সনাক্ত হলো গোদাগাড়ীতে হিরোইন মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা হাতানো চক্র
রাজশাহী ব্যুরো: গত শনিবার (৪ মে) রাতে গোগ্রাম স্কুল এন্ড কলেজের সোহান নামের এক শিক্ষার্থীকে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে ২ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে পুলিশ। সেই শিক্ষার্থীকে উদ্ধারের দাবি নিয়ে প্রেমতলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এক এএসআই’কে আটকে রাখে স্থানীয় জনতা। পরে সোহান নামের সেই শিক্ষার্থীকে উদ্ধারের পর শান্ত হয় এলাকাবাসি। এঘটনার পরের দিন প্রেমতলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ৪জন ও গোদাগাড়ী থানার ৬ পুলিশকে প্রত্যাহার পূর্বক ক্লোজড করে পুলিশ লাইনে নেওয়া হয়। কিন্তু আড়ালে থেকে যায় ঘটনার মূল কারিগর। ঘটনাটি নিয়ে মিডিয়াকর্মীরা ব্যাপক অনুসন্ধান চালায়। সন্দেহের তালিকায় অনেকজন থাকলেও প্রথমেই সংগ্রহ করা হয় থানার ঝাড়ুদার /সুইপার এনামুলের ছবি। এনামুলের ছবি দেখে সেদিনের ঘটনায় উপস্থিত থাকার কথা নিশ্চিত করে ভুক্তভোগী সোহান। এতে সনাক্ত হয় সেদিনের ঘটনার একজন সদস্যকে। সেই রাতের ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী (সোহান) ৪ জন পুলিশের উপস্থিত থাকার কথা বলে। ঝাড়ুদার এনামুলের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে। সে তানোর উপজেলার নুড়িয়া এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে। ২০১৮ সালে আউট সোর্সিং এর মাধ্যমে সুইপার হিসেবে চাকরি পান পুলিশ বিভাগে। এরপর রাজশাহী পুলিশ লাইনে কাজ শুরু করেন। প্রায় ৪ বছর কাজ করার পর আসে গোদাগাড়ী মডেল থানায়। দেড় বছর হয়েছে গোদাগাড়ী মডেল থানায় যোগদান করা। মাদক অধ্যাষিত এলাকায় যোগদানের পর থেকে শুরু হয় বিভিন্ন পুলিশ অফিসারের সাথে অভিযান পরিচালনা করা। এরপর থেকে গোদাগাড়ীতে হিরোইন দিয়ে ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে হাতানো হয়েছে কোটি কোটি টাকা। এতে অসাধু কিছু পুলিশ কর্মকর্তার কাছে তার জনপ্রিয়তা বাড়ে। এমন অসংখ্য ঘটনার জন্ম দেওয়ায় চরম আতঙ্কে রয়েছে গোদাগাড়ী এলাকার সাধারণ মানুষ। গত ৬ মাসে গোদাগাড়ী এলাকায় অসংখ্য ঘটনার জন্ম দিয়ে পুলিশকে বিতর্কের দিকে ঠেলে দিয়েছেন বর্তমান ওসি আব্দুল মতিন। ঘটছে একের পর এক পুলিশ জনতার মারামারি। যা বিগত দিনে এমন ঘটনা ঘটেনি। বিশেষ করে মাদক মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার মত জঘন্য ঘটনা সবাইকে আতঙ্কে ফেলেছে। ওসি’র এমন কার্যক্রমে বিব্রত পুলিশের অনেক অফিসার। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, সাধারণ মানুষ পুলিশের উপর হামলার ঘটনা আগে ঘটেনি। বর্তমান ওসি যোগদানের পর থেকে এমন ঘটছে। এতে পুলিশের সম্মান ক্ষুন্ন হচ্ছে। সে একের পর এক ন্যক্কারজনক ঘটনার জন্ম দিয়ে পুরো পুলিশ ডিপার্টমেন্টকে বিতর্কিত করছে। দিন দিন মানুষ পুলিশের প্রতি আস্থা হারাচ্ছে। এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ফেব্রুয়ারীর ৩ তারিখে গোদাগাড়ী ডাইংপাড়া মোড় থেকে রুবেল নামের একজনের RTR (TVS) ১৬০ সিসি গাড়ী হারায়। পুরাতন গাড়ী ক্রয়ের কারনে গাড়ীর কাগজিয় মালিক আসারুল ইসলাম গোদাগাড়ী থানায় একটি জিডি করেন। যার জিডি নং-১৪৬। এক দিনের ব্যবধানে গাড়ীটি উদ্ধার করে থানা পুলিশ। কিন্তু মোটা অংকের উৎকোচ গ্রহনের মাধ্যমে মটরসাইকেল চুরিকরা সেই আসামীকে ছেড়ে দিয়ে গাড়িটি মালিককে বুঝিয়ে দেন থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল মতিন। অথচ আইনে বলছে, চুরিকৃত মালামাল যার কাছে পাওয়া যাবে দন্ডবিধির ৪১০ ধারা অনুযায়ী সেই ব্যক্তি অপরাধী বলে গণ্য হবে । এমন আরো অনেক ঘটনা নিয়ে স্পেশাল পর্ব থাকবে আগামীতে। এসকল ন্যক্কারজনক অভিযোগ নিয়ে গোদাগাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল মতিনের সাথে মুঠোফোনে (সরকারি নাম্বার) যোগাযোগ করলে তিনি ফোন কেটি দেন। এমনকি এই প্রতিবেদকের নাম্বার ব্ল্যাকলিষ্ট করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে জেলা পুলিশের সম্মানিত পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
Print [1]