কোনে লুকিয়ে পড়ে। পরে অনেক বুঝিয়ে তার সাথে কথা বলা হয়। রাফিকা ৪র্থ শ্রেনীর ছাত্রী। সে নাটকীয় আসামী রফিকের মেয়ে। তাদের এমন হৃদয় বিদারক কন্ঠস্বর যেকোন মানুষের অন্তর কেঁদে উঠবে। সে বলে দ্যাখেন স্যার আমার চুল ছিড়ে ফেলেছে বলে মাথা আগিয়ে দেয় রাফিকা।
পরে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, শুক্রবার বিকালে লুঙ্গি পরিহিত দুইজন লোক চর আষাড়িয়াদহ এলাকার বারীনগর গ্রামে প্রবেশ করে। এরপর মানুষিক রোগী মুনছুর এর বাড়িতে যায় ছদ্মবেশী পুলিশ সদস্য। তার যুবতী স্ত্রী’র সাথে কথা বলতে দেখা গেছে বলে অভিযোগ করে এলাকাবাসি। একটুপর মুনসুর এর স্ত্রী চিৎকার চেচামেচি করলে লোকজন জড়ো হয়। এরপর ঐ পুলিশ সদস্য বলে, আমরা ওয়ারেন্টের আসামী ধরতে এসেছি। কিছুক্ষন পর বারীনগর গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে রফিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে রফিকের ছেলে মেয়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরলে ১০ বছরের মেয়ে রাফিকা ও ১১ বছরের ছেলে নুর ইসলামকে মারধর করে ছদ্মবেশী পুলিশ। এসময় রাফিকার মাথার চুল ছিড়ে ফেলা হয়েছে। জখম হয়েছে রাফিকার মাথা। এমন দৃশ্য দেখে স্থির থাকতে পারেনি এলাকাবাসি। মুহুর্তে ক্ষিপ্ত হয়ে ঐ ছদ্মবেশী পুলিশের হামলা করে বসে। আবার প্রতিবন্ধি মুনছুরের বৌ কেন চিৎকার দিয়েছিল সেটিও প্রকাশ পায়নি। স্থানীয়দের দাবী ঐ সময় কারো কাছে কোন ফেন্সিডিল বা কোন মাদক দেখেনি তারা।
এঘটনায় ব্যাপক ভাবে জখমের শিকার হয় মাহবুবুর রহমান নামের এক পুলিশ সদস্য। পরে এঘটনায় গোদাগাড়ী থানার এসআই আতিকুর রহমান বাদী হয়ে ২৪ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৪০-৪৫ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করা হয়। যার মামলা নং ৫৭/২৫০ গোদাগাড়ী। তবে এখানে শেষ নয়, আক্রমনকারিদের শায়েস্তা করতে তিনজনের নামে দেওয়া হয়েছে ২৮ বোতল ফেনসিডিলের মামলা। যার মামলা নং ৫৬/২৪৯ গোদাগাড়ী।
ঘটনা-৩. এমন ঘটনার রেস কাটতে না কাটতেই গত শনিবার (০৪ মে) রাতে গোগ্রাম স্কুল এন্ড কলেজের এক শিক্ষার্থীকে মাদক দিয়ে চালান দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ২লক্ষ টাকা দাবি করে পুলিশ। এঘটনায় গোদাগাড়ী প্রেমতলী পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের এক এএসআই কে আটক করে জনতা। পরে সার্কেল এসপি, ওসি, আইসি ও ওসি ডিবি’র সহযোগিতায় ঐ পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করা হয় এবং পরিবেশ শান্ত করেন। এঘটনায় গোদাগাড়ী থানার ১০ পুলিশকে প্রত্যাহার পূর্বক লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। আবার মারামারির পর সেই তথ্য ধামাচাপা দিতে নানা নাটকিয়তা করছে গোদাগাড়ী থানা পুলিশ। সাংবাদিক তথ্য জানতে চাইলে মুখে কুলুপ দিয়ে বসছেন।
এসকল ঘটনার বিষয়ে গোদাগাড়ী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল মতিন এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, পুলিশ পুলিশের কাজ করবে। এগুলো বিষয়ে আমার কিছু বলার নাই বলে ফোন কেটে দেন।
তবে গোদাগাড়ীতে একে পর এক পুলিশ জনতার মারামারি নিয়ে জেলা পুলিশ সুপার সাইফুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আসলে গোদাগাড়ীটা মাদক প্রবণ এলাকা। মাদককারবারিরা পুলিশকে বিভ্রান্ত ও বিতর্কিত করতে এমন ঘটনা ঘটাচ্ছে। এর আগে পুলিশ জনতার এমন ঘটনা ঘটেনি। বর্তমান ওসি যোগদানের পর থেকে এসকল ঘটনা ঘটছে! কেন ঘটছে? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আসলে এমনটা না, কোন পুলিশ অফিসার চায়না তার থানা এলাকায় এমন ঘটুক। তবে অপরাধী যেই হোক আইন তাকে ছাড়বে না। এই সকল ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। তদন্তপূর্বক অবশ্যই অপরাদীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এসকল ঘটনার আলোকে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায় অনেক লোমহর্ষক ঘটনা। গোগ্রাম এলাকার এক স্কুল শিক্ষক জানায়, গত এক মাসে এই এলাকা থেকে এক থেকে দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে পুলিশের একটি চক্র। আমার কাছে তথ্য আছে কার কার থেকে মামলার ভয়ে দেখিয়ে টাকা নিয়েছে। এভাবে প্রতিটি এলাকা থেকে মুখ খুলতে শুরু করেছে বর্তমান ওসি আব্দুল মতিনের বিরুদ্ধে।

বি: দ্র: গত কয়েক মাসে কত পরিবারকে নিঃস্ব হতে হয়েছে, নিরাপরাধীকে মামলায় পড়তে হয়েছে তার আদ্যপ্রান্ত নিয়ে আগামী পর্বে হাজির হবো।

নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো সংবাদ