রাজশাহীতে খাদ্যের নিরাপদতা নিয়ে সেনসিটাইজেশন কর্মশালা অনুষ্ঠিত
রাজশাহী ব্যুরো: রাজশাহীতে USAID এর আয়োজন ও বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সহযোগীতায় খাদ্যে ভেজাল ও দুষণ রোধ এবং আইন বিষয়ে সারাদিন ব্যাপি সেনসিটাইজেশন কর্মশালা করা হয়েছে। শনিবার (২৫ মে) সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত নগরীর অভিজাত হোটেল Hotel X এর সম্মেলন কক্ষে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়। কর্মশালাটি কয়েকটি পর্বে সাজানো হয়। প্রোগ্রামের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য ও সেনসিটাইজেশন কর্মশালার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (খাদ্যভোগ ও ভোক্তা অধিকার) আবু নূর মো: শামসুজ্জামান। এরপর বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের রাজশাহী অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) চিন্ময় প্রামানিক এর সঞ্চালনায় আমন্ত্রিতদের পরিচয় করানো হয়। এসময় বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) রাজশাহী মোঃ ইমতিয়াজ হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এ.এইচ.এম সফিকুজ্জামান। উক্ত কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আসন অলঙ্কিত করেছেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জাকারিয়া। এসময় প্রধান অতিথি বক্ত্যবে এ.এইচ.এম সফিকুজ্জামান বলেন, খাদ্যে অনেক ধরনের ক্ষতিকারক জীবানু থাকে যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্বক ক্ষতিকর। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের উন্নত রাষ্ট্রের সাথে এগিয়ে যেতে হলে অবশ্যই সুস্থ্য ও শক্তিশালী মানুষের প্রয়োজন । এর জন্য প্রয়োজন খাদ্যের নিরাপদতা। তাই খাদ্যে ভেজাল ও দুষণ মুক্ত করার লক্ষ্যে দীর্ঘদিন থেকে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ কাজ করছে। আপনারা সবাই খাদ্যের বিষয়ে সতর্ক হন। নিরাপদ খাদ্য নিয়ে সরকার আইন তৈরি করা হয়েছে। যা আমাদের অফিসার আপনাদের সামনে আইনের গুরুত্ব নিয়ে তুলে ধরবেন। আপনারা নিজে সতর্ক হবেন অন্যকে সতর্ক করবেন। এরপর বিভিন্ন পর্যায়ের আমন্ত্রিত অতিথি ও রেস্তোরাঁ থেকে আগতদের সাথে নিরাপদ খাদ্য আইন, ভোক্তার অধিকার, রেষ্টুরেন্টের লাইসেন্স, খাদ্যে প্রতারণা নিয়ে আলোচনা করেন । এসময় আগতদের মধ্য থেকে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন করা হয় এবং তার উত্তর দেন। পরে সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করে বক্তব্য শেষ করেন। এছাড়াও গঠনমুলক বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জাকারিয়া। তিনি ২০১৩ সালের নিরাপদ খাদ্য আইনের উল্লেখযোগ্য ধারা নিয়ে আলোচনা করেন এবং আমন্ত্রিতদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দেন। পরে ব্যবসায়ীদের পক্ষে জোরালো বক্তব্য রাখেন চেম্বার অব কমার্স, রাজশাহীর সভাপতি ও চিলিস চাইনিজ রেস্তোরাঁর সত্বাধিকার মাসুদুর রহমান রিংকু। তিনি বলেন, একি জায়গায় দুই রকম আইন ও তার ব্যবহার করা হচ্ছে। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ নিঃসন্দেহে ভাল কাজ করছে তবে সবাইকে সমান চোখে দেখতে হবে। বাংলা ও চাইনিজ রেস্তোরাকে একি আইনে বিচার করা যাবেনা। পণ্য কি কি ভাবে সংরক্ষণ করা যাবে তার উপায় নিশ্চিত করতে হবে। বক্তব্য শেষে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ এর উল্লেখযোগ্য ধারা সমূহ নিয়ে আলোচনা করেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেন, নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ এর উল্লেখযোগ্য ধারা সমূহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (খাদ্যভোগ ও ভোক্তা অধিকার) আবু নূর মো: শামসুজ্জামান। দ্বিতীয় পর্বে বাংলাদেশ হোটেল ও রেস্তোঁরা আইন-২০১৪ নিয়ে আলোচনা করেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের (নিরাপদ খাদ্য গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ) উপ-পরিচালক বি এম মশিউর রহমান এবং সবশেষ বিএসটিআই আইন- ২০১৮ এর উল্লেখযোগ্য ধারা সমূহ নিয়ে আলোচনা করেন বিএসটিআই এর উপ-পরিচলক (সিএম) মো: রিয়াজুল হক। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে আগত রেস্তরাঁ মালিক, এনজিও ম্যানেজার, গ্রুপ কোম্পানির প্রতিনিধি ও গণমাধ্যমের কর্মীরা।